Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ০৩ আগস্ট ২০২৫,   শ্রাবণ ১৯ ১৪৩২

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২৭ নভেম্বর ২০২০

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের বর্ণাঢ্য জীবন

আলী যাকের (৬ নভেম্বর ১৯৪৪ - ২৭ নভেম্বর ২০২০)

আলী যাকের (৬ নভেম্বর ১৯৪৪ - ২৭ নভেম্বর ২০২০)

মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমা জগৎ এর এক প্রতিভাবান শিল্পী আলী যাকের। তার প্রতিভার সাক্ষী হয়েছে পাঁচ দশক। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন, বিজ্ঞাপন জগতে রয়েছে তার অবদান। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও তার অবদান স্মরণীয়।

১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ নাট্যব্যক্তিত্ব। আলী যাকের ছিলেন চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়। বাবা মোহাম্মদ তাহের ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বাবার চাকরির বদলি সূত্রে অল্প বয়সে কুষ্টিয়া ও মাদারীপুরে কাটান আলী যাকের। পড়াশোনা করেন নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন আলী যাকের, নির্দেশনায় ছিলেন মামুনুর রশীদ। ওই বছরের জুন মাসে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন। দলটির জন্য আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে। তখন থেকে নাগরিকই তার ঠিকানা।

১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকে, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা।

অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকের অভিনেতা ও নির্দেশক তিনি। তালিকায় আরও আছে সৎ মানুষের খোঁজে, দেওয়ান গাজির কিস্সা, কোপেনিকের ক্যাপটেন, গ্যালিলিও ও ম্যাকবেথ।

আজ রবিবার, বহুব্রীহি, তথাপি, পাথর, দেয়াল’সহ অসংখ্য টিভি নাটক দিয়ে দেশজুড়ে পরিচিতি পান আলী যাকের। বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটকে তার চরিত্রগুলো আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়। বেতারে অর্ধশতের বেশি নাটক করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন আগামী, রাবেয়া, লাল সালু, নদীর নাম মধুমতীর মতো আলোচিত চলচ্চিত্রে।

টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। নানা বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেছেন দীর্ঘদিন। পাশাপাশি দেশীয় বিজ্ঞাপনশিল্পের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব আলী যাকের।

বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির কর্ণধার তিনি। তার সহধর্মিণী সারা যাকেরও একজন অভিনেত্রী। তাদের ছেলে ইরেশ যাকের অভিনেতা ও প্রযোজক হিসেবে সমাদৃত। মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়া একজন আরজে হিসেবে পরিচিতি পেলেও তিনি অভিনয়ও করেছেন কিছু নাটকে।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা।

এরকমই এক বর্ণাঢ্য জীবনের ইতি হলো শুক্রবার (২৭ নভেম্বর)।  এদিন  সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি চলে গেলেও তার প্রতিভার দ্বারা সবসময় সমাদৃত হবেন সকলের কাছে।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ