প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১৩ মে ২০১৯
আপডেট: ১০:০১, ১৩ মে ২০১৯
আপডেট: ১০:০১, ১৩ মে ২০১৯
কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল
আইনিউজ ডেস্ক: ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল। প্রতিদিন সকাল থেকেই তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোতে অবস্থান করতে থাকেন। দলে দলে ভাগ হয়ে হাসপাতালের ভেতরে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানা-হেঁচড়া করেন। দেখেন কোন কোন কোম্পানির ঔষধ লেখা হয়েছে তাতে।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢুকে সিস্টারদের কাছে থাকা রোগীদের ফাইলও দেখে থাকেন তারা। সিস্টাররাও একান্ত অনুগতে ন্যায় ফাইলগুলো তাদের হাতে তুলে দেন,যদিও কর্তব্য সেবক সেবিকা ছাড়া এসব দেখা অনুচিত। জরুরি বিভাগের সামনে কোম্পানির কয়েকজন প্রতিনিধি অবস্থান করতে দেখে পরিচয় জানতে চাইলে, তাদের একজন নিজেকে জিসকা কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন। নিজের নাম বলেন বিমল কান্তি পাল। কি কারণে ভেতরে ঢুকেছিলেন জানতে চাইলেই দ্রুত তিনি কোন কথা না বলে দ্রুত সটকে পড়েন।
একই সময় হাসপাতালের নিচতলায় বহির্বিভাগের গেটের সামনে অবস্থান করছিলেন আব্দুল আজিজ নামে একজন। তিনি বলেন, কয়েকটি কোম্পানির হয়ে তিনি কাজ করেন। মূলত কোম্পানিগুলোর জন্য ডাক্তারদের ঔষধ লেখার তথ্য সংগ্রহ করাই তার কাজ।
ঔষধ বিতরণ কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়ে রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলছিলেন এ্যালকো ফার্মার প্রতিনিধি সুজন। তিনি জানান, কারও সমস্যা সৃষ্টি করছেন না। শুধু ছবি তুলছেন!
অফিস সময়ে হাসপাতালে যাওয়ার নিয়ম না থাকলেও সকাল ১০টার আগেই দলে দলে ভাগ হয়ে সেখানে অবস্থান নেন প্রতিনিধিরা। হাসপাতালের ডাক্তারদের বিভিন্ন কক্ষের সামনের রোগীদের ভিড় থাকার সুযোগ নেন তারা। কক্ষ থেকে রোগী বের হওয়া মাত্রই তাদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে একেকজন টানাটানি শুরু করে দেন। ডাক্তার কোন কোম্পানির ঔষধ লিখেছেন তা জানার চেষ্টা করেন। রোগীদের কেউ কেউ বিরক্তবোধ করেন, গ্রামের সহজ সরল মানুষ এদের কাছে বড় অসহায়, যখন রোগীর জন্য তাড়াতারি ঔষধ নিয়ে আসবেন, ঠিক তখন এমন টানা-হেচড়া করে সময় নষ্ট করে রোগী এবং তার সাথে আসা লোকদের হয়রানি করে থাকেন। কেউ আবার সুযোগ বুঝে ঢুকে পড়েন ডাক্তারের কক্ষে। রোগী দেখার সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজের কোম্পানির ঔষধ লেখানোর চেষ্টা করেন।
সকাল থেকে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের চক্ষু কক্ষের সামনে অবস্থান করছিলেন বেশ কয়েকজন কোম্পানির প্রতিনিধি। এ সময় হাসপাতালে রোগীর ভিড় ছিল মারাত্মক। একেকজন রোগী ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হন আর তাদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেন প্রতিনিধিরা। তাদের ছবি ওঠানোর বিষয়টি টের পেয়ে কয়েকজন দ্রুত সটকে পড়েন। অবস্থান নেন হাসপাতালের মূল ভবনের প্রবেশকক্ষের গেটের সামনে।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা শুধু এখানেই নয়, তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে সিস্টারদের কাছ থেকে ফাইল নিয়ে ব্যবস্থাপত্র দেখেন। টানা হেঁচড়াও করেন। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের এমন দৌরাত্ম হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। এ অবস্থায় নার্স, ব্রাদাররা যেন অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। রোগীসহ তাদের স্বজনরাও মারাত্মক বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখে পড়েন। ভূক্তভোগী রহিম মিয়া বলেন সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ভাইকে আসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার দ্রুত ইনজেকশন আনতে বলেন কিন্তু তা আনতে যাওয়ার পথে ৫/৬ জন তার প্রেসক্রিপশন দেখতে থাকেন ভাই ইমার্জেন্সীতে বললেও কর্ণপাত করেনি তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রথীন্দ্র চন্দ্র দেব জানান, অফিস চলাকালীন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালের ভেতরে আসা অবৈধ। এটি তারা করতে পারেন না। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে তাদের ফারিয়াকে(সংগঠন) অবহিত করা হয়েছে। আগেও তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রথমে কয়েকদিন তারা বিরত থাকেন। কিন্তু কয়েকদিন পর আবার হাসপাতালে ছুটে আসেন। তবে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এসএ/ইএন
আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের
সর্বশেষ
জনপ্রিয়