আপডেট: ১১:৩৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২০
ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম ইতিহাসে আরবদের সিন্ধু ও মূলতান বিজয় ছিলো এক চমকপ্রদ ঘটনা। কারণ এই বিজয়ের মধ্য দিয়েই মূলত মুসলিম শাসকরা ভারতে স্থায়ীভাবে মুসলিম শাসনের সূচনা করেন। তাই এই ঘটনাটিকে ঐতিহাসিকগণ আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে দাবি করে আসছেন।
শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কাজ আসা আরবের মুসলিমরা তাদের যাপিত জীবন দিয়ে আকৃষ্ট করেছিলো নির্যাতনের শিকার মুক্তির পথ খোঁজা নিম্নর্ণের হিন্দুদের। ধীরে ধীরে তাদের এই আকৃষ্টতায় গোটা জনপদ চলে আসে মুসলিমদের কব্জায়।মতারপর শুরু হয় সিন্ধু ও মূলতান অভিযান। সিন্ধু ও মূলতানে রাজ্যশক্তির দুর্বলতা, ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা সামরিক দুর্বলতা ও অদূরদর্শিতার জন্য সহজেই রাজ্যগুলোতে ইসলামের পতাকা উত্তোলিত হয়। ভারত উপমহাদেশ শুরু হয় মুসলিম ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়।
শান্তির ধর্ম হিসেবে মুসলমানদের নবী মুহাম্মদ (স.) ইসলাম ধর্ম নিয়ে আসলে আরবরা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকেন থাকেন। নতুন ধর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরবরা একদিকে যেমন রাজ্য বিস্তারে মনযোগী হন অন্যদিকে ছড়িয়ে দিতে থাকেন নতুন ধর্ম ইসলাম।
সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়টুকুর মধ্যেই আরবের নব্য মুসলিমরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকেন। তাদের এই অভিযানের ধারাবাহিকতায়ই অষ্টম শতাব্দীর শুরুতে ভারতবর্ষেও আরবদের রাজ্য বিজয়ের অভিযান শুরু হয়। যদিও এখানে বলে রাখা ভালো অষ্টম শতাব্দীর পূর্বেও ভারতের সাথে আরবদের যোগাযোগ ছিলো। আর সেটা ছিলো মূলত ব্যবসায়িক।
ইসলাম ধর্ম আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই আরব বণিকরা ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় বন্দরগুলিতে আসা যাওয়া করতেন ব্যবসায়িক কাজে। কারণ সেসময় ভারতীয় পণ্যদ্রব্যের চাহিদা আরবদের কাছে ব্যাপক ছিলো। আরবরা ভারত থেকে এসব পণ্যদ্রব্য কিনে ছড়িয়ে দিতো মধ্য এশিয়া, উত্তর আফ্রিকাসহ ইউরোপের কিছু বাজারেও।
কিন্তু অষ্টম শতাব্দীর শুরুতে ভারতে আরবের নব্য মুসলিমদের অভিযান ছিলো দুইটি লক্ষ্যে। একটি হচ্ছে ভারত বিজয় করে রা শাসন করা, আর দ্বিতীয়ত নতুন ধর্ম ছড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে আরবের বণিকরা ভারতের কোনও ধরনের তৎপরতা চালান নি একথা স্বীকার করতে হবে। উপরন্তু সেসময়ের নিম্নবর্নের হিন্দুগণ সেচ্ছায় ইসলামের ছায়াতলে আসতে শুরু করেন।
ব্যবসায়িক কাজে আরব বণিকরা ভারতবর্ষে আসার পর থেকেই তাদের যাপিত জীবন এবং তাদের সাথে যারা সূফী দরবেশ আসতেন তাদের প্রভাবে ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে ইসলাম ধর্ম পরিচিত হয়ে ওঠতে থাকে।
এদিকে একই সময়ে জাতিভেদ প্রথা, নিম্নবর্ণ হওয়ার দরুন নির্মম জাঁতাকলে পিষ্ট এবং আর্থ ও সামাজিক নিপীড়নে অতিষ্ট হিন্দুগণও শান্তির পথ খুঁজছিলেন। তারা ইসলামের সাম্য এবং শান্তির বাণীতে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। যা আরব মুসলিমদের পেশীর শক্তিকে ক্রমশ শক্তিশালী করে তোলতে সাহায্য করছিলো।
স্থানীয় এসব নিম্নবর্ণের হিন্দুগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ফলে ইসলামের বিস্তৃতি বাড়ানোর পথটা আরও সহজ হয়ে ওঠে আরবের মুসলিমদের জন্য। কারণ স্থানীয়দের সাহাজ্যে তারা সহজেই আশপাশের এলাকায়ও ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিতে পারছিলেন। স্থানীয় ভাষা না জানার কারণে যেটা ছিলো আরবের মুসলিমদের জন্য অনেকটা কষ্টকর।
তবে শুধু নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই যে সময় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তা নয়। ইতিহাস ঘাঁটলে পাওয়া যায় ভারতের তৎকালীন কালীকটের হিন্দু রাজা জামোরিনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এবং তার পৃষ্টপোষকতায় সেখানকার মৎসজীবী ধীবর সম্প্রদায়ও ইসলামের আঙিনায় আসেন। পরে এসব নব্য মুসলিমদের মাধ্যমেই ইসলামের বাণী ছড়িয়ে পড়ে মালাবার ও করমণ্ডল উপকূলেও। ঐতিহাসিক আবুল কাশিম ফিরিস্তার উল্লেখ মতে, মালাবারের হিন্দু রাজা চেরামন পেরুমলও সেসময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।
ভারতবর্ষে ইসলামের এমন বিস্তার ঘটার ফলে একদিকে যেমন আরবের মুসলিমরা যারা একসময় শুধুমাত্র ব্যবসা করার জন্য এই উপমহাদেশে এসেছিলো তারা ধীরে ধীরে ভারতবর্ষের কিছু কিছু এলাকা শাসন করাও শুরু করে দেন। এক কথায় আরবদের দুটি লক্ষ্যই সমানতালে এগিয়ে চলছিলো। একদিকে বাড়তে থাকে ইসলামের বিস্তৃতি অন্যদিকে ব্যবসায়িক দিকেও তারা হয়ে ওঠছিলো আরও সফল।
মুহম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু ও মূলতান বিজয়
উমাইয়া গোত্রের খলিফা আল ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিক (৭০৫-৭১৫) ইসলামের খেলাফত গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম সম্রাজ্যে এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়েছিলো বলতে হয়। কারণ সেসময় ওয়ালিদের বিখ্যাত দুই সেনাপতি মূসা বিন নুসায়েরে নেতৃত্বে সমগ্র উত্তর আফ্রিকা এবং তারিক বিন যিয়াদের নেতৃত্বে স্পেন দখল করে নেন। আবার সেনাপতি কুতায়বা বিন মুসলিমের প্রচেষ্টায় মধ্য এশিয়ায়ও ইসলামের পতাকা উত্তোলিত হয়। অন্যদিকে প্রায় একই সময়ে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের উৎসাহে মুহম্মদ বিন কাশিমের নেতৃত্বে আরবরা ভারতের সিন্ধু প্রদেশে অভিযান চালায়।
সপ্তম শতকে সিন্ধুই ছিলো ভারতের অন্যতম শক্তিশালী রাজ্য। রাজ্যটির পূর্বে কাশ্মীর, পশ্চিমে মাকরান, দক্ষিণে সমুদ্রোপকূল এবং উত্তরে কিকানন পর্বতের অবস্থান ছিলো। সিন্ধু রাজ্যের রাজধানী তখন ছিলো আলোরে। আর প্রধান বন্দর ছিলো ‘দেবল’। রাজ্যটি বাহ্মণ্যবাদ, ইস্কান্দা, সিস্তান ও মূলতান এই চার প্রদেশে বিভক্ত ছিলো। আরবের মুসলিমরা যখন এই রাজ্যে অভিযান চালায় তখন এখানকার রাজা ছিলেন রাজা চাচের পূত্র দহির।
মুসলমানদের সিন্ধু ও মুলতান অভিযানের কারণ
মুসলিমদের সিন্ধু ও মূলতান অভিযানের কারণ ছিলো দুটি। একটি প্রত্যক্ষ কারণ অন্যটি পরোক্ষ।
পরোক্ষ কারণ:
প্রথমতঃ ভারতের বাইরে মুসলিম শাসকরা এতোটাই সামরিক সাফল্য পেয়েছিলেন যে তাদের এই মনোভাব তাদেরকে রাজ্যগ্রাসী করে তোলেছিলো। আর দ্বিতীয়তঃ যেহেতু সন্ধু এবং মূলতান ছিলো সময়ের সবথেকে শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর রাজ্য। অন্যদিকে ভারতের অপার ধন-সম্পদের দিকে আরবদের যোগাযোগ ছিলো বহুকাল আগে থেকেই। যা আরবদের অভিযানে আরও উৎসাহ দিয়েছিলো। তৃতীয়তঃ ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে ইসলাম ধর্ম ছড়িয়ে পড়লেও সিন্ধু ও মূলতান রাজ্যটি ক্ষমতাধর ও শক্তিশালী থাকার ফলে ইসলামের প্রতি বৈরি মনোভাব ও সামরিক উস্কানি সীমান্তে ইসলামের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। তাই তাদেরকে দমাতে আরবদের এই অভিযানের প্রয়োজন ছিলো।
প্রত্যক্ষ কারণ:
জানা যায় যে, সিংহলের রাজা আটটি উপঢৌকনসহ জাহাজ খলিফা ওয়ালিদ ও হাজ্জাজের জন্য পাঠান। কিন্তু যাত্রাপথে ঐ জাহাজগুলো সিন্ধুর দেবল বন্দরে পৌঁছালে সেগুলো লুণ্ঠন করে নেয় জলদস্যুরা। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ সিন্ধুর রাজা দহিরের কাছে এর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চাইলে রাজা দহির তা দিতে অসম্মতি জানান। ফলে রাজা দহিরের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে যান হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। ক্ষুব্ধ হয়েই রাজা হাজ্জাজ সিন্ধু প্রদেশে অভিযান করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
মুহম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু ও মূলতান বিজয়:
সিন্ধু রাজ্যের রাজা দহিরের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ সিন্ধু আক্রমণের ছক আঁকতে শুরু করেন। ছক অনুযায়ী তিনি প্রথমে ওবায়দুল্লাহ ও বুদায়েল নামে দুই সেনাপতির নেতৃত্বে সিন্ধু রাজ্যে দুইটি অভিযান চালান। কিন্তু হাজ্জাজ বিন ইউসুফের এই দুইটি অভিযানই ব্যর্থ হয়। এতে তিনি আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে তিনি তার সতেরো বছর বয়সী জামাতা মুহম্মদ বিন কাশিমকে প্রধান সেনাপতি করে ৭১১ খ্রিষ্টাব্দে সিন্ধুতে আবারও অভিযান প্রেরণ করেন।
ঐতিহাসিকরা মুহম্মদ বিন কাশিমের এই অভিযানকে ইতিহাসের অন্যতম রোমাঞ্চকর একটি অভিযান বলে থাকেন। এই অভিযানে মুহম্মদ বিন কাশিম ৬০০০ সিরিয় এবং ইরাকি সৈন্য, ৬০০০ উষ্ট্রবাহিনী, রসদবাহী ৩০০০ উঠ নিয়ে সিন্ধু রাজ্যের দিকে এগিয়ে যান। মাঝপথে তার হাতকে আরও শক্তিশালী করে তোলেন মাকরানের শাসনকর্তা হারুন। তিনি কাশিমকে আরও সৈন্য দিয়ে সহায়তা করেন।
বিশাল এই সামরিক বাহিনী নিয়ে ৭১২ খ্রিষ্টাব্দে মুহম্মদ বিন কাশিম সিন্ধু রাজ্যে আক্রমণ করেন। এদিকে সিন্ধু রাজ্যেও তখন চলছিলো রাজা দহিরের অত্যাচার, নিপীড়ন। রাজা দহিরের অত্যাচার, নিপীড়নের ফলে অনেক সিন্ধুবাসী তখন মুহম্মদ বিন কাশিমের সামরিক দলে যোগ দেন। যা মুহম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের পথকে আরও সহজ করে দিয়েছিলো।
সিন্ধুরাজ দহির পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫০০০০ সৈন্য দিয়ে মুহম্মদ বিন কাশিমের বাহিনীকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন।
৭১২ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জুন মুসলমান বাহিনী এবং সিন্ধু বাহিনীর মধ্য তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এদিন মুহম্মদ বিন কাশিমের সুসজ্জিত, প্রশিক্ষিত সামরিক বাহিনীর কাছে পরাজয় বরণ করতে হয় সিন্ধু রাজাকে। আত্মাহুতি ফলে তিনি সিন্ধু যুদ্ধে নিহত হন। আর মুসলমানরা ভারতে প্রথম কোনও রাজ্য নিজেদের করায়ত্ত করে নেয়।
[caption id="" align="alignnone" width="1000"] সিন্ধু রাজ্যের রাজা দাহির[/caption]দহির পত্নি রানীবাঈ’র আগুনে আত্মাহুতি এবং কন্যাদ্বয় আটক
অপরদিকে মুসলিমদের হাতে সিন্ধু রাজার পরাজয়ের খবর জেনে রাজা দহিরের পত্নি রানীবাঈ প্রাসাদের অন্যান্য রমনীদের নিয়ে আগুনে আত্মাহুতি দেন। মুহম্মদ বিন কাশিমের হাতে ধরা পড়েন রাজা দহিরের অন্য আরেকজন পত্নি রানি লাদি এবং কন্যা সূর্যদেবী ও পরিমল দেবী।
তবে বিচক্ষণ সেনাপতি শুধুমাত্র সিন্ধু রাজধানী আলোর দখল করে বসে থাকেন নি। তিনি সিন্ধু রাজ্যের আরেক শক্তিশালী নগরী মুলতান আক্রমণ করেন এবং সেটিও দখল করে নেন। ৭১৩ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমান বাহিনী মুলতান জয় করে।
ঐতিহাসিকদের মতে মুলতান নগরী থেকে মুসলিম সেনাপতি মুহম্মদ বিন কাশিম বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ করায়ত্ত করতে পেরেছিলেন। যার দরুন তিনি মুলতানকে স্বর্ণের নগরী নাম দিয়েছিলেন।
ভারতবর্ষের সিন্ধু ও মুলতান নগরী বিজয়ের মধ্য দিয়েই মূলত ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের সূচনা হয়। তাই বলা যেতে পারে সিন্ধু ও মুলতান বিজয় ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের ভিত্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছিলো। যা মুসলমানদেরকে পরবর্তীতে অন্যান্য রাজ্য জয়ের পথ খোলে দিয়েছিলো।
সিন্ধু ও মুলতান অভিযানে মুসলমানদের সাফল্যের কারণ:
সিন্ধু রাজ্যের সামরিক অদূরদর্শিতা: সিন্ধু রাজ্য শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ার পরেও মুসলমানদের কাছে হেরে যাওয়ার বড় একটি কারণ ছিলো সিন্ধুবাসীর অনৈক্য। সেসময় সিন্ধু রাজ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য তাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে স্থানীয় ছোট ছোট রাজারা রাজা দহিরকে সাহায্য করেন নি।
সিন্ধু ও মুলতানের ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা: সিন্ধু ও মুলতানের ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা রাজ্য দুটির পরাজয়ের আরেক অন্যতম কারণ। ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে সিন্ধু ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। আর একারণে প্রয়োজনের সময় রাজা দহির ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হন।
রাজা দহিরের সামরিক ব্যর্থতা: রাজা দহিরের বাহিনীতে ৫০০০০ সেনা থাকলেও তাদের সামরিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন ঐতিহাসিকরা। ঐতিহাসিকদের মতে রাজা দহিরের সামরিক দক্ষতা সম্পর্কে তিনি তেমনটা জ্ঞাত ছিলেন বলে মনে হয়না। কারণ মুসলিমরা যখন মাকরান দখল করে নেয় তখনো রাজা দহির সীমান্ত সুরক্ষায় তেমন কোনও ব্যবস্থা নেন নি। এতে মুসলিম বাহিনী তাদের চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করে নেয়।
মুসলিম বাহিনীর সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব: সিন্ধুরাজা দহিরের বাহিনী অদক্ষ থাকলেও অপরদিকে মুহম্মদ বিন কাশিমের নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনী ছিলো সামরিক জ্ঞানে প্রশিক্ষিত। মুসলিম বাহিনীর সুদক্ষ পরিকল্পনা, সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলতা ও উন্নত অস্ত্রের ব্যবহার মুসলমানদের বিজয়কে আরও সহজ করে তোলেছিলো।
রাজ্যগ্রাসী মনোভাব এবং ধর্ম প্রচার: ভারতের সিন্ধু ও মুলতান আক্রমণের পূর্বেও মুসলিম বাহিনী আরও অনেক রাজ্য আক্রমণ করেছে এবং তা জয় করেও নিয়েছিলো। যারফলে তাদের মধ্যে একটা রাজ্যগ্রাসী মনোভাব তৈরি হয়েছিলো। অন্যদিকে নতুন ধর্ম ইসলামের প্রচারের জন্যও তারা উদ্গ্রীব ছিলো। তাই দেশ জয়ের নেশা এবং ইসলাম প্রচারের তাগিদ তাদেরকে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন ঐতিহাসিক ভি ডি মহাজন।
এসব ছাড়াও আরও নানা ধরনের কারণ ছিলো মুসলমানদের সিন্ধু ও মুলতান বিজয়ের পেছনে।
তথ্যসূত্র: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান ও এ.টি.এম. সামছুজ্জোহা
''The story of Muhammod bin Qashim invasion of sindh is one of the romances of history''- Ishwari Prashad
''The Arabs got so much gold that they named multan as the 'City of Gold''- V.D Mahajan
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের