Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১০ ১৪৩২

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ১৩ জুন ২০২১
আপডেট: ০০:০২, ১৪ জুন ২০২১

পরকীয়ার জেরেই স্ত্রী-পুত্রসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেন সৌমেন

এএসআই সৌমেন রায়

এএসআই সৌমেন রায়

স্ত্রী আসমা খাতুনের পরকীয়ার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন এএসআই সৌমেন রায়। রিভলবারসহ আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এমন দাবিই করেছেন।

রোববার (১৩ জুন) বিকেলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।

এর আগে রোববার সকাল ১১ টায় কুষ্টিয়ার কাস্টম মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- শাকিল (২৮), আসমা (২৫) এবং আসমার শিশুসন্তান রবিন (৫)।

হত্যাকাণ্ডের পর জনতা ঘাতক এএসআই সৌমেন রায়কে রিভলভারসহ আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। বিকেলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত তিনজনের মরদেহ নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন জানিয়েছেন, আসমা খাতুনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরেই তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এ ব্যাপারে এখনো তদন্ত চলছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন জানান, আসমা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার প্রথম স্ত্রী এবং সন্তান অন্যত্র থাকেন। কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন- জবাবে সৌমেন জানান, বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে আসমার অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

নিহত আসমা কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া গ্রামের আমির আলী মেয়ে। তার বিষয়ে বাগুলাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বক্কর জানান, ১২-১৩ বছর আগে কুমারখালী উপজেলার ভড়ুয়াপাড়া গ্রামের ওয়াজ আলীর ছেলে সুজনের সঙ্গে আসমা খাতুনের প্রথম বিয়ে হয়। সেখানে তার একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতেই কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের সরোয়ারের ছেলে রুবেলের সঙ্গে আসমার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরকীয়ার এই সম্পর্কের জেরে প্রথম স্বামী সুজনকে ডিভোর্স দিয়ে রুবেলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আসমা খাতুন। দ্বিতীয় স্বামীর সংসারে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন আসমা। যার নাম রবিন।

তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় স্বামী রুবেলের সঙ্গেও বেশিদিন সংসার করা হয়নি আসমা খাতুনের। বনিবনা না হওয়ায় কয়েক বছর সংসার করার পরই রুবেলকে ডিভোর্স দেন তিনি।

অন্যদিকে সৌমেন রায়ের বাড়ি মাগুরার শালিকা উপজেলার কসবা গ্রামে। তিনি এএসআই হিসেবে ২০১৬ সালের ১৩ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগদান করেন। এরপর কোনো একটি মামলার তদন্তে আসমার বাড়িতে যান তিনি। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় এবং এক পর্যায়ে তাদের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সৌমেন রায়ের সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারটি স্থানীয়দের কাছে স্পষ্ট না হলেও তাদের চলাফেরা ও যোগাযোগের বিষয়টি অনেকেই জানতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌমেনের সঙ্গে বিয়ের পর শাকিলের সঙ্গে আসমা পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। নিহত শাকিল চাপড়া ইউনিয়নের সাওতা কারিগর পাড়ার মজিবারের ছেলে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় থানায় এখনো মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

আইনিউজ/এসডিপি 

সংশ্লিষ্ট খবর

কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে শিশুসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা

কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা: এএসআই আটক

প্রকাশ্যে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা: এএসআই সৌমেন বরখাস্ত

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ