শ্যামলাল গোসাঁই
আপডেট: ১৬:৩৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
এবছর ২৮ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হবে
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের লাখো বিশ্বাসী মুসলমানদের মনে। কেননা, ঈদে মিলাদুন্নবীর এই শুভ দিনে যার জন্য এই লিখিল ভুবন আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তাঁর সেই বন্ধু শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) পৃথিবীতে আগমন করেন। যার আগমনে আনন্দে মেতে ওঠেছিল গোটা কূলকায়নাত। আবার এই ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনেই প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স.) দেহত্যাগ করেন। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী এক উচ্চতর মাহাত্ম্য নিয়ে মুসলমানদের কাছে হাজির হয়। এ দিনটিকে বিশ্বাসী মুমিনগণ এবাদত-বন্দেগী করেই কাটান।
মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাব দিবসটি আমাদের সমাজে ফাতেহায়ে দোয়াজদাহুম নামে পরিচিত। ‘ফাতেহায়ে দোয়াজদাহুম’ কথাটি ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। দোয়াজদাহুম মানে বারো, ফাতেহায়ে দোয়াজদাহুম অর্থ হলো বারো তারিখের ফাতেহা অনুষ্ঠান। কালক্রমে এ দিনটি মিলাদুন্নবী (সা.) নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। এর অর্থ হলো নবী (সা.)-এর জন্ম অনুষ্ঠান।
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ এরিমধ্যে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এবছর ২৮ সেপ্টেম্বর পালিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাদ মাগরিব জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি সভায় এ তথ্য জানায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার সভাপতিত্ব করেন।
ওইদিন সভায় আরো অংশ নেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মহা. বশিরুল আলম, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক মহাম্মদ আসাদুর রহমান, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসনের সহকারী প্রশাসক মো. শাহরিয়ার হক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক মো. জুলফিকার রহমান কোরাইশী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার আল-কোরআন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, চকবাজার শাহি জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান প্রমুখ।
ইসলাম ধর্মে ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য
ইসলাম ধর্মে ঈদে মিলাদুন্নবীর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কেননা, যখন আরব দেশ গোড়া পৌত্তলিকতা আর সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত যুগে অবস্থান করছিলো তখন বারো রবিউল আউয়াল পৃথিবীতে আগমন করেন। আরব সমাজের দুঃসময়ের নবী মুহাম্মদ (স.) এর আগমন ছিল নিষ্পেষিত আরববাসীর জন্য এক নতুন স্বপ্ন আর শুভ সূচনালগ্ন। কেননা, নবী মুহাম্মদ (স.) এর জন্মের পর থেকেই আরব দেশে নানা ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। যার দরুন আরববাসী ঈদে মিলাদুন্নবী এবং পুরো রবিউল আউয়াল মাসকে বিশেষভাবে গ্রহণ করে থাকেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। এবং জেনেছি ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে কিছু ধর্মীয় তথ্যও। এবার জানব কোরআনের আলোকে ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব। মনুষ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর পরিচয় লাভ করা। নবী-রাসুল প্রেরণের লক্ষ্য হলো মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তাই আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ রাসুল (সা.) যা যা করেছেন বা করতে বলেছেন, তা করতে হবে। আর যা করেননি বা করতে বারণ করেছেন, তা বর্জন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের ঘোষণা: ‘যা দিয়েছেন তোমাদের রাসুল (সা.), সুতরাং তা ধারণ করো; আর যা থেকে বারণ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকো।’ (সূরা: হাশর-৫৯, ৭)।
আল-কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘বলুন (হে রাসুল সা.!) যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসবে, তবে আমার অনুকরণ করো; আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ (সূরা: বাকারা-২, ৩১)। হাদিস শরিফে আছে: ‘তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মুমিন হবে না, যতক্ষণ না আমি হব তার নিকট তার পিতা, পুত্র ও সকল মানুষ (এবং যাবতীয় সবকিছু) থেকে প্রিয়।’ এ আলোকে নিশ্চিত করে বলা যায়, রাসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ইমানের পূর্বশর্ত। আর এই ভালোবাসা তাঁর নির্দেশ পালন ও অনুকরণের মধ্যেই প্রকাশ পাবে। আমরা যখন উৎসব বা দুঃখ প্রকাশ করি, তখন কি আমরা সেই প্রকৃত ভালোবাসা ও আনুগত্যের কথা চিন্তা করি? না আমরা মিষ্টি খাওয়া বা একটা আনুষ্ঠানিক প্রথাই পালন করি? হ্যাঁ, মিষ্টি খাওয়াও সুন্নত বটে! তবে কথা হলো, আমরা বর্তমানে শুধু মিষ্টিজাতীয় সুন্নতগুলো পালনে অতিমাত্রায় যত্নশীল হয়ে পড়েছি। কিন্তু কতগুলো সুন্নতের কথা আমরা একেবারেই ভুলতে বসেছি। যেমন: দুস্থ ও আর্তের সেবা করা, গরিব-দুঃখীর দেখাশোনা করা এবং মানবকল্যাণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা।
এ বিষয়ে আরো জানতে পারেন- এখানে
উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও বহু বিষয় রয়েছে, যা রাসুল (সা.) করেছেন এবং করতে বলেছেন; সেগুলো আমাদের জন্য সুন্নত, এমনকি অনেকগুলো ফরজও বটে। কিন্তু আমরা সে সম্পর্কে উদাসীন। যা–ও কিছু করি, তা–ও কি পরিপূর্ণ করতে পারি? না; বরং শুধু যেকোনো একটা দিক নিয়েই আত্মপ্রসাদ লাভ করি। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নিজের কর্মপরিধি বাড়ানোর পরিবর্তে অন্য সবার সমালোচনা করে তৃপ্তি লাভ করি। যার দরুন নিজের অসম্পূর্ণতা ও অন্যের অসহযোগিতার ফলে পরাভূত হই বারবার। মিলাদ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো জন্মলগ্ন বা জন্ম সম্পর্কে আলোচনা।
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ আমরা জানলাম। বাংলা পরিভাষায় মিলাদ বলতে বুঝি, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জীবনী আলোচনা এবং তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করা। এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমে বর্ণিত হয়েছে: ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, ফেরেশতাগণ তাঁর প্রতি রহমতের দোয়া করেন; হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ ও যথাযথরূপে সালাম পেশ করো। (সূরা: আহযাব-৩৩, ৫৬)।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের