Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ০৯ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৫ ১৪৩২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৫০, ৩০ জুন ২০২০
আপডেট: ০৩:৫৫, ৩০ জুন ২০২০

টিকটক-সহ ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করল ভারত

চীনের অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নষ্ট হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত বহু তথ্য চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে কয়েকদিন ধরে ভারতের নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠে আসছিল। সম্প্রতি ভারতের সীমান্ত এলাকা গালওয়ানে ভারতও চীরনর সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর সেই অভিযোগ আরও জোরালো হয়। 

আর এর ধারাবাহিকতায় টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, বিগো লাইভ, হেলো, শেয়ার-ইটের মতো ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল ভারত সরকার। মোবাইল, ট্যাব-সহ কোনও প্রকার গ্যাজেটেই আর ব্যবহার করা যাবে না ওই সব অ্যাপ।

ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এবং দেশের সার্বিক সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত, এমনটাই বলছে ভারত সরকার।

দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবার জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সব অ্যাপের মাধ্যমে ভারতের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য, দেশের প্রতিরক্ষা, রাজ্যগুলির সুরক্ষার ক্ষেত্রে আসন্ন বিপদের সম্ভাবনাতেই এই ৫৯টি অ্যাপ ব্লক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনা সংঘর্ষের পর বেইজিং সাইবার হানা চালাতে পারে আশঙ্কা করছিল ভারত। চীনা অ্যাপের মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যও হাতিয়ে নেওয়া হতে পারে ভারতের উদ্বেগ।

এই চীনা অ্যাপগুলি ব্লক করার ফলে ‘ভারতের কোটি কোটি ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহারকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত’ হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। আরও বলা হয়েছে, ভারতের সাইবার স্পেসের সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্বের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ।

তবে একটি অংশের মতে, চীনের পণ্য বাতিল না করে শুধু অ্যাপ বাতিল করে আদৌ চীনকে কড়া বার্তা দেওয়া হল, নাকি শুধুই সতর্কবার্তা পাঠানো হল ড্রাগনদের?

অন্য একটি অংশের মতে, অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করে প্রথমে বার্তা দেওয়া হল, বেইজিং সংযত না হলে ভবিষ্যতে যে আরও বড় পদক্ষেপ করা হতে পারে, সেই বার্তাই দিয়ে রাখল নয়াদিল্লি।

তবে এতগুলি অ্যাপ নিষিদ্ধ করায় চীনের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র যে ধাক্কা খাবে, তা মেনে নিচ্ছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদরা। কারণ, নিষিদ্ধ করা ৫৯টি অ্যাপের মধ্যে অনেকগুলিই ভারতে বেশ জনপ্রিয়। তার মধ্যে অন্যতম টিকটক। শুধু ভারতেই এই ভিডিও অ্যাপসের ইউজারের সংখ্যা ৬০ কোটির বেশি। আর সারা বিশ্বের হিসেবে এই বছরের মার্চে শেষ হওয়া প্রথম ত্রৈমাসিকে এই অ্যাপসটির ব্যবহারকারী ১৫০ কোটি ছাড়িয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি ত্রৈমাসিকের শেষে ২০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে ইউজারের সংখ্যা। এ ছাড়া হ্যালো, ইউসি ব্রাউজার, বিগো লাইভ, বিগো ভিডিও, এমআই ভিডিও কল, ক্লিন মাস্টারের মতো অ্যাপসগুলির ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম নয়। ভারতে নিষিদ্ধ হলে এই সব অ্যাপসগুলি ভারতের বিরাট সংখ্যক ইউজার হারাবে। স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব পড়বে অন্যত্রও।

তবে কী ভাবে এই অ্যাপগুলি ব্লক করা হবে, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। ভারতের ক্ষেত্রে গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপস স্টোর থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, নাকি ডাউনলোড করা গেলেও সেগুলি কাজ করবে না, নাকি অন্য কোনও উপায়ে ব্লক করা হবে, সেই প্রযুক্তিগত বিষয়ে দিল্লির তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তা ছাড়া ইতিমধ্যেই যারা এই অ্যাপসগুলি ডাউনলোড করে রেখেছেন ফোন, ট্যাব বা অন্য কোনও গ্যাজেটে— সেগুলির ক্ষেত্রে কী হবে, তাও স্পষ্ট নয়। আবার চীনা ফোনগুলিতে এই নিষিদ্ধ করা অনেক অ্যাপসই ইনবিল্ট থাকে। সেগুলির ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই সব বিষয়ও স্পষ্ট নয়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

জেএ/আই নিউজ

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়