মো. রওশান উজ্জামান রনি
আপডেট: ২১:৫৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ আবেদন করবেন যেভাবে
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ | ছবি লিখক
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা কিভাবে আবেদন করবেন। কি কি কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া ভিসা খরচ কত হবে। অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার কত দিন লাগতে পারে। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট সহ সম্পূর্ণ তথ্য থাকবে এই আর্টিকেলে।
আপনারা হয়তো জানেন যে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী হচ্ছে সিডনি। সিডনি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার একটা বড় স্টেট নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী। এখানে সবচাইতে বেশি কাজের সুযোগ, সবচাইতে বেশি মানুষ থাকে এবং সব চাইতে বড় বাংলাদেশি কমিউনিটি এই সিডনির মধ্যে আছে। সিডনি তথা নিউ সাউথ ওয়েলস অসংখ্য ধরনের কাজের দক্ষতার ভিত্তিতে বেশ কয়েক হাজার স্কিল ওয়ার্ক ভিসা দিচ্ছে। এই ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা গুলোর জন্য কোন জব অফার লাগবে না অর্থাৎ কষ্ট করে সিভি, কাভার লেটার লিখে সিখ বা অন্যান্য অস্ট্রেলিয়ার যে ওয়েবসাইটগুলো আছে বা জব সাইট গুলো আছে সেগুলো জব অফারের জন্য আবেদন করার কোন দরকার হবে না। জাস্ট অল্প কয়েকটা যোগ্যতা থাকলেই এই অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা র জন্য আবেদন করা যাবে। এই ভিসা কারা পেতে পারে, এই ভিসার আবেদনের প্রক্রিয়াটা কি এবং এই ভিসার জন্য কী কী লাগবে সেই বিষয়ে ডিটেলস জানাবো।
নিউ সাউথ ওয়েললথ স্টেটের রাজ্য সরকারের যে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা তারা দিচ্ছে এটার নাম হচ্ছে 190 স্কিল নমিনেশন ভিসা। আর এটা একটা পার্মানেন্ট ভিসা অর্থাত্ এই ভিসা যারা পাবে তারা একেবারে প্রথম থেকেই স্থায়ী ভাবে অস্ট্রেলিয়াতে থাকতে পারবে বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি নিয়ে থাকতে পারবে। তারা তাদের ফ্যামিলি নিয়ে থাকতে পারবে। তারা অস্ট্রেলিয়ান সরকারের বেশ কিছু নাগরিক সুবিধাও তারা ভোগ করতে পারবে। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের একেবারে অথেন্টিক অফিসিয়াল সোর্স এর লিংকসহ এবং তাদের পেজ সহ আপনাদেরকে বিস্তারিত দেখাবো স্টেপ বাই স্টেপ। এই ভিসার তথ্যের জন্য আপনাকে প্রথমে যেতে হবে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকারের বা স্টেট গভর্নমেন্ট এর ওয়েবসাইটে। সেই ওয়েবসাইট লিঙ্ক টা এই পোস্টের শেষে দিয়ে দেবো সেখান থেকে আপনারা দেখে নিতে পারবেন। এই লিংকে ক্লিক করুন- gov.au/visas-and-migration
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা যার নাম 190 স্কিল নমিনেশন ভিসা এবং এই ভিসার জন্য যে যোগ্যতা গুলো সেটার তথ্য আছে অস্ট্রেলিয়া গভর্নমেন্টের এমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে। তো যোগ্যতা গুলো কি সেগুলো ডিটেলস বলছি। এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে সুনির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা দরকার হবে এবং সেটাকে অস্ট্রিয়ান গভর্নমেন্ট তাদের ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে স্কিল অকুপেশন লিস্টে নামে একটা লিস্টের মধ্যে দিয়ে দিয়েছে সবগুলো দক্ষতার নাম। এখানে স্কিল অকুপেশন লিস্টে প্রথমে ভিসা সিলেক্ট করুন সাব ক্লাস 190। তারপর নিচে দেখুন এখানে স্কিলের নামটা লিখতে হবে। প্রসঙ্গত এখানে জাস্ট এক্সাম্পল হিসেবে কনস্ট্রাকশন লিখে সার্চ করছি। কারণ কনস্ট্রাকশন হচ্ছে একটা প্রায়োরিটি সেক্টর বা অগ্রাধিকার সেক্টর। যে সেক্টরের জন্য এই নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট ভিসা দিচ্ছে। কনস্ট্রাকশন এর জেরে বেশ কয়েক ধরনের স্কিল দেখা যাচ্ছে যেগুলোতে আবেদন করা যাবে অর্থাৎ যে দক্ষতাগুলো কারও যদি থাকে তাহলে আবেদন করতে পারবে। তো কনস্ট্রাকশন ছাড়াও আরও অনেক ধরণের এখানে স্কিল আছে। আপনারা আপনাদের স্কিল এখানে সার্চ করে নেবেন। আমি জাস্ট এক্সাম্পল হিসেবে বুঝাচ্ছি। এখানে নিউ সাউথ ওয়েলস গভর্নমেন্ট যেটা বলেছে, যে তারা কয়েকটা প্রায়োরিটি সেক্টর আছে যে সেক্টরের স্কিল যাদের আছে তারা অগ্রাধিকার পাবে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে। সেই সেক্টর গুলো হচ্ছে, হেলথ সেক্টর, এডুকেশন সেক্টর, আইসিটি অর্থাৎ ইনফরমেশন টেকনোলজি সেক্টর এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার অর্থাৎ কনস্ট্রাকশন রাস্তাঘাট নির্মাণ এসব নিয়ে যারা কাজ করে সেই স্কিল যাদের আছে। কাজেই প্রথম স্টেপ হবে স্কিল উকুপেশন লিস্ট চেক করে রাখা। তার যে কাজের দক্ষতা বা স্কিল সেটা এখানে লিস্টেড আছে কি না। যদি থাকে তাহলে পরবর্তি পদক্ষেপ। যদি কারো স্কিল এখানে না থাকে তাহলে তার জন্য আবেদন করার কোন অপশন নেই।
ইউটিউবে আজকাল আরো অনেকে ভিডিও করছেন। বিভিন্ন অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে তারা যেটা করছে অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন জব সাইট যেমন শিক কম ডট ইউ তারপরে গ্লাস ডোর সেখানে অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য যে সমস্ত জব এর অফার গুলো আছে সেগুলো তারা দেখিয়ে তারা বলেছে এগুলোতে অ্যাপ্লাই করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা জব ভিসা পাওয়া যাবে এবং অনেকে সিভি কাভার লেটারের ব্যবসা ও করছে। অর্থাৎ তারা বলছে আমি আপনাদের জন্য সিভি কাভার লেটার লিখে দেবো আপনাদের জন্য আবেদন করে দেবো। বলাই বাহুল্য এই কাজগুলো শুধুমাত্র যারা অস্ট্রেলিয়াতে অলরেডি আছে মূলত তাদের জন্য। বাংলাদেশে বসে সিভি কাভার লেটার পাঠিয়ে এই সব জবের জন্য আবেদন করে কোনও লাভ নেই। আর আমরা এখন যে ভিসার কথা বলছি এই ভিসার জন্য জব অফারের প্রয়োজনই নেই। অর্থাৎ কাউকে কষ্ট করে সিভি কাভার লেটার এ সব লিখে অ্যাপ্লাই করতে হবে না। শুধু প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং যোগ্যতা থাকলেই কেউ অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা জন্য আবেদন করতে পারবে। কারও যদি এই স্কিল উকুপেশন লিস্ট বা দক্ষতা, যোগ্যতা থাকে তাহলে সেকেন্ড স্টেপে তাকে যেটা করতে হবে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করতে হবে। এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট হচ্ছে একটা ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন। এটা অনলাইনে এই ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে করা যাবে। ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে এটা পেজ হচ্ছে স্কিল সিলেক্ট। সেই স্কিল সিলেক্টে জাস্ট একটা ইমেল অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করার মতো একটা অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে এখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাকে প্রথমে এই এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করতে হবে। এটা খুবই সোজা খুব সহজ ভাষায় সহজেই সেখানে স্টেপগুলো দেওয়া আছে। যে কেউ যার বেসিক ইন্টারনেট ব্যবহার করার দক্ষতা আছে, যে একটা ইমেল অ্যাকাউন্ট বা জিমেল অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করেছেন বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করছেন এরকম যে কারও পক্ষে সেই স্কিল সিলেক্ট এ গিয়ে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করা কোনও ব্যাপার না। তবে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করতে হলে এই ভিসার জন্য কিছু যোগ্যতা আছে, সেই যোগ্যতা গুলো দরকার হবে। সেই যোগ্যতা গুলো কি তার ডিটেলস আমি একটু পরেই আপনাদের বলছি। স্কিল সিলেক্ট লিংক
এই স্কিল সিলেক্ট হয়ে যখন কেউ এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করবে এর জন্য কোনও ফি দিতে হবে না। অর্থাৎ এটা ফ্রি কোনও টাকা পয়সা লাগবে না। তো স্কিল সিলেক্টে যখন কেউ সাবমিট করল তার পরে নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট গভর্নমেন্ট তাদের সেই প্রিলিমিনারি অ্যাপ্লিকেশনগুলো চেক করবে। চেক করে তারা দেখবে কাউকে ইনভাইট করা যায় কিনা। যদি কারও দেওয়া ইনফর্মেশন দেখে মনে হয় তাকে ইনভাইট করা্র মত তাহলে স্টেট গভর্নমেন্ট তাদেরকে ইনভাইটেশন পাঠাবে। ইনভাইটেশনটা আসবে একটা ইমেলে একটা লিঙ্কের মাধ্যমে। তো ইনভাইটেশন আসতে কত দিন লাগবে এই বিষয়ে তারা সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু বলেনি। তারা যেটা বলছে তারা বছরের বিভিন্ন সময়ে এই এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট গুলো চেক করে। চেক করে তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাউন্ডে তারা এটার জন্য ইনভাইটেশন পাঠায়। কাজেই অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা পেতে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট সাবমিট করার পর ঠিক কতদিন পরে আসবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে সেটা এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই হবে এটা আশা করা যায়। অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা আবেদন কারীর কাছে যখন ইনভাইটেশন আসবে তখন তাকে নেক্সট স্টেপে নিউ সাউথস্টেড গভর্নমেন্টের নমিনেশন বা স্পন্সরশিপের জন্য আবেদন করতে হবে এবং সেটাও সেই স্কিল সিলেকটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সেটার লিঙ্কটা তারা সেই ইনভাইটেশন এর মধ্যে দিয়ে দেবে। সেই লিঙ্কে গিয়ে তখন তাকে আরও কিছু অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন তার যোগ্যতার কিছু তথ্য দিয়ে তাকে এই ইনভাইটেশন এর জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে হবে। আর এই অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটা ফি আছে সেটা হচ্ছে তিনশ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২১০০০ বাংলাদেশি টাকা। এই পেমেন্ট করতে হবে অনলাইনে সেই লিংকে প্রেমেন্টের তথ্য দেওয়া থাকবে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে হবে। এই ফি টা শুধুমাত্র মূল আবেদনকারীকে অর্থাৎ কেউ যদি ফ্যামিলি নিয়ে আসতে চায় তাহলে শুধু মূল আবেদনকারী যিনি তাকে তার জন্য তিনশ ডলার পে করতে হবে। ফ্যামিলির বাকি মেম্বারদের জন্য পেমেন্ট করতে হবে না। ইনভিটেশনের জন্য যখন কেউ এ ভাবে রেজিস্ট্রেশন করল রেজিস্ট্রেশন করার সাধারণত ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট গভর্নমেন্ট তাদের সেই অ্যাপ্লিকেশনটা দেখে তারপরে নেক্সট স্টেপে তাকে এবার ভিসার জন্য আবেদন করার ইনভাইটেশন পাঠাবে। ইনভাইটেশন পাওয়ার পরে সেই এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট যেখানে প্রথমে সাবমিট করেছিলেন সেই ইওআই সাবমিট করার যে স্কিল সিলেক্ট সেই স্কিল সিলেক্ট তাকে সেই অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে তারপর হচ্ছে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা জন্য আবেদন করতে কী লাগবে? অর্থাৎ ফাইনাল স্টেপে ভিসার জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে আপনারা কী কী জিনিস থাকতে হবে বা যোগ্যতা গুলো কি কি। তো এর জন্য আপনাকে দিয়ে দিচ্ছি ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইট (এখানে ক্লিক করুন) তো এখানে যদি সাবক্লাস ভিসা 190 পেইজে যাই তাহলে এই ভিসার জন্য কী কী থাকতে হবে সেই রিকোয়ারমেন্টটা কিন্তু এখানে দেখাচ্ছে। এখানে যে লিঙ্ক যে পেজ গুলো দেখাচ্ছি সেগুলো হচ্ছে সব অস্ট্রেলিয়ান গভর্নমেন্টের অর্থাত্ তাদের যে অথরিটির ওয়েবসাইট। সেগুলো আমি কিন্তু জাস্ট অস্ট্রেলিয়ার জব সাইট সিক ডট কম বা গ্লাসডোর এই ধরনের ওয়েবসাইটগুলো দেখিয়ে তাদের সেই জব গুলো দেখাচ্ছি না। বলছি না যে এগুলো অ্যাপ্লাই করে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যাবে। কারণ হচ্ছে ওই ভাবে আসলে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায় না। ভিসার আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি আছে সেটা দেখাচ্ছি। কাউকে ভিসা পেতে হলে অস্ট্রেলিয়ার এই পদ্ধতিতেই আবেদন করে আসতে হবে।
তো এই 190 সাবক্লাস ভিসার জন্য এখানে আবেদনকারীর বয়সের কথা বলছে, যে ম্যাক্সিমাম বয়স হতে পারে ৪৪ বছর। অর্থাৎ ৪৪ বছরের ঊর্ধ্বে হলে কারও জন্য আসলেই এই ভিসার আবেদন করার যোগ্যতা থাকবে না। যে স্কিল উকুপেশন লিস্টে তার স্কিল থাকতে হবে এবং সেই স্কিলটা বা দক্ষতাটা অস্ট্রেলিয়ার কোন স্কিল অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির কাছ থেকে যাচাই করিয়ে আনতে হবে। অস্ট্রেলিয়াতে বিভিন্ন ধরনের স্কিলের জন্য অনেকগুলো যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান বা অ্যাসেসমেন্ট অথরিটি আছে তাদের কাছে সেই দক্ষতার প্রমাণ অর্থাৎ কোনও একটা স্কিল এর সাথে রিলেটেড শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ইংরেজি দক্ষতা, বয়স এই ধরনের আরও বেশ কিছু বিষয়ের প্রমাণ সেটা হতে পারে তার বাংলাদেশে কাজ করছে এক্সপেরিয়েন্স লেটার, পে স্লিপ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট এই ধরনের বেশ কিছু কাগজপত্র তাদের কাছে পাঠিয়ে সেই দক্ষতা যাচাই করিয়ে নিতে হয়। যেটাকে বলা হচ্ছে স্কিল অ্যাসেসমেন্ট। অর্থাৎ সেই স্কিল অ্যাসেসমেন্ট থাকতে হবে। এটা হচ্ছে আরেকটা যোগ্যতা। তারপর যেটা বলছে সেটা হচ্ছে ইংরেজি দক্ষতা। অর্থাত্ অস্ট্রেলিয়া যেহেতু একটা ইংলিশ ভাষার দেশ এখানে এসে কাজ করতে হলে, বসবাস করতে হলে অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে। সেই ইংরেজির স্কিলটা কোন লেভেলে থাকতে হবে সেটা তারা এখানে বলে দিচ্ছে, যে তারা বলছে যে কম্পিটেন্ট স্কিল অর্থাৎ যেটা হচ্ছে মিনিমাম IELTS-6 লাগবে সেটা হতে পারে অ্যাকাডেমিক অথবা সেটা হতে পারে যেটিই। IELTS এর বিকল্প হিসেবে কারো যদি পি টি বা টপের এই ধরনের কোনও টেস্ট দেওয়া থাকে সেটাও অ্যাকসেপটেবল হতে পারে। তবে কিছু কিছু স্কিলের ক্ষেত্রে তারা শুধুমাত্র IELTS টাই অ্যাকসেপ্ট করে অন্য কোনও স্কোর অ্যাকসেপ্ট করে না। আর তেমনই কিছু কিছু স্কিল আছে যে স্কিলের ক্ষেত্রে IELTS এর স্কোর আরেকটু হাই লাগে। যেমন এজুকেশন তারপরে হেলথ রিলেটেড কিছু অকেশন আছে যেগুলোর জন্য IELTS এর স্কোরটা একটু বেশী দরকার হয়। এগজ্যাক্টলি কোন স্কিলের স্কিল অ্যাসেসমেন্ট অথরিটি কারা এবং সেই স্কিলের জন্য অর্থাৎ সেই দক্ষতা যে কারও আছে সেটা প্রমাণ করার জন্য তার কী কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অভিজ্ঞতা লাগবে সেটা জানতে হলে এখানে দেখেন যে স্কিলের পাশে এ এন জেট সি ও বলে একটা কোড এবং এই কোড এর লিঙ্ক দেওয়া আছে। সেই লিঙ্ক যদি আপনি ক্লিক করেন। তাহলে কিন্তু দেখতে পাবেন যে এই পার্টিকুলার স্কিলের জন্য কী কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা কোন লেভেলের অভিজ্ঞতা দরকার হবে। আর অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা জন্য এখানেই স্কিল অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির ওয়েবসাইটের লিঙ্ক রয়েছে সেখানে ক্লিক করলে এই পার্টিকুলার স্কিলের জন্য স্কিল অ্যাসিস্ট্যান্ট অথরিটি কারা অস্ট্রেলিয়া অর্থাৎ তাদের কাছে আপনার পেপার গুলো পাঠিয়ে স্কিল টাকে যাচাই করে আনতে হবে তাদের ওয়েবসাইটে দেখতে পাবেন এবং তাদের ওয়েবসাইটে গেলে স্কিল অ্যাসিস্ট্যান্টের জন্য ডিটেলস কী কী লাগবে, কী ভাবে করাতে হবে, কীভাবে সেটা অনলাইনে অ্যাপ্লাই করতে হবে, কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে এবং ফি দিতে হবে সব তথ্য এখানে পাবেন।
এরপর তারা যেটা বলছে যে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা পেতে মিনিমাম ৬৫ পয়েন্ট লাগবে। তো এই ৬৫পয়েন্ট ব্যাপারটা হচ্ছে যে আবেদনকারীর বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ইংরেজি দক্ষতা বা IELTS স্কোর এই ধরনের আরও বেশ কিছু ফ্যাক্টর আছে। প্রত্যেকটা ফ্যাক্টর উপরে কিছু কিছু করে পয়েন্ট এলোকেট করে তারা এবং কার কতখানি দক্ষতা, কতখানি অভিজ্ঞতা, কতখানি শিক্ষাগত যোগ্যতা কতখানি ইংরেজির বা IELTS এর স্কোর আছে এই প্রত্যেকটা বিষয়ের উপরে আলাদা আলাদা ভাবে পয়েন্ট ক্যালকুলেট করে টোটাল একটা পয়েন্ট ক্যালকুলেট করে আনতে হয় এবং সেভাবে করে মিনিমাম ৬৫ পয়েন্ট কাউকে তুলতে হবে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে। তবে এই যে ৬৫ পয়েন্ট বলছি কারও যদি এমন হয় যে তার বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর ক্যালকুলেট করে ৬৫ পয়েন্ট বা তার বেশি উঠল কিন্তু কয়েকটা এসেনশিয়াল বা মাস্ট রিকোয়ারমেন্ট তার নাই। যেমন যেমন বয়স ৪৪ বছরের বেশি হয়ে গেছে বা IELTS নাই সে ক্ষেত্রে কিন্তু হবে না।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা পেতে এই কটা বিষয়ের বাইরে আরও কয়েকটা খুচরা জিনিস লাগবে যেমন পুলিশ চেক করাতে হবে। মেডিক্যাল টেস্ট করাতে হবে তো সেগুলোর জন্য কীভাবে কী করতে হবে যখন কেউ ভিসার জন্য আবেদন করবে সেই আবেদনের রেসপন্সে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট তাকে বলে দেবে কোথায় গিয়ে কবের মধ্যে এই টেস্ট করাতে হবে। এখন আসি ভিসার খরচের কথায়। এই ভিসার জন্য যে অ্যাপ্লিকেশন ফি সেটা হচ্ছে প্রতি আবেদনকারীর জন্য ৪৬৪০ অস্ট্রলিয়ান ডলার যেটা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় 3,25,000 টাকার মতো হয়। একজন সিঙ্গল অ্যাপ্লিক্যান্ট এর জন্য এই ভিসার আবেদন করতে তার স্টেট নমিনেশনের জন্য রেজিস্ট্রেশনের খরচ সহ মোট আসছে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫০০০০ টাকা। আর যদি কেউ ফ্যামিলি নিয়ে আসতে চান তাহলে প্রত্যেকটা ফ্যামিলি মেম্বার জন্য ভিসা আবেদন ফি টা তাকে অ্যাড করে ক্যালকুলেট করে নিতে হবে। আর এই ভিসার জন্য কোনও ফান্ড রিকোয়ারমেন্ট নাই। অর্থাৎ কোনও ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট বা ফান্ড কাউকে দেখাতে হবে না। সেটা ছাড়াই কেউ আবেদন করতে পারবে।
আপনাদের কারও কারও হয়তো মনে হতে পারে যে বেশ দক্ষ এটা করো ওটা করো এই পেজেই পেয়ে যাও আসলে কিন্তু ব্যাপারটা এত কমপ্লেক্স কিছু না আমি আপনাদেরকে যে ভিডিও র ক্যাপশনে পেজগুলো লিংক দিলাম। সেই দিনগুলোতে আপনার সেই পেজগুলো স্টাডি করেন। আমি যে ভিডিওটা যে কথাগুলো বললাম সেগুলো একটু খেয়াল করে শোনেন। যখন আপনি অ্যাপ্লাই করতে যাবেন দেখবেন ব্যাপারটা কিন্তু আসলে তত কঠিন নয়৷ এবং এর জন্য সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং হচ্ছে আপনি বাসায় বসে কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা পেতে পুরো আবেদন প্রক্রিয়া কমপ্লিট করতে পারবেন। এর জন্য কোনও অফিসে যেতে হবে না, কাউকে ঘুষ দিতে হবে না, অ্যাম্বাসিতে যেতে হবে না পুরোটাই হচ্ছে অনলাইনে। আর এই ভিসার জন্য যে দক্ষতা বা যোগ্যতা গুলো দরকার হবে বললাম, সেই দক্ষতা, যোগ্যতা যদি কারও থাকে তিনি যদি বাংলাদেশে থাকেন অথবা মালয়েশিয়া, সৌদি আরব বা ইউরোপ, দুবাই যেখানেই থাকুন না কেন আপনি যোগ্যতাগুলি যদি আপনার থাকে তাহলে একই নিয়মে আপনি অনলাইনে যেভাবে দেখালাম সে ভাবে করে কিন্তু আপনি নিজেই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন৷
তারপরে যদি আপনারা চান এটা আপনার কাছে জটিল মনে হচ্ছে কোনও এজেন্টের মাধ্যমে আবেদন করবেন তাহলে অবশ্যই এজেন্টের কাছে যেতে পারেন। তবে অবশ্যই জেনুইন রেজিস্টার্ড ইমিগ্রেশন এজেন্ট যারা আছে অস্ট্রেলিয়ার গভর্নমেন্ট থেকে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া তাদের কাছে অবশ্যই যাবেন অন্য কারও কাছে গেলে কিন্তু প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এখন কিন্তু প্রচুর প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। প্রতিনিয়ত অহরহ জানাচ্ছেন যে তারা হয় প্রতারণার শিকার হয়েছেন অথবা কোনও এক প্রতারক তাদেরকে বিভিন্ন রকমের ভিসার অফার দিচ্ছে, বিভিন্ন লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। কাজেই এই ব্যাপারটা থেকে খুবই সাবধান। অবশ্যই যে ভিসার জন্য যে যোগ্যতাগুলি লাগবে অবশ্যই সেই যোগ্যতা গুলো থাকতে হবে। যোগ্যতা না থাকলে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় এজেন্ট ও কাউকে এই অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা এনে দিতে পারবে না। প্রথমে আপনার নিজের আগে চেক করে দেখেন যে ভিসার জন্য যে যোগ্যতা দরকার প্রত্যেকটা যোগ্যতা আছে কি না। যদি যোগ্যতা থাকে তাহলে আপনি কোন এজেন্টের কাছে যাবেন। নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট বা সিডনিতে যেখানে অনেকেই যেতে চায় সেখানে কী ভাবে আপনি একেবারে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি সহ স্থায়ী ভাবে বসবাস করার জন্য ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন তা জানালাম।
আই নিউজ/আর
আরও পড়ুন
- ডিভি লটারি আবেদনের নিয়ম
- ইউরোপ যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন
- লন্ডনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথ্য ২০২৩
- গ্রিসে নিখোঁজের দেড় মাসেও খোঁজ মিলেনি হবিগঞ্জের ওয়াহিদ আলীর
- মৌলভীবাজারের জুনেদ পেলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সম্মাননা
- অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ আবেদন করবেন যেভাবে
- বিনা খরচে জার্মানি ওয়ার্ক ভিসা ২৬ হাজার কর্মী নিচ্ছে জার্মানি
- ভুয়া বিয়ের নিমন্ত্রণে কানাডায় যাওয়ার পথে আটক ৪২ বাংলাদেশি
- বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: আমিরাতে তথ্যমন্ত্রী
- স্বচ্ছতা আনতে উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে ভাতা কার্ডের তালিকা তৈরি