Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

সাইফুর রহমান তুহিন

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

ফুটবলের মান বাড়াতে প্রতিভা অন্বেষণের গুরুত্ব

সময়টা ২০০৮ সালের আগস্ট মাস। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক গেমসের ফুটবলের স্বর্ণপদক জয়ের লড়াই চলছে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার মধ্যে। ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার গোলে লিড নেয় শক্তিশালী আর্জেন্টিনা এবং ৯০ মিনিট শেষে তা ধরে রাখে। রেফারির সমাপ্তিসূচক বাঁশি বাজার পরই খেলা সম্প্রচারকারী টিভি চ্যানেলের ধারাভাষ্যকার ইংরেজিতে যা বলেছিলেন তার বাংলা হলো আর্জেন্টিনার ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সিস্টেম অর্থাৎ যুব ফুটবল উন্নয়ন প্রকল্পই সবচেয়ে বেশি কৃতিত্বের দাবিদার। কথাটি এমনি এমনি বলেননি ধারাভাষ্যকার। 

আর্জেন্টিনায় বয়সভিত্তিক ফুটবলের নিবিড় পরিচর্যা সবসময়ই বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়ায়। তবে নব্বইয়ের দশকে এবং এর পরের দশকে তাদের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এতোটাই উঁচুমানের ছিলো যে, ১৯৯৫ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবলে তারা মোট পাঁচবার শিরোপা জিতে নেয়। প্রতিটি আসর থেকেই উঠে আসেন পরবর্তীতে বিশ্ব মাতানো অনেক তারকা যার মধ্যে ছিলেন লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, হুয়ান রিকুয়েলমে, পাবলো জাবালেতার মতো খেলোয়াড়ও। বোকা জুনিয়ার্স, রিভার প্লেটের মতো ক্লাবের রয়েছে বিশ্বমানের ইয়ুথ একাডেমি যা থেকে যুগ যুগ ধরে উঠে আসছে দারুণ সব ফুটবলার আর ক্লাব ও দেশকে গর্বিত করছে প্রতিনিয়ত।

দক্ষিণ আমেরিকা পেরিয়ে একবার ইউরোপের দিকে চোখ বুলানো যাক। অধিকাংশ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার কারণে ইউরোপে ফুটবল একাডেমির কোনো অভাবই নেই। ইউরোপিয়ান ফুটবলের জায়ান্ট ক্লাবগুলোর
প্রায় সবারই আছে যুব একাডেমি। তবে বেশি আলোচনায় আসে যে দুটি নাম সেগুলো হলো নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্স আমস্টার্ডামের ইয়ুথ একাডেমি এবং স্পেনের বার্সেলোনার মালিকানাধীন লা মাসিয়া। আয়াক্সের একাডেমির বয়স ১২৩ বছর পেরিয়ে গেছে এবং এটি ইউরোপের প্রাচীনতম ফুটবল একাডেমিগুলোর একটি। আর লা মাসিয়া ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও গুণগত মানের বিচারে এটি ইউরোপসেরাদের কাতারেই পড়ে। 

আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি থেকে শুরু করে লা মাসিয়া উপহার দিয়েছে জাভি হার্নান্দেজ, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, কার্লোস পুয়োল, জেরার্ড পিকে, সার্জিও বুসকেটসের মতো স্প্যানিশ তারকা। অন্যদিকে আয়াক্সের একাডেমির ছাত্রদের তালিকায় নাম রয়েছে ডাচ কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ, মার্কো ভ্যান বাস্তেন, ফ্রাংক রাইকার্ড, ডেনিস বার্গক্যাম্প ও এডউইন ভ্যান ডার সারের। জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখেরও আছে সর্বাধুনিক ফুটবল একাডেমি। সম্পূর্ণ আবাসিক এসব একাডেমিতে অত্যাধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে খেলেয়াড়দের নিবিড় পরিচর্যা করা হয়। আর খেলোয়াড় তৈরির এসব কারখানা আছে বলেই কখনো প্রতিভার অভাব হয় না ইউরোপে।

এবার আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রসঙ্গে আসা যাক। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্লাব ফুটবলের চর্চা নিয়মিত হলেও বয়সভিত্তিক ফুটবল খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশসহ আরও ১৭টি এশিয়ান দেশকে নিয়ে এএফসি এশিয়ান যুব ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন ছিলো বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য রীতিমতো এক মাইলফলক। অক্টোবরের ৫ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলে টুর্নামেন্টটি। যুব বিশ্বকাপের বাছাই প্রতিযোগিতা হওয়ায় এশিয়ান ফুটবলের প্রায় সব হেভিওয়েট দলই অংশ নেয় টুর্নামেন্টটিতে। স্বাগতিক বাংলাদেশের গ্রুপে ছিলো কুয়েত ও বাহরাইনের মতো শক্তিধর প্রতিপক্ষ। চার ম্যাচের মধ্যে শুধু কুয়েতের সাথেই পেরে ওঠেনি বাংলাদেশি যুবারা। তবে, তৎকালীন উত্তর ইয়েমেনের বিপক্ষে জেতার পাশাপাশি বাহরাইন ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ড্র করাটা ভালো রেজাল্টই ছিলো। এই টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর থেকে বয়সভিত্তিক ফুটবলের দিকে একটু একটু
করে মনোযোগী হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। 

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে আশি ও নব্বইয়ের দশকে বলতে গেলে নিয়মিতই অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ, খেলেছে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়েও। দেশের দুই জায়ান্ট ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব কিংবা আবাহনী ক্রীড়াচক্র (বর্তমানে আবাহনী লিমিটেড) সিনিয়র দলের জন্য দেশি-বিদেশি তারকা খেলোয়াড় কেনা এবং ভালোমানের বিদেশি কোচের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করলেও তরুণ ফুটবলার বের করে আনার ভালো কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগ্রহ তেমন একটা দেখায়নি। যতোদূর মনে পড়ে, আশির দশকের একেবারে শেষভাগে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব একটি প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলো এবং এই কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসা গোটা তিনেক তরুণ প্রতিভাকে মূল দলে সুযোগ দিয়েছিলো। এদের মধ্যে মিডফিল্ডার জাকির হোসেন কিছুদিন মোহামেডানে খেলার পর আবাহনীতে যোগ দেন এবং জাতীয় দলেও বেশ কিছুদিন খেলেন। তবে, মোহামেডান ও আবাহনী এমন কর্মসূচি নিয়মিত হাতে নিলে নিঃসন্দেহে আরও কিছু জাকির হোসেনের দেখা মিলতো। এখন অবশ্য বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী লিমিটেডের মতো দল বয়সভিত্তিক টুনামেন্টের মাধ্যমে প্রতিভা বের করার চেষ্টা করছে যা সব ক্লাবেরই করা উচিত।

আবার ফিরে আসি বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের প্রসঙ্গে। যুব এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে আমাদের অংশগ্রহণ আশির দশকের শেষভাগ থেকেই নিয়মিত থাকলেও মানসম্পন্ন কোচিংয়ের অভাব এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না থাকার
কারণে অনেক প্রতিভাই কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই ঝরে গেছে। ফলে জাতীয় দলের মতোই এশিয়ান লেভেলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে একবারের বেশি খেলা হয়নি যুব দলগুলোরও। অথচ সিনিয়রদের ফুটবলের বেলায় বড় দল ও ছোট দলের মধ্যে শক্তির তারতম্য যতোটা বেশি হয় ততোটা হয় না বয়সভিত্তিক দলের ক্ষেত্রে। 

উদাহরণ হিসেবে ২০১৯ সালে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের কথা বলা যায়। ঐ আসরে শিরোপা জেতে ইউক্রেন, রানার্সআপ হয় দক্ষিণ কোরিয়া এবং তৃতীয় স্থান পায় ইকুয়েডর। অথচ আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের মতো মতো ফুটবল পরাশক্তি সেমিফাইনালেই খেলতে পারেনি, কোয়ালিফাই করতে পারেনি ব্রাজিল ও স্পেনের মতো দেশ। কিন্তু, সিনিয়রদের বেলায় এমনটি বলতে গেলে চিন্তাই করা যায় না। আরেকটু নিচের দিকে গিয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সাম্প্রতিক ফলাফলে একবার চোখ বুলান। দেখবেন সিনিয়র বিশ্বকাপের পরাশক্তিদের দাপট বলতে গেলে নেই-ই। এই বিষয়টি জানা থাকার পরও এশিয়ান লেভেলে আমাদের বয়সভিত্তিক দলগুলোর পরিচর্যা ও পারফরম্যান্স নিতান্তই সাদামাটা যা খুবই দুঃখজনক।

বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন নতুন প্রতিভা উঠে না আসার অনেক কারণই রয়েছে। তবে, এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে আশির দশকের একটি জাতীয় পর্যায়ের ফুটবল টুর্নামেন্টের কথা না বললেই নয়। আশির দশকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত শেরে বাংলা কাপ জাতীয় ফুটবল নামে একটি টুর্নামেন্ট ছিলো খুবই জনপ্রিয়। মূলত: জেলাভিভিত্তিক টুর্নামেন্ট হলেও এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো কয়েকটি সার্ভিসেস দলের পাশাপাশি অংশ নিতো আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে মাঠ মাতাতেন কায়সার হামিদ, রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, সাঈদ হাসান কাননের মতো জাতীয় তারকারা।

ফাইনালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বৈরথ ছিলো নিয়মিত এক দৃশ্য। আর এই দুই জায়ান্ট দলের কুশলী খেলোয়াড়দের সাথে লড়াই করে প্রায়ই লাইমলাইটে আসতেন জেলা পর্যায়ের উঠতি তরুণ খেলোয়াড়রা। কেউ কেউ আবার প্রস্তাব পেয়ে যেতেন মোহামেডান, আবাহনী ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের মতো বড় দল এবং মুক্তিযোদ্ধা, রহমতগঞ্জ, আরামবাগের মতো মাঝারি সারির দল থেকে। শেওে বাংলা কাপে খেলে পরে জাতীয় তারকা হওয়া ফুটবলারের সংখ্যা একেবারে কম নয়। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে দুঃখজনকভাবে বন্ধ হয়ে যায় শেরেবাংলা কাপের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি টুর্নামেন্ট।

তবে, এটির বিকল্প কোনো টুর্নামেন্ট কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়নি। এখনকার বাস্তবতায় সিনিয়রদের শেরেবাংলা কাপের চেয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-১৬ লেভেলে জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হতে পারতো অনেক বেশি কার্যকরী। আশা করি দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে ভাববেন এবং তাড়াতাড়ি এরকম উদ্যোগ নিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভা তুলে আনবেন।

এখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-র সাম্প্রতিক কিছু তৎপরতা নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন। সম্প্রতি বাফুফের পরিচর্যায় তৈরি করা কিছু উঠতি ফুটবলারকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটি ক্লাবের কাছে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে বেশ বড় অংকের টাকা আয় হয়েছে। ব্যাপারটি ইতিবাচক এবং এর মাধ্যমে বাফুফের কোষাগারে বড় অংকের অর্থ জমা করার সুযোগ রয়েছে। তবে উদ্যোগটি আরও ফলপ্রসূ হবে যদি বাফুফে সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি আবাসিক ফুটবল একাডেমি গড়ে তুলে বছরজুড়ে ভালোমানের বিদেশি কোচের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারে। একাডেমিতে কোচের পাশাপাশি ফিটনেস ট্রেনার ও ফিজিও থাকতে হবে এবং খেলোয়াড়দের তিনবেলা পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য একজন নিউট্রিশনিস্ট বা পুষ্টিবিদও রাখতে হবে। একাডেমিটি হতে পারে ঢাকার বাইরে কোনো মনোরম ও নিরিবিলি স্থানে। 

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে প্রতিবেশী ভারতের বিপক্ষে আশি ও নব্বইয়ের দশকে আমরা সমান তালে লড়তাম এবং মাঝে মাঝে জিততামও। কিন্তু, এখন ফিফা র‍্যাংকিংয়ে তাদের অবস্থান ১০০-এর ঘরে আর আমাদের অবস্থান ১৮০-এর ঘরে। এই ব্যবধান কিন্তু একদিনে গড়ে ওঠেনি। ঘরোয়া ফুটবলকে পেশাদারী কাঠামোয় আনার পাশাপাশি ভারতীয়ররা মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, পুনে প্রভৃতি স্থানে আধুনিক ও সুসজ্জিত একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে তুলে আনছে ঝাঁকে ঝাঁকে উঠতি প্রতিভা।

বাফুফের আরেকটি সাম্প্রতিক উদ্যোগও আলোচনার দাবি রাখে। সম্প্রতি ঢাকা নগরীতে ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের জন্য একটি অনাবাসিক ফুটবল একাডেমি চালু করেছে বাফুফে। তবে এটিতে ফুটবল শিখতে হলে মাসে তিন হাজার টাকা বেতন দিতে হবে বলে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির পক্ষে এই একাডেমিতে ভর্তি হওয়া একটু কঠিন। বাফুফের উচিত কোনো দেশীয় কিংবা বহুজাতিক কোম্পানিকে একাডেমিটির পৃষ্ঠপোষক বানানোর চেষ্টা করা এবং মাসিক বেতনের পরিমাণ আরও কিছুটা কমিয়ে আনা যাতে গরিবের সন্তানরাও এখানে ভর্তি হয়ে ফুটবলে হাতেখড়ি নিতে পারে। ফুটবল একাডেমি থেকে সুফল পাওয়ার আরেকটি চমৎকার উদাহরণ দিতে চাই। ফ্রান্স সবসময়ই বিশ্ব ফুটবলে সমীহজাগানো দল ছিলো কিন্তু ১৯৯৮ সালের আগে তারা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি। 

১৯৮৪ সালে ইউরো কাপ জেতাটাই ছিলো তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এই ফ্রান্সে ১৯৮৮ সালে জাতীয় ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৮ ও ২০১৮ বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি লা ব্লুজরা ২০০৬ ও ২০২২ জেতার পাশাপাশি রানার্সআপ হয়েছে ২০১৬ সালে। তাদের জাতীয় ফুটবল একাডেমি ফুটবল বিশ্বকে উপহার দিয়েছে থিয়েরি হেনরি, অলিভার জিরাড, ব্লেইস মাতুইদি, কিলিয়ান এমবাপে প্রমুখ বড় বড় তারকা খেলোয়াড়। টাকা পয়সার দিক দিয়ে ফরাসিদের সাথে এমনকি আর্জেন্টিনার সাথেও তাল মেলানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আর্জেন্টিনা প্রভৃতি দেশের মডেলকে অনুসরণ করে আমরা আমাদের দেশে একাডেমি গড়ে তুলতে পারি নিজেদের সাধ্যের মধ্যেই।

উল্লিখিত প্রতিটি দেশের সাথেই আমাদের বেশ ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকার কারণে তাদের কাছ থেকে কিছু না কিছু সহায়তা আমরা চাইলেই নিতে পারি। গত বিশ্বকাপ ফুটবলে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের ব্যাপক সমর্থন পেয়ে কৃতজ্ঞ আর্জেন্টাইনরা আমাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে চায়। এখন আমাদের প্রয়োজন তাদের সাথে ফুটবলীয় কূটনীতি গড়ে তোলা যা থেকে আসতে পারে দারুণ ফলাফল। বাংলাদেশের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে আর্জেন্টিনার সহযোগিতা হতে পারে খুবই মূল্যবান। 


লেখক: সাইফুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ও ক্রীড়া লেখক

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়