Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০২ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩২

সাজু মারছিয়াং

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২ মে ২০২১
আপডেট: ১২:২৭, ২ মে ২০২১

শ্রীমঙ্গলে নার্সারি করে পিতা-পুত্রের সাফল্য, মাসিক আয় ৬০ হাজার টাকা

নার্সারিতে বাবা-ছেলে

নার্সারিতে বাবা-ছেলে

প্রায় ২১ বছর আগে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করা জায়গায় শুরু করা নার্সারিটির পরিধি ও আয় বেড়েছে অনেক। ফলজ, বনজ, ঔষধী কিংবা সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্য যে গাছ প্রয়োজন সবই রয়েছে এখানে। একটি নার্সারি থেকে এখন ৫টি নার্সারি তাদের। এই নার্সারি দিয়েই ভাগ্য বদলে ফেলেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জননী নার্সরির সত্বাধিকারী বিল্লাল সিকদার ও তার ছেলে মো. আল-আমিন।

প্রতিমাসে গড়ে আড়াই লক্ষ টাকার গাছের চারা ও বীজ বিক্রয় করে তাদের এখন মাসিক আয় ৬০ হাজার টাকা। শখের বশে তৈরী করা এই নার্সারিটি বাণিজ্যিকভাবে নিয়ে গাছের চারা তৈরিকেই এখন জীবন-জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা। বিল্লাল সিকদারের স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে ৬ সদস্যের পরিবারে নার্সারির আয় দিয়েই চলছে।

জননী নার্সারির চারা ও বীজের চাহিদা নিজ এলাকা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সুনাম অর্জন করছে। তাদের এখানে এসে অনেকেই নার্সারি তৈরীর প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। শ্রীমঙ্গল পৌর শহরতলীর রেলগেইট, শ্যামলী, ও বিরাইমপুরে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে তাদের ৫টি নার্সারিতে গাছের চারা তৈরীর কাজে এখন নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ২০ জন শ্রমিক। বাবা ছেলের সাথে তারাও এই নাসার্রির আয় থেকেই সংসারের খরচ জোগাচ্ছেন।

কথা হয় নাসার্রির পরিচালক মো. আল-আমিনের সাথে। জননী নার্সারির পরিচালকের পাশপাশি তিনি আনসার ভিডিপির শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের দলনেতা হিসেবেও রয়েছেন।

আইনিউজের এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, তার বাবা বিল্লাল সিকদার বন বিভাগের লোকজনের সাথে চলাফেরা করতেন। বন বিভাগের লোকজনের সাথে থাকতে থাকতে গাছের প্রতি তার একটা ভালোবাসা জন্ম নেয়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের দিকে শখের বসে সামান্য জায়গা ভাড়া নিয়ে খুব ছোট পরিসরে একটি নার্সারি করেন তিনি। তখন তার মূলধন ছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়েই বীজ ও গাছ কিনে নার্সারি করেন। তার কিছুদিন পরই সেই জায়গা ছেড়ে দিতে হয় তাকে। অনেক লোকসান হয় তার। এভাবে আজ এই জায়গায়, কাল অন্য জায়গায় করে করে বেশ কয়েকটি জায়গা পরিবর্তন করতে হয় তাকে। টাকা পয়সা জোগাড় করতে না পাড়ায় নির্দিষ্ট করে কোন জায়গা পাচ্ছিলেন না তিনি। পরবর্তীতে একটি জায়গা দীর্ঘ মেয়াদী লিজ নিয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর বাবার সাথে ছেলে আলামিন যুক্ত হয়। বাবা-ছেলে মিলে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে নার্সারি করতে থাকেন। এখন প্রতিমাসে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার গাছের চারা ও বীজ বিক্রয় করে সব খরচ মিটিয়ে প্রায় ৬০ হাজার টাকা আয় হয়।

মো. আল-আমিন বলেন, এখন মানুষ খুব সৌখিন। বাড়িতে সৌন্দর্যবধনের জন্য অনেকেই গাছ নেন। তাদের এই নাসার্রি থেকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ দেশের বন বিভাগের জন্য বন বিভাগের লোকেরা চারা সংগ্রহ করেন। তাছাড়া সৌখিন মানুষরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করে বীজ ও চারা সংগ্রহ করেন। তারা ভারত, চীন ইত্যাদি দেশ থেকে গাছের বীজ কিনে এনে বিদেশী গাছের চারাও এখন তৈরী করছেন।

আল-আমিন আরো বলেন, আগের থেকে এখন গাছের চারা ও বীজের চাহিদা বাড়লেও নার্সারীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। নার্সারি ব্যবসা খুবই লাভজনক হলেও ভালো প্রশিক্ষণ না থাকলে এই ব্যবসায় আসা ঠিক নয়। নাসার্রিতে প্রচুর সময় দিতে হয়। আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে চারা বাঁচিয়ে রাখতে হয়। একটি বীজ থেকে চারা তৈরীতে মাতৃস্নেহ দিতে হয়। যারা প্রচুর শ্রম ও ধৈর্য্য ধারণের ক্ষমতা রাখেন তারা এই ব্যবসায় আসলে লাভবান হবেন।

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়