প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৪ জুলাই ২০২০
মৌলভীবাজারে মাছ বিক্রেতা হত্যায় জড়িত তিন মাদকাসক্ত গ্রেফতার
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সনকাপন গ্রামের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী নুরুল হক (৫৩) হত্যার সাথে জড়িত তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো- সাকিন (২৫), জুবেল মিয়া (২৩) এবং ইকবাল হোসনে (৪৪)। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার শেরপুরের বিভিন্ন এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- গত ২৪ জুন শেরপুর এলাকায় সারাদিন মাছ বিক্রি শেষে রাত হয়ে গেলে মাছ ব্যবসায়ী নূরুল হক রাত ৯টার দিকে তার স্ত্রীকে ফোন করে জানান যে, তিনি বাড়িতে যাবেন না। শেরপুরের পার্শ্বে কুশিয়ারা নদীর ফেরির জেটিতে ছোট একটি কামরার মতো জায়গাতেই রাত কাটিয়ে দেবেন। প্রয়োজন হলে, এরকম আগেও মাঝে মধ্যে তিনি করে থাকতেন।
সেদিন রাতে সাড়ে টার দিকে আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলো আসামী সাকিন, জুবেল, ইকবাল ও টিপু। এই চারজন মাদক সেবনসহ মাদকদ্রব্যের ভাগ বাটোয়ারা করছিলো সেখানে। এরই এক পর্যায়ে নূরুল হক জেটিতে গিয়ে দেখেন ভিতর থেকে প্রবেশ পথ বন্ধ। তখন ডাকাডাকি করতে শুরু করলে ভিতর থেকে আসামী সাকিন তাকে বলে যে, ভিতরে লোকজন আছে, যাওয়া যাবে না। তারপরেও নূরুল হক পীড়াপীড়ি করতে থাকেন।
এরপর আসামী সাকিন কপাট খুলে দিলে ভিতরে প্রবেশ করেন নূরুল হক। কিন্তু সাদাসিধে নূরুল হক ভিতরে ঢুকেই মাদকের কারবারি দেখে ঘাবড়ে যান এবং প্রতিবাদ করে বলেন তোমরা এগুলো কি শুরু করছো। এখানে এগুলো করতে পারবা না। আমি পুলিশকে এখনই সব বলে দিবো। তখন আসামীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পলটুনের পাশে রাখা কাঠের টুকরা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। আঘাতপ্রাপ্ত হলে নূরুল হক জেটির পলটুনে পড়ে যান। তখন আসামীগণ তার দেহ ধরে নদীতে ফেলে দেয়। বর্ষার রাত, নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ভিকটিম নূরুল হকের লাশ ভাসতে ভাসতে চলে যায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের দিকে। ২৫ জুন বিকেলে নূরুল হকের স্বজনরা এসে মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। চারদিকে খোঁজাখুজি চলতে থাকে। পুলিশও সন্ধান করতে থাকে।
২৬ জুন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে খবর আসে একটা লাশ নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল সম্পন্ন করে পোস্ট মর্টেমের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারের কাজে নেমে পড়ে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের দিক নির্দেশনায় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পরিমল চন্দ্র দেব, সহকারি পুলিশ পরিদর্শক গিয়াস এর সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত টিম ব্যাপক অনুসন্ধানে নামে।
ঘটনার ছয়দিন পর ৩০ জুন মডেল থানার পুলিশ আসামী সাকিনকে গ্রেফতার করে এবং তার দেয়া তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে অপর আসামী জুবেল মিয়া ও ইকবাল হোসেনকেও পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীগণের মধ্যে দু্ইজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী টিপু (৩০) পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, হত্যাকারীদের যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি হয়, সেলক্ষ্যে পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করছে। সেই সাথে সামাজিক অবক্ষয় রোধেও জেলা পুলিশ মৌলভীবাজার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনই পুলিশের ব্রত।এ লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে জেলা পুলিশ।
এইচকে/ আই নিউজ
আরও পড়ুন
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’
- করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন মৌলভীবাজারের ৩ চিকিৎসক
সর্বশেষ
জনপ্রিয়