Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৬ ১৪৩২

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আপডেট: ০৯:৪০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

ঘিরে ফেলা হয়েছে কানাডার পার্লামেন্ট ভবন

নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজধানী ছাড়লেন ট্রুডো

ট্রাক চালকদের `ফ্রিডম কনভয়`

ট্রাক চালকদের `ফ্রিডম কনভয়`

কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অনিতা আনন্দ বলেছেন, এসব ঘটনা কেবল 'নিন্দনীয়' বললে কম বলা হবে।

কানাডার রাজধানী অটোয়া ট্রাক চালকদের 'ফ্রিডম কনভয়' নামক অবরোধের মুখে দ্বিতীয় দিনের মতো অচল হয়ে আছে। টিকা না নেয়া ট্রাক চালকরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে টিকা এবং লকডাউন বিরোধী আরো হাজার হাজার মানুষও এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। এই বিক্ষোভের মুখে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তাঁর পরিবার শনিবারই রাজধানী ছেড়ে গোপন নিরাপদ স্থানে চলে যান।

দুঃখজনকভাবে অটোয়ায় বিক্ষোভের সময় নাৎসিদের ব্যবহৃত প্রতীক 'স্বস্তিকা' পতাকা ওড়ানোর ঘটনা এবং একজন অজ্ঞাত সৈনিকের কবরের উপর এক নারীর নাচের দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তোলে। তবে এ বিষয় তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। অটোয়ার পুলিশ বলছে, রাজধানীতে বেশ কিছু স্মারক স্তম্ভকে অবমাননার আরো কয়েকটি ঘটনাও তারা তদন্ত করছে। এছাড়া পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা এবং সাধারণ মানুষকে হুমকি ও হয়রানি এবং নগরীর যানবাহন ভাংচুরের কিছু অভিযোগও তারা পেয়েছে্ন।

কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অনিতা আনন্দ বলেছেন, এসব ঘটনা কেবল 'নিন্দনীয়' বললে কম বলা হবে।

বর্তমানে ট্রাক চালকরা অটোয়ায় কানাডার পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশের রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে।

অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন বলেছেন, কিছু বিক্ষোভকারী দুঃস্থদের জন্য পরিচালিত এক স্যুপ কিচেনে গিয়ে সেখানকার কর্মীদের হয়রানি করেছেন। এই বিক্ষোভকারীরা সেখানে বিনামূল্য খাবারে দাবি জানাচ্ছিলেন। এর আগে অটোয়ার কিছু রেস্টুরেন্টে বিক্ষোভকারীদের ঢুকতে দেয়া হয়নি, কারণ তারা মাস্ক পরার নির্দেশনা মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন।

যদিও কানাডার যেসকল ট্রাক চালক সীমান্তের এপারে-ওপারে চলাচল করেন, তাদের প্রায় ৯০ শতাংশই করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। তবুও শত শত ট্রাক চালক দেশের নানা প্রান্ত থেকে এই ‌'ফ্রিডম কনভয়ে' যোগ দেন।

মূলত  টিকা না-নেয়া যে ট্রাক-চালকরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্থল সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায় ঢুকবে, তাদের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করার সরকারি একটি সিদ্ধান্ত তাদের বেশ ক্ষুব্ধ করে তোলে।

ট্রাক চালকরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদস্বরূপ 'ফ্রিডম কনভয়' নামে এক বিক্ষোভের ডাক দেয়। হাজার হাজার ট্রাক চালককে তাদের ট্রাক নিয়ে রাজধানীর দিকে রওনা দিতে বলা হয়।

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক সংবাদ সম্মেলনে টিকা-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের খুবই 'ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু এক গোষ্ঠী' বলে বর্ণনা করেছিলেন। এটি ট্রাক চালকদের আরও বিক্ষুব্ধ করে। তাদের 'ফ্রিডম কনভয়ে'র সঙ্গে যোগ দেয় কানাডার টিকা এবং লকডাউন বিরোধী আরও বহু মানুষ।

বিক্ষোভরত ট্রাক চালকরা শুরুতে তাদের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের নিয়ম তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছিল। কিন্তু অটোয়ার এই বিক্ষোভ থেকে এখন কানাডায় যেসব ক্ষেত্রে টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তার সবগুলোই তুলে নেয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা বলছে, যতক্ষণ তাদের দাবি মানা না হচ্ছে, ততক্ষণ তারা অবরোধ তুলবে না।

কানাডার কনজারভেটিভ বিরোধী নেতা এরিন ও'টুল কিছু বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার আছে বলে সংহতি জানিয়েছেন, তবে তিনি একই সঙ্গে অটোয়ার কিছু স্মৃতিস্তম্ভ অবমাননার প্রতিবাদ জানান।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রও গত সপ্তাহে জানিয়েছিল যে, বিদেশি ট্রাক ড্রাইভাররা তাদের দেশে ঢুকতে হলে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে।

উল্লেখ্য, জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল সরকার গত ১৫ই জানুয়ারি ট্রাক চালকদের জন্য নতুন যেসব বিধিনিষেধ জারি করে, তা থেকে এই বিক্ষোভের সূচনা হয়। তাছাড়াও কিছুদিন আগে ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে তার সরকার যথেষ্ঠ সমালোচনার সম্মুখীন হয়।

তথ্যসূত্র : বিবিসি

আইনিউজ/এমজিএম

আইনিউজ ভিডিও

গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা

Green Tea
সর্বশেষ