Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৪ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ২৯ ১৪৩২

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৩৯, ১৬ জুন ২০২০
আপডেট: ০২:৩০, ১৬ জুন ২০২০

সুশান্তের মৃত্যু পরিকল্পিত খুন: কঙ্গনা রানাউত

বলিউডে স্বজনপ্রীতি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। সম্প্রতি সুশান্তের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলিউডের স্বজনপ্রীতি নীতিকেই দায়ী করেছেন তিনি।

তাঁর অভিযোগ, ‘কাই পো চে’, ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ এবং ‘ছিছোড়ে’র মতো ছবি করা সত্ত্বেও বলিউড সুশান্তকে স্বীকৃতি দেয়নি। স্বজনপ্রীতিকারীরা তাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনতে চাননি। সেই হতাশা থেকেই এমন চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন সুশান্ত, যা কার্যত খুনই।

রবিবার সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর থেকেই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন ভারতের নেটিকজনরা। মানসিক অবসাদ নিয়ে সমাজে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সরব হয়েছে এক পক্ষ। অন্য পক্ষ সরব হয়েছে গোটা ঘটনায় বলিউড ‘মাফিয়া’দের ভূমিকা নিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন কঙ্গনাও। সুশান্তের অকাল মৃত্যুর জন্য বলিউডের স্বজনপ্রীতি নীতিকেই দায়ী করেছেন তিনি।

নিজের ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রায় দু’মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করে কঙ্গনা বলেন, ‘‘সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যেও কেউ কেউ অন্য যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বলা হচ্ছে মানসিক ভাবে দুর্বল ব্যক্তিরাই অবসাদে ভোগেন এবং আত্মহত্যা করেন। কিন্তু যে ছেলে স্ট্যানফোর্ডের স্কলারশিপ পায়, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্স পরীক্ষায় যে র‌্যাঙ্ক করে, সেই ছেলের মাথা দুর্বল হয় কী করে?

মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বলিউডে টিকে থাকতে সুশান্ত রীতিমতো মানুষের কাছে হাতজোড় করছিলেন বলেও এ দিন দাবি করেন কঙ্গনা। সুশান্তের বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সুশান্তের শেষ কিছু পোস্ট দেখুন, ছেলেটা হাতজোড় করে লোকজনকে বলছিলেন, দয়া করে আমার ছবি দেখুন। আমার কোনও গডফাদার নেই। ছবি না চললে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বার করে দেওয়া হবে আমাকে। ইন্ডাস্ট্রি কেন আমাকে আপন করে নিচ্ছে না, বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এমন আক্ষেপও করেছেন সুশান্ত। বলেছেন, নিজেকে উচ্ছিষ্ট বলে মনে হয়। ওর মৃত্যুর সঙ্গে এই ঘটনার কি কোনও যোগ নেই?’’

কঙ্গনা আরও বলেন, ‘‘প্রথম ছবি কাই পো চে-র জন্য কোনও স্বীকৃতিই দেওয়া হয়নি ওকে।  এম এস ধোনি: দ্যআনটোল্ড স্টোরি, কেদারনাথ, ছিছোড়ের জন্যও কোনও স্বীকৃতি পাননি। গাল্লি বয়ের মতো খারাপ একটা ছবিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে, অথচ ছিছোড়ে যা কি না গত বছরের সেরা ছবি ছিল, তাকে কোনও স্বীকৃতিই দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর মতোই বাইরে থেকে এসে, শুধুমাত্র প্রতিভার জোরে  ইন্ডাস্ট্রিতে নজর কেড়েছিলেন সুশান্ত। বলিউডের প্রভাবশালীরা তা সহ্য করতে পারছিলেন না বলেও অভিযোগ করেন কঙ্গনা। তাঁর কথায়, ‘‘আপনাদের থেকে কিছু চাই না আমরা। আপনাদের ছবিতে সুযোগও চাই না, কিন্তু আমরা যা করছি, তার জন্য স্বীকৃতি পাব না কেন? আমি নিজে যে ছবি পরিচালনা করি, সেই সব ছবি সুপারহিট হওয়া সত্ত্বেও সেগুলিকে ফ্লপ বলে দেগে দেওয়া হয়। আমার বিরুদ্ধে ছ’-ছ’টি মামলা ঝুলছে কেন? কেন আমাকে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা হয়?’’

সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ ইচ্ছাকৃত ভাবে সুশান্ত মনরোগে ভুগছিলেন, তিনি মদে আসক্ত ছিলেন বলে খবর করছে বলেও অভিযোগ করেন কঙ্গনা। তিনি বলেন, ‘‘কিছু সাংবাদিক রয়েছেন যারা সুশান্তকে নিয়ে উল্টোপাল্টা লিখছেন। বলছেন, সুশান্ত মানসিক রোগী ছিলেন। মদ্যপানে আসক্তি ছিল তার। তিনি বাতিকগ্রস্ত ছিলেন।  সঞ্জয় দত্ত নেশা করলে ওরা কিন্তু বেশ আকর্ষণ বোধ করেন। ওরা আমাকেও মেসেজ করেন, বলেন, কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছো।  ভুল পদক্ষেপ কোরো না। কেন এ সব বলছেন আপনারা? কেন আত্মহত্যার চিন্তা আমার মাথায় ঢোকানোর চেষ্টা করছেন?’’

সুশান্ত আত্মহত্যা করেননি বরং তাঁকে কার্যত খুন করা হয়েছে বলেই এর পর দাবি করেন কঙ্গনা। তিনি বলেন, ‘‘এটা আত্মহত্যা, না খুন? ’’ অন্যের সমালোচনা কানে তোলাই কাল হয়েছে বলেও জানান তিনি। কঙ্গনা বলেন, ‘‘তার সম্পর্কে কে কী বলছে, তাতে গুরুত্ব দিয়েই ভুল করেছেন সুশান্ত।  ওদের কথা মানাই উচিত হয়নি ওর। মা কী বলেছিলেন তা মনে রাখেননি সুশান্ত। ওই সমস্ত লোক তো এটাই চায়। চায় ওরা একাই ইতিহাস লিখবে, আর তাতে সুশান্তকে দুর্বল বলে প্রতিপন্ন করবে। সত্যিটা কেউ বলবে না। আসলে কার ইতিহাস লেখা উচিত, তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে।”

রবিবার সকালে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।  জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তবে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। ঠিক কী কারণে সুশআন্ত আত্মঘাতী হন, তা জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ দিন বিকেলে মুম্বাইয়ে পরিবার-পরিজনদের উপস্থিতিতে সুশান্তের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

 

জেএ/আই নিউজ

Green Tea
বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ