Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৪ জুন ২০২৫,   জ্যৈষ্ঠ ৩০ ১৪৩২

আই নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
আপডেট: ১৬:৩৫, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

সিলেট-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেনের নাম নিয়ে বিতর্ক!

সিলেটবাসীর অনেক দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে আগামী ১ ডিসেম্বর স্বল্পবিরতির আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে। তবে, ট্রেন চালুর আগেই ট্রেনের নাম নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। ট্রেনটি সুনামগঞ্জ জেলার কোনো উপজেলায় যাবে না জেনেও ওই এলাকার হাওরের নামে ট্রেনটির নামকরণ করায় সিলেটের নেটিজেনরা হতবাক। অনেকেই এটিকে হাস্যকর সিদ্ধান্ত বলেও অভিযোগ করছেন। 

নেটিজেনদের দাবি, নতুন ওই ট্রেনের নামকরণ করতে হবে 'হাকালুকি এক্সপ্রেস' নামে। সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ছয়টি উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত হাকালুকি হাওর। সদ্য যুক্ত হওয়া ট্রেনটি মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি হাওরের আওতাধীন কুলাউড়া উপজেলা ও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা হয়ে সিলেট শহরে যাবে। তাই ওই এলাকার হাকালুকি হাওরের নাম অনুসারে ‘হাকালুকি এক্সপ্রেস’ করার দাবি তাদের।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ঢাকা-সিলেট রুটে সদ্য যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস’। এই ট্রেনের বিশেষত্ব হল ট্রেনটি মাত্র দুইটি স্টেশনে বিরতি নেবে। সিলেট থকে ছেড়ে এসে শ্রীমঙ্গলে এবং ঢাকায় প্রবেশের সময় বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছাবে ট্রেনটি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের প্রথম তারিখ হতেই ট্রেনটি সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচল শুরু করবে।

পর্যটন লেখক কয়ছর আহমদ বলেন, এটা হাস্যকর একটা সিদ্ধান্ত। এই ট্রেন টাঙ্গুয়া বা ওই উপজেলার কোনো এলাকা দিয়ে যাতায়াত করবে না অথচ নাম টাঙ্গুয়া। এটার নাম হতে পারত হাকালুকি এক্সপ্রেস। যে অঞ্চলে ট্রেনটি চলবে এই হাকালুকি সেই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জলাভূমি। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই জলাভূমির নামে অন্তত ট্রেনটির নাম রাখা যেতো। এই টাঙ্গুয়া এক্সপ্রেস নাম রাখা আসলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উদাসীনতাকেই প্রকাশ করে। যা হাস্যকর। 

একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী ট্রেনের নামকরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তারা লিখেছেন, সুনামগঞ্জ জেলার ধারে কাছেও যাবে না যে ট্রেন সেই ট্রেনের নাম দিয়েছেন সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের নামে 'টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস'। অথচ ট্রেনটি প্রায় পুরো সিলেট অংশে বৃহত্তর হাকালুকি হাওরের উপর দিয়েই যাতায়াত করবে। সে অনুযায়ী নামকরণটা 'হাকালুকি এক্সপ্রেস' হলে মানানসই হতো।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর ও এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি হাকালুকি হাওর। সিলেট-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন হাকালুকি হাওরের বুক দিয়ে চলাচল করবে। ট্রেনটি সুনামগঞ্জ জেলার ধারে কাছেও যাবে না। কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলার হাওরের নামে ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে। নতুন ট্রেনটির 'হাকালুকি এক্সপ্রেস' নামকরণ করা হোক।

তিনি আরও বলেন, এ দাবি শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাবাসীর নয়, এ দাবি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলাবাসীর।

তবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন কেউ কেউ। সংস্কৃতি বিষয়ক লেখক বুলবুল আনাম মনে করেন, ট্রেনের নাম কী তা নিয়ে এতো হৈচৈয়ের কিছু দেখি না। বরং, সিলেট-ঢাকা রুটে আরেকটি ট্রেন সংযুক্ত হয়েছে এই বিষয়টিকে আমাদের অভিবাদন জানানো উচিত। হাকালুকি, টাঙ্গুয়া এই দুটিই সিলেটের ঐতিহ্য। 

সংগীতশিল্পী সেলিম চৌধুরী বলেন, নামের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সার্ভিস। সিলেটে এখন সবথেকে জরুরি ডাবল লাইন ট্রেন চালু করা। অন্তত সিলেট পর্যন্ত ডাবল লাইন ট্রেন চালু হলে এ অঞ্চলে ট্রেনের আরও সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ। ট্রেনের নাম নিয়ে বিতর্ক করার চাইতে এই রুটে রেল সেবার অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত বলে মনে করি।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়