Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৭ ১৪৩২

পুলক পুরকায়স্থ

প্রকাশিত: ২১:১৪, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
আপডেট: ২১:২৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১

স্কুল খুললেও বিশেষায়িত শিশুদের তৈরি হয়েছে নানান প্রতিবন্ধকতা

দীর্ঘ বন্ধের পর খুলেছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিদ্যালয়মুখী হয়েও বিশেষায়িত শিশুদের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। তারা পারছেনা মনোযোগী হতে পাঠদান কার্যক্রমে। মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র বিশেষায়িত শিশুদের বিদ্যালয় ব্লুমিং রোজেস বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বিপাকে শিক্ষকরা।

এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা। তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে শরীরচর্চা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া করাতে হয়।

বিদ্যালয়মুখী হয়ে এই বিশেষায়িত শিশুদের শরীরে নানাবিধ সমস্যার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী অক্ষর চিনতে পারছেনা, বই দেখেও রিডিং পড়তে পারছেনা। কেউ কেউ নাচ-গান, ব্যায়ামও ভুলে গেছে। এমনকি অনেকেরই চিনতে সমস্যা হচ্ছে তাদের প্রিয় বন্ধুদের। এই শিক্ষার্থীদের নতুন করে শেখাতে হচ্ছে সবকিছু। তাদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে অভিভাবকসহ শিক্ষকদের।

স্কুলের শিক্ষক দেবস্মিতা দেবরায় বহ্নি জানান, অটিস্টিক শিশুরা একটু জেদি হয়ে গেছে। এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ওজনের সাথে মেদভুঁড়ি বাড়ার কারণে তারা নৃত্য, অভিনয়ে অনিহা প্রকাশ করছে।

শিক্ষক শাওন ভট্টাচার্য বলেন, 'এমনিতে তাদের পেছনে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, এখন তো সবকিছু ভুলে যাওয়ায় তাদের পিছনে আরো বেশি সময় দিতে হবে।'

বিশেষ শিক্ষাশ্রেণীর মহিমা খাতুন মিমের অভিভাবক আব্দুর রউফ বলেন, 'আমার মেয়ের মেজাজ পুরোপুরি খিটখিটে হয়েছে, ক্ষুধামন্দা দেখা দিয়েছে ও যোগব্যায়ামের প্রতি তার অনিহা সৃস্টি হয়েছে।'

বৃত্তিমূলক শিক্ষাশ্রেণীর শিক্ষার্থী আকরাম হোসেনের মা কমলা বেগম জানান, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চারা বাসায় থাকতে থাকতে একঘেয়েমিতে পরিপূর্ণ হয়েছে। অস্বাভাবিক ভাবে ওজন বেড়েছে।

আরেক বৃত্তিমূলক শিক্ষাশ্রেণীর শিক্ষার্থী সাহারা আক্তার নাদিয়ার মা রাবেয়া খাতুন জানান, সন্তান বাসায় বাবা-মার সাথে খারাপ ব্যবহার করা বেড়েছে। ব্যায়াম, খেলাধুলা না করায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তাদের মধ্যে সৃস্টি হয়েছে।

প্রধানশিক্ষক মল্লিকা গোস্বামী বলেন, 'বিশেষায়িত শিশুরা দীর্ঘদিন ঘরবন্দি জীবনযাপন করার করণে বাবা মার প্রতি অসঙ্গতি পূর্ণ আচরণ করছে। বন্ধুদের সাথে দেখা না হওয়ার ফলে আইকন্ট্রাক্ট লোপ পেয়েছে তাদের।'

২০০৬ সালে চারজন বিশেষশিশু নিয়ে নিজ বাসায় এর কার্যক্রম শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডি ডি রায় বাবলু। ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় জেলার একমাত্র বিশেষায়িত শিশুদের বিদ্যালয় ব্লুমিং রোজেস বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের। স্কুলটির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডি ডি রায় বাবলু জানান, প্রথমে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা ছিলো, ধীরে ধীরে সবার সহযোগিতায় এগিয়েছে। বর্তমানে একটি বাড়া বাসায় থাকলেও সরকারি ভাবে স্কুলের জন্য জায়গা দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদ ও সদর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শীঘ্রই স্কুল বিল্ডিং করে দেওয়া হবে এরকম আশ্বাস আমরা পেয়েছি।

উল্লেখ্য, বিশেষ এই শিশুদের 'মা ও শিশু, প্রাক-প্রাথমিক, বিশেষশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা' এই চার শ্রেণিতে বিশেষ পদ্ধতিতে পড়ানো হয়। আসন সংখ্যা ৫৫ জনের হলেও বর্তমানে ১১২ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যায়াম, নাচ-গান, চিত্রাঙ্কন ও খেলাধুলা করানো হয়।

আইনিউজ/পুলক পুরকায়স্থ/এসডি

সেন্ট্রাল রোডে জনদুর্ভোগ | শুরু হয়েছে কোটি টাকার কাজ

মৌলভীবাজারে আছিয়া বেগমের হাতে ১০০০ নিরাপদ শিশুর জন্ম

জলময়ূরের সাথে একদিন | বাইক্কা বিল | ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি

সাজেক: কখন-কীভাবে যাবেন, কী করবেন? জেনে নিন বিস্তারিত

হাইল হাওরের বাইক্কাবিলে পর্যটক আর পদ্মটুনার ভিডিও ভাইরাল

নীলাদ্রি লেক আমাদের এক টুকরো কাশ্মীর | পাখির চোখে নীলাদ্রি

Green Tea
সর্বশেষ