Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৬ ১৪৩২

আই নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ১৯ মে ২০২৩
আপডেট: ১৬:৩৫, ১৯ মে ২০২৩

পাকিস্তানকে চাপ দিতে ব্লিংকেনের দ্বারস্থ মার্কিন আইনপ্রণেতারা

বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। এমনকি রাজনৈতিক পক্ষগুলো অনড় অবস্থানে থাকায় সৃষ্ট উত্তেজনা সহসাই কাটার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সোচ্চার হয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।

গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের কাছে চিঠি লিখেছেন ৬৬ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা। শুক্রবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৬ জনের মতো মার্কিন আইনপ্রণেতা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের জন্য পাকিস্তানকে চাপ দিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে অনুরোধ করেছেন। যদিও পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধে এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষ বেছে নিতে নারাজ বাইডেন প্রশাসন।

দ্য ডন বলছে, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানকে চাপ দিতে ব্লিংকেনের লেখা চিঠিতে ওই ৬৬ আইনপ্রণেতা বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে আমরা আপনার কাছে এই চিঠি লিখছি এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার প্রতি পাকিস্তান সরকারকে চাপ দিতে সকল কূটনৈতিক উপায় ব্যবহার করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।’

এই আইন প্রণেতারা ‘পাকিস্তানে বাকস্বাধীনতা এবং সমাবেশের স্বাধীনতার ওপর যে কোনও লঙ্ঘনের তদন্ত করতে’ ইসলামাবাদকে রাজি করানোর জন্য ব্লিংকেনের প্রতি অনুরোধ করেন। কিন্তু ওয়াশিংটনে সাম্প্রতিক সংবাদ ব্রিফিংগুলোতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর স্পষ্ট করে বলেছে, পাকিস্তানের একটি রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে অন্য দল বা প্রার্থীর বিপরীতে আলাদা করে সমর্থন করবে না যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনারা আমাকে অনেকবার এই কথা বলতে শুনেছেন। তাপরও আমি এই সুযোগে আবার বলতে চাই- পাকিস্তানের ক্ষেত্রে আমরা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দল বা কোনও নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বেছে নেব না।’

গত মঙ্গলবার এই বিষয়টি আবার উত্থাপন করা হলে বেদান্ত প্যাটেল বলেছিলেন: ‘পাকিস্তানের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো- একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ পাকিস্তান হচ্ছে শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্কের চাবিকাঠি।’

এদিকে পাকিস্তানি আমেরিকান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (পিএকেপিএসি) বা পাকপ্যাক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনকে চিঠি লেখার জন্য ৬৬ জন আইনপ্রণেতাকে প্রশংসা করেছে। তারাই মূলত এই উদ্যোগটি নিয়েছিল।

দ্য ডন বলছে, ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান এলিসা স্লটকিন ও কংগ্রেসম্যান ব্রায়ান ফিটজপ্যাট্রিক-সহ অন্য মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এই চিঠিটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার কয়েকদিন পর লেখা হয়। ইমরানের গ্রেপ্তারের ফলে পাকিস্তানের রাস্তায় বিশাল জনতা নেমে আসে এবং বিক্ষোভকারী ও আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক সহিংস সংঘর্ষ হয়।

দুর্নীতির মামলায় গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। তার সেই গ্রেপ্তার পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ফলে পাকিস্তানে যে অস্থিরতা শুরু হয় তা শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল এবং এতে কমপক্ষে ১০ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু ও বহু সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়।

এছাড়া পাকিস্তানের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাওয়ালপিন্ডিতে দেশটির সেনা সদর দপ্তরে (জিএইচকিউ) প্রবেশ করে এবং লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া দেশজুড়ে গ্রেপ্তার করা হয় সাড়ে ৭ হাজার বিক্ষোভকারীকে।

পাকপ্যাক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘উদ্বেগজনক এই ঘটনা পাকিস্তানি আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এবং পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে।’

আইনিউজ/ইউএ

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়