Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   ভাদ্র ২৮ ১৪৩২

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:১২, ১৩ জুন ২০২১
আপডেট: ০০:০৭, ১৪ জুন ২০২১

মাজারের টাকা সুরক্ষা দিচ্ছে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের আসামীদের: ব্যারিস্টার সুমন

লাইভে ব্যারিস্টার সুমন।

লাইভে ব্যারিস্টার সুমন।

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আলোচিত নোয়াগাঁও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের ৬ মৌজার লোকজন কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে পার্শ্ববর্তী পানিউমদা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ১৩টি ঘরবাড়িতে লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেইজে লাইভ করেন। লাইভ তুলে ধরেন অসহায় নির্যাতিতদের কথা। লাইভটি মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

দীর্ঘক্ষণ সরেজমিনে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে 'মাজারের টাকা সুরক্ষা দিচ্ছে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের আসামীদের!' ক্যাপশনে লাইভ শুরু করেন তিনি। 

লাইভে বলেন- 'এটা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া সাহেবের এলাকা, এটা দেওয়ান ফরিদ গাজী সাহেবের এলাকা। এই এলাকায়ই সাতাইহাল ৬ মৌজার লোকজন নোয়াগাঁও গ্রামের প্রায় ১৩ টা ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। ৬ মৌজার সব লোক এক সাথে এসে তাদের বাড়ি ঘর, ঘরের টিন, ধান পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে।'

তিনি বলেন 'আজকে যদি ধর্মের ভিত্তিতে কোন জায়গায় লুটপাট হতো তাহলে সারা পৃথিবী ব্যাপী চিৎকার শুরু হয়ে যেতো। আজকে এই মুসলমান ও নিরীহ মানুষ হওয়ায় এই ঘটনায় তেমন সাউন্ড হচ্ছে না।  এতো বড় অন্যায় এভাবে নীরবে নিভৃতে থাকবে তা মেনে নেয়া যায় না।'

নির্যাতিতদের সাথে কথা বলছেন ব্যারিস্টার সুমন। 

তিনি আরো বলেন- '৬ মৌজার কয়েক হাজার লোকজন এসে সব পুড়িয়ে দিছে এটার আসল কারণ হচ্ছে নেতৃত্বের। এটা নেতাদের কাহিনী ও চেয়ারম্যান হওয়ার ধান্ধা। একদিন আগে নোয়াগাঁওবাসী পুলিশকে জানিয়েছেন আশংকার কথা কিন্তু এখন পুলিশ বলছে তারা চেষ্টা করেছেন কিন্ত পারেন নাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় নিরীহ মানুষ এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হবেন তা হতে পারে না।'

ব্যারিস্টার সুমন আরো বলেন- 'আমি খবর পেয়েছি এসব ঘর যারা পুড়াইছে ৬ মৌজার লোকজন তারা নাকি তাদের গ্রামে অবস্থিত শাহ মুশকিল আহসান এর মাজারের টাকা দিয়া আগুন পুড়ানোর মামলা খেলতেছে। যে মাজারের টাকা ব্যায় হওয়ার কথা মানুষের উন্নয়নে, ইসলামের উন্নয়নে। সেই মাজারের টাকা তারা ব্যায় করতেছে মানুষ ঘরে আগুন দিয়ে মামলা পরিচালনার জন্য। এমনকি শুনতেছি বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকেও টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।'

নোয়াগাঁওয়ে হামলাকারীদের তাণ্ডব।

শেষে তিনি বলেন ' বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে আমি বিশ্বাস করি একটা মানুষও এভাবে নির্যাতনের বিচার পাবে না তা হতে পারে না।'

তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন- মাজারের টাকা যদি এভাবে মানুষকে নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে এখনই সময় আসছে প্রশাসন যাতে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়। 

এর পর তিনি ১৩টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ লুটপাটের প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবীতে নবীগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের খাগাউরা বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন অংশগ্রহন করে বক্তব্য প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মে সকালে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে নবীগঞ্জের গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল ৬ মৌজার কয়েক হাজার লাঠিয়াল বাহিনীর নারকীয় তাণ্ডবে পানিউম্দা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ১৩টি ঘরবাড়িতে হামলা,ভাংচুর, লুটপাট সহ লুটতরাজ কান্ড চালিয়ে, নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু, প্রায় ২ হাজার মন ধান সহ প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। তাদের কবল থেকে বাদ পড়েনি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফও, তারা পবিত্র কোরআনও জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়াও বাদ পড়েনি গাছপালা, নৌকা সহ ১৩টি পরিবারের সারা জীবনের কামাই রোজগার। তাদের এ নারকীয় তাণ্ডবের বিষয়ে আরও বিস্তারিত...

হামলাকারী অস্ত্রধারীরা লুটপাটের পর ১৩টি কৃষকের ঘরবাড়িতে  অগ্নিসংযোগ করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুঁড়িয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে। এ ঘটনায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে ঘটনার নায়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বহিস্কৃত সভাপতি ও গজনাইপুর ইউনিয়নের সাবেক বহিস্কৃত চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ ২ দিনের রিমান্ডে আনে। এ নিয়ে নারকীয় তাণ্ডবে মোট গ্রেফতার হয়েছেন ৯ জন। পলাতক আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা

আইনিউজ/মতিউর রহমান মুন্না/এসডি

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ