Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ২১ ১৪৩২

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২০ জুলাই ২০২০

টিভি-পানির পাম্প চলবে সাইকেলের চাকার বিদ্যুতে!

করোনাভাইরাসের কারণে চার মাসের বেশি সময় ধরে বাড়িতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানা মজুমদার। এই সময়ে বসে না থেকে নেমে পড়েন সাইকেলের এক চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্নে।

বাইসাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হওয়ার কথা নতুন নয়। তবে স্বল্প খরচে বাইসাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে উৎপন্ন বিদ্যুৎ থেকে বৈদ্যুতিক লাইট, ফ্যান, টিভি এমনকি পানি তোলার পাম্প চলবে বলে দাবি করেছেন রানা মজুমদার। সাইকেলের চাকার গতিশক্তির মাধ্যমে চুম্বকক্ষেত্র থেকে এমনি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার দাবি করেছেন।

রানা জানান, সাইকেলের চাকা থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার যন্ত্র অনেক আগে আবিষ্কৃত হয়েছে। তবে সেগুলো থেকে আমার যন্ত্রটি ভিন্ন। এখানে কম খরচে অধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। আবিষ্কৃত সাইকেল ডায়নামো থেকে শতভাগ আউটপুট পাওয়া যাবে। যা ব্যবহার করে লাইট, ফ্যান, টিভি এমনকি পানি উত্তোলনের পাম্প মেশিন চালানো সম্ভব। তবে এ যন্ত্রের সক্ষমতা নির্ভর করবে ব্যাটারির শক্তির ওপর। আমরা যদি বেশি ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহার করি তা হলে বেশি সময় শক্তি যোগান দিবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। লোডশেডিং হলে সাইকেল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের মাধ্যমে একটি পরিবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে দাবি এই তরুণ শিক্ষার্থীর। এছাড়া যেসব এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি সেখানে এই সাইকেল ডায়নামো ব্যবহার করা যাবে বলেও জানান তিনি। 

রানা মজুমদারের জন্ম কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলীতে। বাবা সেলিম মজুমদার ও মা জফুরা বেগমের আট ছেলে-মেয়ের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। অধ্যয়ন করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে।

রানা মজুমদার ছোট থেকেই তড়িৎ বা বৈদ্যুতিক বিষয়গুলোর প্রতি দুর্বল ছিলেন। তিনি বলেন, ছোটবেলায় যখন মোটর দিয়ে পাখা বানাতাম তখন একটা ভাবনা মাথায় আসতো। ‘কারেন্ট দিলে মোটর ঘুরে, কিন্তু আমরা যদি মোটর ঘুরাই তাহলে কী কারেন্ট তৈরি হবে?’ সেই চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে পারলাম সাইকেল ডায়নামো আবিষ্কার করে।

তবে রানা মজুমদারের পারিবারিক আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আপাতত বড় পরিসরে এ যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বড় পরিসরে সাইকেল ডায়নামো উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন বলে জানান তিনি। যা পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে দাবি তার।

রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীর ডায়নামো আবিষ্কারের কথা শুনে খুব আনন্দিত। বিভাগ থেকে আমরা সবসময় তাকে সহায়তা করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, বন্ধের সময়টাতে অনেক শিক্ষার্থী যেখানে বসে থেকে দিন পার করছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী সাইকেল ডায়নামো আবিষ্কার করেছে। তা আমাদের জন্য গর্বের।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সর্বশেষ