Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ০৬ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২২ ১৪৩২

রোকসানা আক্তার

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ১ জুলাই ২০২২
আপডেট: ১৯:২৪, ১ জুলাই ২০২২

‌‌‘শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান, একে অপরের প্রতিপক্ষ নয়’

রোকসানা আক্তার

রোকসানা আক্তার

আমরা শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। একে অপরের প্রতিপক্ষ নয়। দুই তিনটা ঘটনায় সারাদেশের শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিপক্ষ ভাবা যেন না হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ‘করোনাকালীন ঘরবন্দী সময়ের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের আচরণ পাল্টে গেছে অনেকেরই’। তাদেরকে সেই জায়গায় ফিরিয়ে আনতে আমাদেরকেই চেষ্টা করতে হবে।

শিক্ষকবৃন্দের এই কাজে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির পূর্ণ সহযোগিতা থাকতে হবে। সাফাই গেয়ে তাদের পক্ষ নিয়ে শিক্ষকবৃন্দের বিপক্ষে গেলে এই কাজ কখনওই সম্ভব হবে না।

আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, নৈতিক শিক্ষা কি বাতিল হয়ে যাবে? বাবা মা, মুরুব্বি, শিক্ষকদের কোনো দায়-দায়িত্ব থাকবে না? সরকার বা শিক্ষা অফিস এক্ষেত্রে একা কিছু করা সম্ভব না। পরিবার ও শিক্ষকবৃন্দেরই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এরা আসামি না, এরা আমাদের সন্তান।  নৈতিক শিক্ষার প্রথম স্থান পরিবার। তারপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদেরকেই ভূমিকা  পালন করতে হবে।

আসুন সবাই মিলে আমাদের সন্তানদের আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করি। তাদের অবনতি আমাদেরকেই পীড়া দিবে সবচেয়ে বেশি। গবেষণা বলছে শতকরা ২/৩ জন শিশুর (১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে বা মেয়ে) ব্যবহারগত বা অবাধ্যতা  রোগ আছে। যখন কোনো শিশু (১৮ বছরের কম ছেলে বা মেয়ে)  কথা শুনে না, সে প্রচুর তর্ক করে। বড়োদের সম্মান করে না বরং সে ভীষণ প্রতিশোধ পরায়ণ।  

আপনি ভাবছেন সে বেয়াদব। আসলেই কি তাই? হয়তো সে ভুগতে পারে ব্যবহারগত মানসিক রোগে। সে ভুগতে পারে অবাধ্যতা রোগে। যার আরেক নাম Oppositional Defiant Disorder/ ODD। ওডিডি আছে এবং থাকলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে আমরা অভিভাবকদের পরামর্শ দিতে পারি Child and adolescent mental health expert-এর পরামর্শ নেওয়ার জন্য। এইসব রোগে কোনো ওষুধ খেতে হয়না। উনারা ব্যবহার থেরাপি দিবেন।

যারা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন মানছে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে তাদেরকে ক্লাস করা থেকেও কিছু দিন বিরত রাখতে হবে। সারাদেশ বলে কথা! মনে করুন- একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা সবাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও সমাজ।

আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, নৈতিক শিক্ষা কি বাতিল হয়ে যাবে? বাবা মা, মুরুব্বি, শিক্ষকদের কোনো দায়-দায়িত্ব থাকবে না? সরকার বা শিক্ষা অফিস এক্ষেত্রে একা কিছু করা সম্ভব না। পরিবার ও শিক্ষকবৃন্দেরই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এরা আসামি না, এরা আমাদের সন্তান।  নৈতিক শিক্ষার প্রথম স্থান পরিবার। তারপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদেরকেই ভূমিকা  পালন করতে হবে।

প্রতি ক্লাসের একটা দুইটা দুষ্ট, অমনোযোগী ছাত্র-ছাত্রী একদিকে আর অন্যদিকে প্রতি ক্লাসে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকা শ'খানেক শিক্ষার্থী। আমাদের  মনযোগী ছাত্রছাত্রীদের জন্য হলেও আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। যাদের জন্য প্রতিষ্ঠানের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষক স্যারেরা ভূমিকা পালন করতে হবে।

এটা যদি উনি না করেন, সকল শিক্ষক মিলে উনাকে অনুরোধ করতে পারি। লেগে যান সেই অভিযানে। যাদের জন্য ক্লাস করতে পারছেন না এবং যাদের আচরণ গ্রহনযোগ্য নয়, তাদের লিস্ট করে প্রধান শিক্ষক স্যারের কাছে জমা দিন। আর যাঁরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে আছেন, সম্মানিত স্যারদের কাছে অনুরোধ - বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।

একবার দুইবার অভিভাবকদের ফোন করে এনে কথা বলুন। অভিভাবকদের সাথে কথা বলার সময় পরিচালনা কমিটির সবাইকে রাখুন। আসুন চেষ্টা শুরু করি সবাই মিলে। আর যেন কোনো শিক্ষককে ছাত্রের হাতে জীবন দিতে না হয়, গলায় জুতার মালা পরতে না হয় কিংবা জেলে ঢুকতে না হয়। আসুন সবাই মিলে এই পতন ঠেকানোর চেষ্টা করি।

রোকসানা আক্তার, শিক্ষক

আইনিউজ/এসকেএস

আইনিউজ ইউটিউব চ্যানেলে দেখুন দারুণ সব ভিডিও

নয় বছরের মেয়েটি কিভাবে নেভায় একের পর এক আগুন?

গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি

আলী আমজাদে রিইউনিয়ন

ঝড়ে মারা যায় পাখির ছানা, গাছে বাসা দিলেন পুলিশ অফিসার

ঐতিহ্যবাহি আদিবাসি সাঁওতাল নৃত্য

ঘোড়দৌড় : সিলেট বিভাগের সব তেজি ঘোড়া এসেছিল এই মাঠে

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়