Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১২ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৮ ১৪৩২

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০২:০৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

শাবির এফইএস বিভাগীয় প্রধানের ‘মানসিক সুস্থতা কামনা’ শিক্ষার্থীদের

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স (এফইএস) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনের ‘মানসিক সুস্থতা কামনা’ করেছেন আন্দোলনরত একদল শিক্ষার্থী। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে এ দোয়া কামনা করেন তারা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬২তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে ছাত্রীদের আবাসানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার অনুরোধ করা হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শাবিপ্রবির এফইএস বিভাগ কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে কি ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে, বিভাগটির প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিক। এসময় তিনি সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে বলেন,‘একাডেমিক কাউন্সিলে এরকম কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তোমরা কই থেকে এসব তথ্য পাও? আর ব্যবস্থাটা কি নেবো সেটা তোমাকে জানাতে হবে নাকি? যেই ব্যবস্থা নিবো সেটা আমার মাথায় আছে।’

জনৈক সাংবাদিকের সাথে এ ধরণের মন্তব্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনের উপর চটেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা দেশের অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পরীক্ষা দিতে আসবে।সেক্ষেত্রে আমরা যদি না জানি যে পরীক্ষার সময় আমাদের আবাসনের ব্যবস্থা আদৌ বিভাগগুলো করবে কিনা তবে সেটা আমাদের সংশয় বাড়াবে। পাশাপাশি আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকরা দ্বিধায় থাকবে। 

এ প্রেক্ষিতে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলালের দায়ছাড়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা তার সুস্থতা (মানসিক) কামনা করছি।  আশাকরি তিনি (অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন) খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে যৌক্তিক মন্তব্য করবেন। এছাড়া আবাসনের ব্যাপারে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের দায়ছাড়া বক্তব্য শিক্ষার্থীদের হতাশ করছে। আমরা শিক্ষকদের কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ আশা করছি।

এসময় তারা আরো বলেন, পরীক্ষার সময় আবাসিক হলগুলো খুলে দিতে হবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় কোন সিদ্ধান্ত আসলে আমরা তা মেনে নিবো। আমরা রাষ্ট্র বিরোধী কোন কর্মকান্ড করবো না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শীঘ্রই আবাসন সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে হবে। আমরা দেখছি আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসন এবং বিভাগীয় প্রধানদের মাঝে কাদা ছোড়াছুঁড়ি চলছে। তারা পরস্পর দায় এড়াচ্ছেন  যদিও একাডেমিক কাউন্সিলে আবাসনের বিষয়টি বিভাগীয় প্রধানদের দেখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে টানা চতুর্থ দিনের মত আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোড পেইন্টিংয়ের শুরুতে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তারা এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬২তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে হল বন্ধ রেখে ১৭ জানুয়ারীর মধ্যে পরীক্ষা চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় একাডেমিক কাউন্সিল সদস্যরা।  

তবে একাডেমিক সভার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সাথে একমত না হওয়ায় ৫দফা দাবি জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর শাবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বরাবর স্মারকলিপি দেয় ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের (সম্যক ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা। এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এসকল দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আল্টিমেটামও দেয় তারা।

কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন জবাব না পাওয়ায় আল্টিমেটাম শেষে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তারা।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে, গত ২৩ ডিসেম্বর শাবিপ্রবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আর্থিক বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তসমূহ হল- ১) জানুয়ারী-জুন এবং জুলাই-ডিসেম্বর, এ দুই সেমিস্টারের বেতন (টিউশন ফি) এবং পরিবহন ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করা। ২) পরিক্ষার্থীগণ সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি পরীক্ষার পূর্বে পরিশোধে অপারাগ হলে তা পরবর্তিতে পরিশোধ করা যাবে। এজন্য কোন জরিমানা দিতে হবে না। ৩) কোর্স রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট হলের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে না।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তসমূহে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়িত হয়নি জানিয়ে আন্দোনল চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

জিএম ইমরান/ শাবিপ্রবি/ আইনিউজ

Green Tea
সর্বশেষ