Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৩ ১৪৩২

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০১, ৮ এপ্রিল ২০২৩

২০০ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় প্রহরীর বেতন বন্ধ !

নীলফামারীর ডিমলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীরা ২০০ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় মাসিক বেতন বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে দুই বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীর বিরুদ্ধে। 

বিলসীটে বাদপড়া ১৬ জন দপ্তরী কাম প্রহরীরা উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীরা দুইশত টাকা করে ঘুষ না দেওয়ায় ১৬ কর্মচারীর মাসিক বেতন বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।

অভিযুক্তরা হলেন- উত্তর তিতপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরী মোঃ আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েল ও নিজ সুন্দর খাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরী আব্দুল বাছেদ। 

তারা একে অপরের যোগসাজশে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীদের নিকট হইতে বিল উত্তোলন বাবদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের কথা বলে দুইশত টাকা উৎকোচ দাবি করে। 

উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালেয়ে মোট ৬৯ জন দপ্তরী কাম-প্রহরী রয়েছে। এদের মধ্যে যাহারা দাবীকৃত উক্ত টাকা দুইজন প্রতারক চক্রকে পরিশোধ করেছে তাদের নাম বিলসীটে উঠেছে। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করেছে তাদের নাম বিলসীটে আসে নাই। ভুক্তভোগী জানান, আমরা ১৬ জন টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাদের নাম বিলসীটে আসেনি। বিলসীটে নাম না থাকায় ঈদকে সামনে রেখে বিল উত্তোলন করতে না পারি তাহলে আমাদের পরিবার-পরিজনসহ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন সন্দিহান হয়ে পড়বে।

ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান জানান, সামনে আমাদের পবিত্র ঈদ, যদি বেতন না পাই তাহলে আমাদের পরিবার-পরিজন বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান রয়েছে তাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন অসম্ভব হয়ে পড়বে। আমরা তো এই বেতনের উপর নির্ভরশীল।  দুইশত টাকা উৎকোচ না দেওয়ায় আমাদের ১৬ জনের বিল আটকে রেখেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। 

ফরহাদ নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, আমার নিকট আব্দুল বাছেদ ২০০ টাকা ঘুষ চেয়েছে আমি দিতে অস্বীকার করায় তাহারা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস আমার বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। যাহারা দুইশত টাকা দিয়েছে বিল সীটে তাদের নাম এসেছে। আমি বেতন তুলে পরিবার পরিজনের জন্য ঈদের কেনাকাটা করব।  বছরে দুইটি বড় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। বিল তুলতে না পারলে এই ঈদে পরিবারকে ভালো জামা কাপড় কেনাকাটা করে না দিতে পারব না।  

এছাড়াও অন্যান্য ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের কাছে আব্দুল বাছেদ ও আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েল উপজেলা শিক্ষা অফিসের কথা বলে জনপ্রতি দুইশত টাকা করে ঘুষ চায়। এর মধ্যে ৫৩ জন টাকা দিয়েছে তাদের বিল সীটে নাম এসেছে। আমরা ১৬ জন দেইনি আমাদের নাম বাদ পরে গেছে ফলে বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা একাধিকবার অফিসে ধর্না দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সর্বশেষ আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) স্যার নিকট অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি। 

অভিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী (দপ্তরী কাম-প্রহরী) আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েলকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনি শিক্ষা অফিসে যান, গিয়ে টিইও, এটিইও, বড় বাবু আছে তাদের বলেন। আর যারা আমার কথা বলে তাদের আমার স্কুলে নিয়ে আসেন। বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। এবিষয়ে  আব্দুল বাছেদকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান শিক্ষা অফিস ৫৩ জনের বিল করেছে আমাদের কোন করনীয় নেই, বিল দেওয়ার মালিক কি আমরা। 

ডিমলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার নুর মোহম্মাদ জানান, আমি অফিশিয়াল কাজে নীলফামারীতে এসেছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, তবে আমার অফিসের কেউ যদি জড়িত থেকে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ