শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
শ্রীমঙ্গলে অনগ্রসর ২৮টি পরিবার পেল গরু, গো-খাদ্য ও গোয়াল ঘর
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনগ্রসর ২৮টি পরিবারকে গরু, গো-খাদ্য ও গরুর ঘর নির্মাণ সামগ্রী দিয়েছে সরকার।
সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বাস্তবায়নে বুধবার (৮ জুলাই) দুপুরে আশিদ্রোন, কালিঘাট ও রাজঘাট ইউনিয়নের ২৮ পরিবারের মধ্যে ২৮ টি শংকর জাতের গরু, ১২৫ কেজি গো খাদ্যসহ গোয়াল ঘর নির্মাণেরর জন্য ১৯০ পিছ ইট, ৪টি আরসিসি পিলার ও চার পিছ ডেউটিন দেয়া হয়েছে।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. শিমুল মজুমদার, ডা সম্পদ সিংহ, মো.নুরুল আমিন প্রমুখ।
এর আগে আরেক দফায় শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য ইউনিয়নের ৪২ জনকে এই সহায়তা দেয়া হয়।
সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে ৩৫২ কোটি টাকার প্রকল্প
সমতল অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ৩৫২ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। দেশের তিন পার্বত্য জেলা—রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান অঞ্চলকে বাদ দিয়ে সমতল অঞ্চলের ২৯ জেলার ২১০টি উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকা অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই প্রকল্পের আওতায় আধুনিক পদ্ধতিতে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক ব্যবস্থাপনা, উন্নতজাতের ঘাস উৎপাদন ও সংরক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে পিছিয়ে পড়া এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও আমিষের চাহিদা পূরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, এ লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ৩৫২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত ‘সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০২৩ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
সমন্বিত পদ্ধতিতে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন ব্যবহারের মাধ্যমে সমতল অঞ্চলের অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের (গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি) এবং উন্নতজাতের ঘাস উৎপাদন, সংরক্ষণের ওপর প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি তাদের আমিষের চাহিদাপূরণ করে জীবন মান উন্নয়নও এই প্রকল্পের মাধ্যমে করা হবে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের অনুমোদনও পেয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের পাবর্ত্য তিন জেলা বাদ দিয়ে দেশের সমতল ভূমিতে ২৯টি জেলার ২১০টি উপজেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫২ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে বরাদ্দবিহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় শুরুতেই সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলোর সুফলভোগী পরিবার নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত খামারি পরিবারের মাঝে প্যাকেজভিত্তিক অনুদান বিতরণ করা হবে। যারা লালন পালনের জন্য প্রাণী, অস্থায়ী ঘর নির্মাণ ও খাদ্য সহায়তা পাবেন। খণ্ডকালীন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগ করা হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় মোট ১ লঅখ ৩৮ হাজার ৬৩৫ জন সুফলভোগী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ঘাসের প্রদর্শনীর জন্য প্লট তৈরি ও ঘাস চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাজার সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় উৎপাদিত পণ্য ও পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য বাজারজাতকরণ করা হবে। সুবিধাভোগীদের জন্য ওষুধ ও টিকা সংগ্রহ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রকল্পটি ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ৪র্থ অধ্যায়ে প্রাণিসম্পদ সাব-সেক্টরের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে প্রাণিজাত খাদ্য ও গোখাদ্যের ব্যবস্থাপনাকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় সমন্বিত পদ্ধতিতে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন ব্যবহারের মাধ্যমে সমতল অঞ্চলের অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমতল অঞ্চলের অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে আধুনিক পদ্ধতিতে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক ব্যবস্থাপনা, উন্নতজাতের ঘাস উৎপাদন ও সংরক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হবে। এর মধ্য দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সরকারের বিভিন প্রকল্প তিন পাবর্ত্য জেলাকে কেন্দ্র করে নেওয়া হলেও বাইরে রয়ে যায় সমতল অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। যারা সংখ্যায় নেহায়েত কম নয়। তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেশের ২৯টি জেলায় বসবাস করছে। এ কারণেই সরকার এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করেছে।’
আইনিউজ/ এইচকে
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’
- করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন মৌলভীবাজারের ৩ চিকিৎসক