Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৩ ১৪৩২

আহমদ সিরাজ

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আপডেট: ২৩:২৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

প্রসঙ্গ শিক্ষা: বিক্ষিপ্ত ভাবনা

আহমেদ সিরাজ

আহমেদ সিরাজ

দুই খন্ডে বিভক্ত ভারতবর্ষে পাকিস্তানের জন্মের দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানী শাসনের নাগপাশে থাকতে থাকতে বহু লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পৃথিবীর ইতিহাসে একটা অনন্য ঘটনা। পাকিস্তান রাষ্ট্রের  জন্মের পর থেকে বাঙালিদের সঙ্গে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর দ্বন্দ অবিশ্বাস যেমন শুরু হয়, তেমনি এদেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ড জন মানুষকে অতিষ্ঠ ও ক্ষুব্ধ করে তুলে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে শাসক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলাতে চায়, তখনই দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। বুকের রক্ত দিয়ে ভাষার দাবীকে রক্ষা করে একটা বিশাল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভাষাতাত্তিক জাতীয়তাবাদকে বহন করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে যা একটা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত নজির, যার দ্বিতীয় উদাহরণ সহজে মিলে না। এই আন্দোলনের চেতনার সারাৎসার হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান-যে সংবিধানের মূলনীতি হচ্ছে চারটি স্তম্ভ অর্থাৎ গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র মানুষের সামগ্রিক জীবন ও জীবিকায় এই সংবিধানই আলোকবির্তকা হিসাবে নির্দেশিত হয়ে নাগরিকের জীবন পরিচালিত করবে। শিক্ষা তার একটা অংশ।

ঔপনিবেশিক পাকিস্তান আমলে সভ্য ইংরেজ জাতি তাদের অনুগত বাহিনী তৈরী করার জন্য ইংরেজী শিক্ষার প্রবর্তন, রাজনীতির কুট চাল হিসাবে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের খেলায় সাম্প্রদায়িক ভেদ বুদ্ধি তৈরী করে এবং তার পরিণতি হিসাবে ভারত পাকিস্তানের আড়াআড়ি জন্ম দিয়েছে। পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোয় ব্রিট্রিশ নীতির উত্তরাধিকার বহন করে ঠিকে থাকার জন্য ষড়যন্ত্রের বিচিত্র খেলায় যেমন মত্ত থেকেছে তেমনি আমাদের শিক্ষা সংস্কৃতি ঐতিহ্য ইতিহাসকে বিনষ্ট করতে সচেষ্ট হয়েছে। কিন্তু তারা বাঙালির ভাষা সংস্কৃতির প্রবল ঐক্য শক্তির কাছে পরাভূত হয়েছে। শিক্ষায় সার্বজনীনতা বিবেচনা করে ১৯৭২ সালের ২৬ শে জুলাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দেশের শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য ড. কুদরত এ খুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষক কমিটি গঠিত হয়। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গণমুখীন ধারা প্রবর্তনের মধ্যে একটা আমূল পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যে স্থির হয়। শিক্ষার এমন মর্মবাণীর আলোকেই বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭৩ সালের ৩৬ হাজার ১৬৫ টি প্রাথমকি বিদ্যালয় সরকারী করনের ঘোষণা প্রদান করেন। যা নজিরবিহীন সাহসী পদক্ষেপ পরবর্তী পর্যায়ে বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারী করণের ঘোষনা করেন। ২০১০ সালে কুদরত এ খুদা কমিশনের আলোকে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত করার সুপারিশ থাকলেও তাতে অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে গেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যামিক শিক্ষায় বিনামূল্যে বই বিতরণ ও উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হলেও এগুলো সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার অভাব পরিললিক্ষত হয়।

খুদা কমিশনের প্রস্তাবনা ছিল, দেশের জনগণকে জাতীয় কর্ম ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখার যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে সার্বজনীন বাধ্যতামূলক বুনিয়াদি শিক্ষা প্রয়োজন, এজন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত গণ্য করা। প্রস্তাবনায় আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল প্রাথমিক স্তরে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা বাংলা ছাড়া শিক্ষার্থীদের উপর অন্য ভাষায় চাপসৃষ্টি করা উচিত হবে না। তারা ইংরেজী ও ধর্মীয় শিক্ষা ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে শিক্ষাসুচীতে অর্ন্তভূক্ত করার প্রস্তাব করেন। বাস্তবে কিন্তু ভিন্ন চিত্রই লক্ষ করা গেছে। ধর্মীয় ইংরেজী এখন তলা থেকে উপর পর্যন্ত চালু আছে। সরকারী স্কুলের বাইরে যে সমস্ত স্কুল আছে তাদের সিলেবাসের আওতায় আরো বেশী মাত্রায় অর্ন্তভূক্তি আছে এসব কিন্ডারগার্টেন বেষ্টিত স্কুল সমূহে বিচিত্র রঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কমিশনের প্রস্তাবনায় মূলত আট বছর মেয়াদী একমূখী প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনের কথা থাকলেও এখন ত্রিমুখী ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। বলা চলে এর বাইরেও বহুমূখী শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে যার অনেক হিসাব হয়তো নজরে নেই। শিক্ষা অনেকটা যেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতির কলোছায়ায় বাজারদরের মতো হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর সকল দেশের নাগরিক গঠনের প্রধান ভিত্তি বা সোপান তাকে সামান্য মাত্র অবহেলা করলে পরিণতি ভয়াবহ হয়। অনেক কিছুতে আপোষ করা গেলেও তাতে কোন ছাড় দিলে নীতি আদর্শ হাতছাড়া হয়ে পড়তে পারে। সবকিছু বাজারে কিনতে পাওয়া গেলেও শিক্ষা বাজার দরে বিক্রি হয় না।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি উক্তি বিশেষ প্রনিধানযোগ্য বলে মনে হয়। রবীন্দ্রনাথ মাতৃভাষার মূল ভিত্তি গড়ে উঠাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি দৌহিত্র নীতীন্দ্রনাথের শিক্ষা সম্পর্কে খবর নিতে গিয়ে জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপ্যাধায়কে তার লেখার চিঠির উক্তি হচ্ছে “এই কাঁচা বয়সেই ভাষাটা জীবনের সঙ্গে গভীর করে মেলে আর  ভাষার সঙ্গে সঙ্গে দেশের যথার্থ প্রাণ-প্রাণের সঙ্গে যুক্ত হয়। আমি প্রায় ষোল বছর বয়স পর্যন্ত ইংরেজী না শিখে বাংলা শিখেছিলুম।”  রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা, প্রবোধ চন্দ্র সেন, পৃষ্ঠা-১৩৩

তাতে রবীন্দ্রনাথের ইংরেজী ভাষা কম শেখা হয়নি। তিনি নিজ মাতৃভাষাকে ভালোভাবে যতেœর সঙ্গে শিখেছিলেন বলে ইংরেজী তার দখলে ছিল। তবে মাতৃভাষা প্রাণময় ভিত্তি ছিল। রবীন্দ্রনাথের জন্মের একশত বছর আগে ইংরেজ শাসনে, তাদের দুর্দন্ড প্রতাপের সময় রবীন্দ্রনাথ এ উক্তি করেছেন- তা আজও প্রাসঙ্গিক। স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা রাষ্ট্রভাষা ও বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের পরও সত্যিকার অর্থে সর্বক্ষেত্রে ভাষার প্রয়োগ হয়ে উঠেনি। ইংরেজী, আরবী, সহ নানা ভাষার প্রভাব ও স্বভাবের কাছে বাংলা ভাষার স্বকীয় অবস্থান দূর্বল বাংলাভাষার আন্তর্জাতিক অবস্থান অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সকল মাতৃভাষার মর্যাদা ও নিজ নিজ ভাষার শিক্ষার প্রাথমিক ভিত্তিকে বিবেচনায় নিতে তাগিদ প্রদান করে।

বাংলাদেশে যে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে তাতে অগ্রসর অসাম্প্রদায়িক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার সমস্ত রূপরেখা থাকার পরও বঙ্গবন্ধুর নৃসংশ মৃত্যুর পর জাতির মুক্তি সংগ্রামের মূল ধারায় দেশ পরিচালনায় ঘাটতি কেবল নয় মূল নীতির অনেক কিছুই অবিকল মাত্রায় থাকে নি। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরী হয়েছে। শিক্ষার অগ্রগতির নামে পরিমাণগত ছাত্র পরীক্ষা পাশ বাড়াতে ঘরে ঘরে উচ্চ শিক্ষিতের মাত্রা যেমন বাড়ছে তেমনি ঘরে আই.এ, বি.এ, এম.এ, অনার্স পাশ বেকার ছাত্রের স্তুপ তৈরী হচ্ছে। শিক্ষায় বেকারত্ব, হতাশা, স্বদেশে পলাতক দেহ-মন তৈরী করছি। শিক্ষিতের চাকরির ক্ষেত্রেও চলতি বাস্তবতার নিকৃষ্ট অভিজ্ঞতায় আস্থা ও বিশ্বাসহীনতার কালোমেঘ তৈরী করছে তাতে প্রজন্মের সামনে কোন ভবিষ্যত আছে তা ভাবতে পারছে না।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তব রূপায়ন ও চোখের সামনে যখন থাকছে না, তখন শিক্ষার ভেতর বাইর নাজুক তা বুঝতে কষ্ট হয় না, ধর্মবাদীর চাপের কাছে সরকার সিলেবাসের পাঠ্যসূচীর তালিকা থেকে দেশপ্রেমিক কবি সাহিত্যিকদের লেখা পর্যন্ত পাল্টানোর ঘটনা ঘটে। যা গুরতর উদ্বেগ ও আতংকের। মূলত এসব কর্মকান্ডের মূল হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল ধারার প্রয়োগ বাস্তবায়ন না থাকা। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম যুক্ত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্তম্ভগুলো সাবলীল বা শক্তিশালী অবস্থান না থাকায় জনজীবনে এর অশুভ প্রভাব ক্রমশ গভীর হয়ে উঠছে। তা না হলে স্বাধীনতার পঁঞ্চাশ বছরে ও বঙ্গবন্ধুর জন্মের শতবার্ষিকীতে দেশের ভেতরে সাম্প্রদায়িক শক্তির যে হিং¯্র উন্মাদনা ঘটে তা অতীতের খারাপ সময়কে হার মানায় যেন, ফলে সামাজিক মূল্যবোধ নীতি, নৈতিকতা একেবারে তলানীতে গিয়ে পৌঁছেছে। শিক্ষায় তার প্রভাব ভয়াবহভাবে পড়ছে। শিক্ষায় এতই বাণিজ্যিক হয়ে উঠেছে, শিক্ষায় ভর্তি বাণিজ্য থেকে চাকুরি বাণিজ্য খোলাসা হয়ে উঠেছে। জীবনে ন্যায় নীতি নিয়মের পরাজয়ের অবস্থায় সহনীয় হতে হতে সাধারণ্যে এমন ভাবনা তৈরী হয়ে উঠেছে এসব বুঝি ভাগ্য না নিয়তির অংশ।

রাষ্ট্র ও সমাজ এসবে একটা স্থিতিশীলতা খোঁজে অগ্রগতির হিসাব বুঝে নিচ্ছে। তা যে ভেতরে আগ্নেয়গিরি লাভা বহন করছে তা বিবেচনায় না থাকায় আমাদের উপর থেকে তলা পর্যন্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অভাব বা বোধহীনতা অনুমানের বাইরে জঞ্জাল তৈরী করছে। সরকার ২০১০ সালে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে কুদরত এ খুদার আলোকে শিক্ষা কমিশন কমিটি গঠন করে যাত্রা শুরু করলেও তার বাস্তবায়ন বা রূপায়নে ঘাটতি থেকে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক পাঠ অনুপাত ৩০ জনে ১, ৪০ জনে ১ জন শিক্ষক থাকার বিধান রাখা হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেণি কক্ষ সমূহ জনসভার মতো। প্রাথমিক ও অনুপাত ঠিক নেই। এছাড়া নোট, গাইড বইয়ের বিচিত্র সমাহারে বোর্ডের মূল বই অপাংক্তেয় হয়ে পড়েছে। এসব ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ না ঘটার ফলে শিক্ষা অনেকখানী দোকানধারির মতো। পড়ালেখার ধরন ধারনে পরিবর্তন ঘটার কথা থাকলেও সেই পুরোনো আমলের ধ্যান ধারণাই অনেকখানি বিদ্যমান। বিশিষ্ট শিক্ষা চিন্তক পাওলোফেরী শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্দশা লক্ষ্য করে বলেছিলেন শিক্ষা ব্যাংকিং ব্যবস্থার মতো। অর্থাৎ শিক্ষকরা হচ্ছেন সকল জ্ঞানের ভান্ডার আর ছাত্ররা গ্রহীতা। আমরা এসব ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেলেও ব্যবস্থার কারণে ছাত্র শিক্ষকদের পাঠদানের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অথচ কে না জানে সমাজে অনেক কিছুই পচে গেলেও শিক্ষা হচ্ছে নীতি আদর্শের জায়গা। চোর, ডাকাত, সাধু থেকে সকলেই এ জায়গা সম্মানের চোখে দেখে থাকে। শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় যে কমিটি গঠিত হয়ে থাকে তা বিশেষত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্টানের ক্ষেত্রেও সমস্যা লক্ষণীয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কমিটি গঠনে শিক্ষাস্বার্থ ব্যক্তিবর্গের চাইতে ব্যক্তিস্বার্থ ব্যক্তিবর্গের আগ্রহ ও প্রাধান্য বেশী। এসব কমিটি গঠনেও প্রভাবক শক্তির অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের ফলে অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরা নাজুক অবস্থায় থাকেন। এখানে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাবনা রাখা যেতে পারে। 

  • প্রকৃতি ও পরিবেশ নির্ভর করে ছাত্র-ছাত্রীদের শুরু থেকে গড়ে তোলা, 
  • প্রাথমিকের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সামঞ্জস্যপূর্ণ অবকাঠামো হিসাবে গড়ে তোলা। 
  • স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যে উপবৃত্তি দেওয়া হয় তা যাতে ছাত্রের পাঠ সহায়তায় লাগে, নজরদারি রাখা। পিতৃতান্ত্রিকতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে উপবৃত্তি পিতার খেয়াল খুশি মতো ব্যয় হয়ে থাকে বলে অনুমিত। 
  • ছাত্রদের বছরে অন্তত একবার দর্শনীয় স্থান   অবলোকনে শিক্ষণীয় করে তোলা। 
  • প্রয়োজনীয় উপবৃত্তি দেওয়া না গেলে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা, তাতে উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ ঘটবে। 
  • বিদ্যালয়ে সৃজনশীল পাঠের নামে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে কবিতা আবৃত্তি মুখস্ত কমে গেছে। কবিতা মুখস্ত আবৃত্তি রপ্ত করা। 
  • স্কুলে গান নৃত্য খেলাধুলার নিয়মিত ব্যবস্থা রাখা। 
  • স্কুলে দেয়াল পত্রিকা লিখন চর্চা নিয়মিত রাখা। 
  • ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে মহৎ মানুষের জীবনী পাঠে অভ্যস্থ করে তোলা। 
  • ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে ইতিহাস ঐতিহ্যপ্রীতি ও সংস্কৃতপ্রিীতি গড়ে তোলা। 
  • ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দেশপ্রেম জাগরিত রাখা। 
  • ছাত্র-ছাত্রীদের শুরু থেকে অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসাবে গড়ে তোলা।
  • ছাত্রদরে মাঝে প্রকৃতি ও আকাশ দখোর অভ্যাস গড়ে তোলা।

 অবশেষে করোনকালীন টানা প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থেকেছে। এই শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস এর উদ্যোগ নেওয়া হলে সামগ্রিম ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ঘটেনি কিংবা এমন কোন বিকল্প পথ নেওয়া যায় নি যাতে ছাত্রদের পড়ালেখায় যুক্ত রাখা নিশ্চিত হয়। এ নিয়ে ঠিকমতো ভাবা হয় নি। যারা অবস্থা সম্পন্ন ঘরের সন্তান স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে আমাদের মাঝে লেসন আছে কমবয়সী সন্তানদের হাতে মোবাইল দিতে নেই। কিন্তু আমরা তাদের হাতে স্মার্ট ফোন ব্যবহারে উদ্ধুব্ধ করেছি। বিদ্যমানতার এটি একটা ট্রাজিক অবস্থান।উপরে ও তলে পড়াশোনার পরিণতি হিসাবে ‘এ্যাসাইনমেন্ট’ চালু করা হয়েছে। ‘এ্যাসাইনমেন্ট’ শব্দটির তাৎপর্য উচ্চ মাত্রা বহন করলেও বিদ্যমানতা আমাদের টেনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। এই অবস্থা ভালো কি মন্দ তা নয়, তাতে কী পরিমাণ ফটোকপির ধুম পড়েছে, দোকানে ছাত্রের ভিড় তৈরী হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। গাইড বই, অনলাইন, অর্থাৎ ডিজিটাল মাধ্যমে এর উত্তর রাখা হয়েছে। এ্যাসাইনমেন্ট তৈরী ব্যবস্থা থেকে তৈরী হয়েছে। এ্যাসাইনমেন্ট এর এমন ব্যবহার নজির হয়ে থাকবে। মূল বইয়ের যোগসূত্রের কোন প্রয়োজন পড়ে নি। এমন অবস্থা থেকে শিক্ষার গুণগত মাত্রায় যেতে হলে শিক্ষার স্বচ্ছ আয়নায় নিজের মুখটি দেখে নিতে হবে। বিষয়টি আগাপাশতলার নীতি নির্ধারকদের সর্বাগ্রে ভাবতে হবে। আমাদরে মনে রাখা ভালো শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের নামে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো নয়’ কিংবা শিক্ষা আজ ও আগামীকাল নয়।

আহমদ সিরাজ

আইনিউজ ভিডিও 

শাবিপ্রবি শিক্ষককে ফেনসিডিল সাপ্লাই দিতে গিয়ে গার্ড আটক!

প্রাণ দেবো, তবু ভিসির পদত্যাগ চাই` | কাফন মিছিলে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা | Eye News

শিক্ষার্থীরা লড়েছে মৃত্যুর সাথে, অসুস্থদের অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে

Green Tea
সর্বশেষ