সীমান্ত দাস, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ২২:২৩, ২ আগস্ট ২০২২
ওসমানী মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আন্দোলনে নেমেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা। হামলার ঘটনায় জড়িতদের এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে না পারায় আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা। ইমার্জেন্সি ও হৃদরোগ ছাড়া তারা সকল বিভাগে কার্যক্রম স্থগিত রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।
জানা যায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী (ইন্টার্ন চিকিৎসক) ইমন আহমদের সঙ্গে গত রবিবার দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের বাগবিতণ্ডা হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এ সময় ওই দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার রাত ৮টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র ইমন আহমদ (২৪) ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্র নাথের (২২) ওপর কলেজের পেছনে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সহপাঠীরা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
তারা হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ এবং রাত ১টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়াকে নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ করেন। প্রায় ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকেন পরিচালক।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এবং সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে আন্দোলনরতের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মেডিকেল প্রশাসনের মামলা করাসহ পাঁচ দাবি জানান। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে রাত ৩টার দিকে ধর্মঘট ও অবরোধ প্রত্যাহার করেন আন্দোলনরতা। তবে এসময় তারা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে মঙ্গলবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।
এদিকে, হামলার ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে কোতয়ালি থানা পুলিশ। সোমবার (১ আগস্ট) রাতে তাদের আটক করা হয়। আটক দুজন হলেন– নগরের মুন্সিপাড়ার মৃত রানা আহমদের ছেলে মাহিদ হাসান রাব্বী (২৭) এবং কাজলশাহ এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে এহসান আহমদ (২২)। এ দুজনই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত বলে জানা গেছে। এ দুজনের মধ্যে সাঈদ হাসান রাব্বি সিলেট মহানগরীর ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
হামলার ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, এ দুজন হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন না। ‘আই ওয়াশের’জন্য পুলিশ এ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এজাহারনামীয় কোনো আসামিকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাই তাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। চিকিৎসাসেবা না দেওয়া ছাড়াও আজ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
হামলার ঘটনায় ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ ৪ দফা দাবি হলো-
১) হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
২) ক্যাম্পাসের গেইট পুননির্মাণ করতে হবে, সন্ধ্যা ৭টার পর আইডি কার্ড ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
৩) ক্যাম্পাসে স্থায়ী ব্যবস্থাসহ পুলিশ ফাড়ি থাকতে হবে, ল্যাম্পপোস্টের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৪) ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ একেবারেই বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, এই ৪ দফা দাবি মেনে না নিলে ক্যাম্পাস অচল থাকবে, অনির্দিষ্টকালের জন্য সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আন্দোলনে উপস্থিত থাকা ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী শেখ সাদী এ বিষয়ে আইনিউজকে বলেন, এ ঘটনায় হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৪ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা সব বর্জন করেছি। নিরাপত্তা জোরদার না করা হলে কোনোভাবেই স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব না। আর প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি যেন দুষ্কৃতিকারীদের প্রত্যেককে আটক করে শাস্তির আওতায় আনা হয়। যাতে ভবিষ্যতে এধরনের জঘন্য কাজ করার সাহস ভবিষ্যতে কেউ না পায়।
শিক্ষার্থী শেখ সাদী আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিশ্রমী মেধাবি শিক্ষার্থীরা দিনরাত পড়াশুনা করে যোগ্যতা নিয়ে এই কলেজে এ পড়তে আসে। সামান্য নিরাপত্তার অভাবে যদি তাঁরা তৃতীয় শ্রেণীর বখাটেদের হাতে গুরুতর জখম হয়, এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা আর থাকতে পারেনা। এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।
এছাড়াও, ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহনির অভিযোগে ৮ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
পুলিশ জানায়, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির ঘটনায় ১ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে।
আইনিউজ/এসডি
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
রাস্তায় অবৈধভাবে সিএনজি-কার-মোটরসাইকেল পার্কিং করলেই আইনগত ব্যবস্থা | Moulvibazar | Eye News
বাংলাদেশের সাংস্কৃতি উৎসবে মুগ্ধ বিদেশিনী | Monipuri Ras Festival | Banagladeshi Culture | Eye News
সড়কের দু`পাশে ফুটেছে আগুন রাঙ্গা ফুল | নতুন দর্শনীয় স্থান | Beautiful places | Flowers || Eye News
- মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল ২০২৩
- এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ এর রেজাল্ট ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ | এসএসসি ফলাফল
- অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষা রুটিন ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ কবে হবে
- চবি ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩
- ‘বাঁচতে চাইলে পরীক্ষায় এ্যাটেন্ড কর’, ছাত্রীকে শাবি শিক্ষক
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩
- ওসমানী মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা
- স্বপ্ন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হওয়া
টিউশনী করে পরীক্ষা দিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেল সরকারি কলেজের সুমাইয়া