Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ২১ ১৪৩২

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০

শুভ জন্মদিন মুস্তাফা মনোয়ার

আজ চারুশিল্পী, নাট্যনির্দেশক, শিল্প গবেষক মুস্তাফা মনোয়ারের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

দেশের চিত্রশিল্পে স্বতঃস্ম্ফূর্ত পদচারণা রয়েছে মুস্তাফা মনোয়ারের। বাংলাদেশে পাপেটের বিকাশ ও টেলিভিশন নাটকে তার কৃতিত্ব অতুলনীয়। ছবি আঁকার কারণে কিশোর বয়সে কারাবরণ করতে হয়েছিল তাকে। পরে এই ছবি আঁকাকেই জীবনের ধ্যান-জ্ঞানে পরিণত করেছেন তিনি।

মুস্তাফা মনোয়ারের বাবা কবি গোলাম মোস্তফা ছিলেন শিল্পরসিক। তিনি শুধু কবিতাই লিখতেন না, ভালো গানও গাইতেন। দেশে পাপেট চর্চার অন্যতম এই প্রাণপুরুষের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তার মা জমিলা খাতুন মারা যান। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট মুস্তাফা মনোয়ার।

কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা শুরু করেন মুস্তাফা মনোয়ার। সেই সময় তিনি বাবা ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে সংগীতের তালিম নেন। এরপর ওস্তাদ ফাইয়াজ খানের শিষ্য ওস্তাদ সন্তোষ রায়ের কাছেও তালিম নেন। দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী নির্মলেন্দু চৌধুরীর দলে। কিন্তু ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহের কারণে কণ্ঠসংগীতে আর নিয়মিত হতে পারেননি।

ভাষা আন্দোলনের সময় মুস্তাফা মনোয়ার নবম শ্রেণির ছাত্র, পড়ছিলেন নারায়ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে। সেই কৈশোরেও ভাষার প্রশ্নে উদ্বেলিত হলেন তিনি। যখন শুনলেন ঢাকায় গুলি হয়েছে, কয়েকজন ছাত্র শহীদ হয়েছে। তখনই তিনি প্রতিবাদে নেমে পড়েন। ছবি এঁকে সেই ছবি বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে শহরের দেয়ালে দেয়ালে সেঁটে দিতে লাগলেন।

পুলিশ ব্যাপারটা টের পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় একমাস কারাবাস বরণ করতে হয় কিশোর মুস্তাফা মনোয়ারকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি স্বাধীনতার স্বপক্ষে জনমত গঠনে কাজ করেন।

মুস্তাফা মনোয়ার তার কর্মজীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে। এরপর একে একে কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যম ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন, ঢাকা’র জেনারেল ম্যানেজার এবং এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি জনবিভাগ উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

দ্বিতীয় সাফ গেমসের মিশুক নির্মাণ এবং ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পেছনের লাল রঙের সূর্যের প্রতিরূপ স্থাপনসহ শিল্পের নানা শাখায় সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রেখেছেন মোস্তফা মনোয়ার। টেলিভিশনে নতুন ধরনের অনুষ্ঠান নির্মাণেও মুস্তাফা মনোয়ার অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭২ সালে বিটিভি থেকে প্রচারিত শিশু প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে জনপ্রিয় নতুন কুঁড়ির রূপকার তিনি।

চিত্রশিল্প, নাট্য নির্দেশক এবং পাপেট নির্মাণে অবদানের জন্য শিশুকেন্দ্র থেকে ২০০২ সালে বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৯২ সালে চারুশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৯৯ সালে শিশু শিল্পকলা কেন্দ্র কিডস কালচারাল ইন্সটিটিউট, চট্টগ্রাম কর্তৃক কিডস সম্মাননা পদক-১৯৯৯-এ ভূষিত হন। ২০০২ সালে চারুকলা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী কর্তৃক ঋষিজ পদক-২০০২-এ ভূষিত হন। এছাড়া তিনি আরো বহু পুরস্কার-সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

আইনিউজ/এসডিপি 

Green Tea
বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ