Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৫, ১০ মে ২০২৩
আপডেট: ১৯:০৬, ১১ জুন ২০২৩

মে মাসে বাংলাদেশে আঘাত হানা সব ঘূর্ণিঝড়

ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ একটি গ্রামের দৃশ্য। ছবি- সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ একটি গ্রামের দৃশ্য। ছবি- সংগৃহীত

মে মাসকে বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলে থাকেন ঘূর্ণিঝড়, সিডর বা কালবৈশাখীর মাস। বাঙালীর জীবনে আঘান হেনেছে একাধিক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়, সিডরসহ নানা ঝড়-তুফান। এগুলোর বেশিরভাগই হয়েছে মে মাসে। বাংলাদেশের আবহাওয়াই এমন যে এখানে মে মাসে ঘূর্ণিঝড়, সিডর বা এ জাতীয় দুর্যোগ আঘান হানে প্রায় প্রতিবছরই। 

সেই ১৯৪১ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছর পর্যন্ত শুধুমাত্র মে মাসে আঘাত হানা সব ঘূর্ণিঝড়ের খবর নিয়ে আই নিউজের এই প্রতিবেদন। 

১৯৪১ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সাথে তীব্র স্রোত মেঘনা নদীর পূর্ব মোহনায় আঘাত হানে। কিন্তু সেই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির খবর অজানা। এরপরে ১৯৪৮ সালের ৭-১৯ মে, এই ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী মধ্যবর্তী ব-দ্বীপে। আনুমানিক ১২০০ অধিবাসী প্রাণ এবং ২০,০০০ গবাদি পশুও মারা যায়।

১৬-১৯ মে ১৯৫৮: ঘূর্ণিঝড়টি মেঘনা নদীর পূর্ব পশ্চিম মোহনার পূর্ব বরিশাল ও নোয়াখালী উপর আঘাত হানে। প্রাণ হারান ৮৭০ অধিবাসী। ১৪,৫০০ গবাদি পশু মারা যায় এবং ক্ষেতের ফসল বিনষ্ট হয়।

মে ১৯৬১: তীব্র ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ মারা যান সেই ঝড়ে। ২৫ হাজার গবাদিপশুও প্রাণ হারায়।

২৮-২৯ মে ১৯৬৩: তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত করে হয় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া এবং মহেশখালী উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ। চট্টগ্রামে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ছিল ৪.৩-৫.২ মিটার, বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০৩ কিলোমিটার এবং কক্সবাজারে ঘণ্টায় ১৬৪ কিমি। সেই ঝড়ে প্রাণ হারান ১১ হাজার ৫২০ জন।

১১-১২ মে ১৯৬৫: তীব্র ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বরিশাল ও বাকেরগঞ্জে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬২ কিমি এবং জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ছিল ৩.৭ মিটার। ওই ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু হয় ১৯ হাজার ২৭৯ জনের।

৯-১২ মে ১৯৭৫: একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ভোলা, কক্সবাজার ও খুলনাকে বিধ্বস্ত করে দেয়। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৬.৫ - ১১২.৬ কিমি। ওই ঝড়ে মারা যান ৫ জন।

২৪-২৫ মে ১৯৮৫: উরিরচরের ঘূর্ণিঝড় নামে পরিচিত তীব্র ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী এবং উপকূলীয় অঞ্চলে (সন্দ্বীপ হাতিয়া ও উড়ির চর) আঘাত হানে। চট্টগ্রামে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৪ কিমি, সন্দ্বীপে ১৪০ কিমি, কক্সবাজারে ১০০ কিমি এবং ঝড়ের কারণে জোয়ারের উচ্চতা ৩.০-৪.৬ মিটার ছিল। সেই ঝড়ে প্রাণ হারান ঊপকূলের ১১ হাজার ৬৯ জন বাসিন্দা। মারা যায় ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি গবাদিপশু। এছাড়া প্রায় ৯৫ হাজার ঘরবাড়ি এবং ৭৪ কিমি রাস্তা ও বাঁধ বিধ্বস্ত হয়।

ঘূর্ণিঝড় নার্গিস উত্তর ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হওয়া একটি ঘূর্ণিঝড়, যা ২০০৮ সালের ৩রা মে বার্মার উপকূলে আঘাত হানে।

২০০৯ সালের ২৫শে মে পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড় আইলা, যার বাতাসের গতিবেগ ছিল ৭০-৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

সেই ঘূর্ণিঝড়ে ভারতের ১৪৯ জন ও বাংলাদেশের ১৯৩ জনের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উপকূলে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

২০১৩ সালের ১৬ই মে নোয়াখালী-চট্টগ্রাম উপকূলে ঘূর্ণিঝড় 'মহাসেন' আঘাত হানে। তাতে প্রাণ হারান ১৭ জন। ২০১৬ সালের ২১শে মে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে ৪-৫ ফুট উচ্চতার জ্বলোচ্ছ্বাস তৈরি করে ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু'। সেই ঘূর্ণিঝড়ে লাখখানেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, চট্টগ্রামে মৃত্যু হয় ২৪ জনের।

২০১৭ সালের ৩০শে মে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'। ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে আঘাত হানে এটি। ২০১৯ সালের মে মাসে (২-৩রা মে) ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে আঘাত হানে। এর পরেরদিন, ফণী দুর্বল হয়ে ক্রান্তীয় ঝড় হিসেবে কলকাতা ও পরে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। ওই ঝড়ে প্রাণ হারান ৯ জন। ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

২০২০ সালের ২০শে মে সুপার সাইক্লোন আম্পান বাংলাদেশে আঘাত হানে। ২০২১ সালের ২৬শে মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানে। ২০২২ সালের মে মাসে আঘাত হানে, তবে অন্ধ্র প্রদেশে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। বাংলাদেশে সেই তুলনায় কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়