Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৩ মে ২০২৫,   জ্যৈষ্ঠ ৯ ১৪৩২

সাগর শুভ্র, শাবিপ্রবি

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ৩ মে ২০২৫

সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর হোক সাহসী, কলম হোক মুক্ত

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

মুক্ত গণমাধ্যম দিবস কেবল উদযাপনের দিন নয়, এটি সাংবাদিকদের জন্য সত্য, ন্যায় ও জনগণের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার সময়। একটি স্বাধীন ও নির্ভীক গণমাধ্যম শোষিত কণ্ঠগুলোকে তুলে ধরে এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। আজও সাংবাদিকদের বাধামুক্ত কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা এবং প্রভাবমুক্ত সংবাদ পরিবেশের জন্য লড়াই করতে হয়। সত্য বলার সাহস এবং জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে এই দিবসের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেই নিশ্ছিদ্র গণতন্ত্র এবং মানবিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।


শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের মতামত 

রাহাত হাসান মিশকাত, দৈনিক কালবেলা
মুক্ত গণমাধ্যম মানে শুধু লেখার স্বাধীনতা নয়, এটি সত্য বলার সাহস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অধিকার। যেখানে ভয় ও চাপ নেই, সেখানেই সংবাদ হয় নিরপেক্ষ ও মানবিক। কিন্তু বাস্তবে আজ সাংবাদিকরা শ্বাসরুদ্ধ পরিবেশে কাজ করছেন। তবুও আমরা আশাবাদী—একদিন কলম হবে মুক্ত, কণ্ঠ হবে সাহসী। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক, গণমাধ্যম থাকবে জনগণের পক্ষে, সত্যের পাশে। কারণ গণতন্ত্র টিকে থাকে, যখন সংবাদপত্র নিঃসংকোচে কথা বলে।

নোমান ফয়সাল, প্রথম আলো
মুক্ত গণমাধ্যম দিবস একজন সাংবাদিকের জন্য সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতীক। আমাদের প্রত্যাশা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। সাংবাদিকরা যেন ভয়ের বশবর্তী না হয়ে নিরপেক্ষভাবে তথ্য প্রকাশ করতে পারেন এবং জনগণের সঠিক তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। রাষ্ট্র ও সমাজের সহযোগিতায় স্বাধীন গণমাধ্যম গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে সমাজে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

সৈকত মাহাবুব, দৈনিক যায়যায় দিন
মুক্ত গণমাধ্যম দিবস একজন সাংবাদিকের জন্য দায়িত্ব ও প্রত্যাশার দিন। এই দিনে প্রত্যাশা, সংবাদ যেন সত্য ও ন্যায়ের প্রতিচ্ছবি হয়। সাংবাদিকরা নির্ভীকভাবে কাজ করতে পারবেন, যদি সুরক্ষা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়। সমাজের অবহেলিত কণ্ঠগুলোকে তুলে ধরা এবং ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দায়িত্ব পালনে প্রয়োজন নৈতিক সমর্থন। মুক্ত গণমাধ্যম শুধু সাংবাদিকদের নয়, বরং জনগণের তথ্য জানার অধিকার। একটি সত্যনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যমই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারে।

মোফাজ্জল হক, ডেইলি ক্যাম্পাস
আজ বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার গুরুত্ব। সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্র ও জনগণের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং সরকারের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়। এটি গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে। তবে অনেক সাংবাদিক এখনও ভয়ভীতি ও সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন। ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে মুক্ত সাংবাদিকতা অপরিহার্য।

সাগর হোসেন জাহিদ, খোলা কাগজ 
আমাদের দেশে মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার সংকট দীর্ঘদিনের। গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ সমসাময়িক ক্ষমতাসীন দলের পক্ষাবলম্বন করে থাকে। অথচ গণমাধ্যমের প্রকৃত দায়িত্ব হলো গণমানুষের কথা বলা, জনস্বার্থে সত্য প্রকাশ করা এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির প্রতি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একমুখী সাংবাদিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম ছাড়া কোন গণতান্ত্রিক সমাজ সুদৃঢ় হতে পারে না। মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা, এই মাধ্যমটি যেন দলীয় বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মুখপাত্র না হয়ে, সত্যিকার অর্থে গণমানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে।

মাঈন উদ্দিন, দৈনিক আমার দেশ
নিশ্ছিদ্র গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত গণমাধ্যম অপরিহার্য। গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। এটি যখন মুক্ত থাকে, তখনই প্রকৃত গণতন্ত্র বিকশিত হয়। সাংবাদিকরা প্রতিদিন সত্য উদঘাটনের চেষ্টায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেন। আমাদের চাওয়া একটি নিরাপদ, স্বাধীন কর্মপরিবেশ, যেখানে ভয়ের ঊর্ধ্বে থেকে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা যায়। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে প্রত্যাশা করি, রাষ্ট্র ও সমাজ সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে এবং সাংবাদিকতার মর্যাদা রক্ষা করবে। এটি শুধু সাংবাদিকদের নয়, সকলের অধিকার ও স্বাধীনতার লড়াই।
 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়