Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ০৪ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ২০ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ১৫ নভেম্বর ২০২০
আপডেট: ১৫:২৬, ১৫ নভেম্বর ২০২০

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়: এক সোনালী অধ্যায়ের সমাপ্তি

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ – ১৫ নভেম্বর ২০২০)

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ – ১৫ নভেম্বর ২০২০)

ভারতের চলচ্চিত্র জগতের এক নক্ষত্রের পতন ঘটল আজ। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে পর্দা কাঁপানো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই। কোটি দর্শককে কাঁদিয়ে আজ তিনি না ফেরার দেশে। সেই সাথে সমাপ্তি হলো এক সোনালী অধ্যায়ের।

তিনি একাধারে অভিনেতা, কবি, অনুবাদক। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি হলেও, আবৃত্তি শিল্পী হিসেবে সবাই তাকে ভালোবাসে। এমন একজন গুণী শিল্পী বিদায় নিলেন এই পৃথিবী থেকে।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। সৌমিত্রর পরিবারের আদি বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন সৌমিত্র। বিশ্ব বিখ্যাত নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরেই বড় পর্দায় নামেন তিনি। ১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের পঞ্চম চলচ্চিত্র অপুর সংসারের নাম ভূমিকায় দেখা যায় সৌমিত্রকে। এর পরে সত্যজিৎ রায়ের  ১৪ টি ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।

সৌমিত্র সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছেন সত্যজিতের ফেলুদা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। ‘সোনার কেল্লা’ চলচ্চিত্রে তিনি এতটাই দুর্দান্ত অভিনয় করেন যে সিনেমা রিলিজের পর স্বয়ং পরিচালক সত্যজিত রায় পর্যন্ত স্বীকার করতে বাধ্য হন যে, ‘তার চেয়ে ভাল আর কেউ অভিনয় করতে পারতেন না।’

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তার জীবনে মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমার পাশাপাশি নাটক, যাত্রা ও টিভি ধারাবাহিকে তার প্রচুর খ্যাতি রয়েছে।

তার উল্লেখযোগ্য কিছু ছবির মধ্যে আছে— অপুর সংসার, ক্ষুধিত পাষাণ, দেবী, স্বরলিপি, তিনকন্যা, পুনশ্চ, অতল জলের আহ্বান, অভিযান, বর্ণালী, প্রতিনিধি, চারুলতা, আকাশকুসুম, মনিহার, হঠাৎ দেখা, অজানা শপথ, অরণ্যের দিনরাত্রি, বসন্ত বিলাপ, অশনি সংকেত, দত্তা, জয় বাবা ফেলুনাথ, দেবদাস, গণদেবতা ও হীরক রাজার দেশে।

এই গুণী শিল্পীর গত ৫ অক্টোবর করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের পরের দিনই তাকে ভর্তি করা হয় কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে। সেখানে ৪০ দিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ হার মানলেন জীবনের কাছে কিংবদন্তি এই শিল্পী।

সত্যজিৎ রায় আর সৌমিত্রকে অমর জুটি বলা হয়। এতদিন সত্যজিৎ রায়ের নানা গল্প শোনাতেন সৌমিত্র। সেসব গল্পে উঠে আসতো সত্যজিতের সিনেমা নিয়ে নানা ভাবনা, নির্মাণের কলাকৌশল, মিষ্টি মধুর স্মৃতিচারণ। আজ সেই সৌমিত্রও চলে গেলেন। বাংলা সিনেমার অমর জুটিটির কেউ রইলো না আর!

এ হার মানা নয়। বরং নতুন জীবনের কাছে ফেরার। নতুন কোনো পৃথিবীতে। বাংলা সিনেমার মহাতারকা, অভিনেতা-নাট্যকার-বাচিকশিল্পী-কবি-চিত্রকর সৌমিত্র সেখানে যেন ভালো থাকেন।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ