Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ০২ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ১৮ ১৪৩২

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ১৮ জানুয়ারি ২০২১
আপডেট: ২২:২৩, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

পৌর নির্বাচন

৮ম শ্রেণির গন্ডি পেরুতে পারেননি ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থী

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে ২জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জনসহ মোট ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদের মধ্যে ৮ম শ্রেণির গন্ডি পেরুতে পারেননি ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থী। শুধু তাই নয়, আছেন পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ এবং স্বশিক্ষিত প্রার্থীও। নির্বাচন কমিশনের হলফনামা পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এমন চিত্র। 

হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কাউন্সিলর পদে স্বশিক্ষিত ৯ জন, পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রার্থী রয়েছেন ২ জন, সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ ৪ জন, অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ১০ জন, নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ ২ জন, এসএসসি পাস ২ জন ও এইচএসসি পাস রয়েছেন প্রার্থী রয়েছেন চারজন। তবে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন এমন প্রার্থীও রয়েছেন পৌর নির্বাচনে।

আইনিউজের পাঠকদের জন্য মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার চিত্র নীচে তুলে ধরা হলো:

সাধারণ কাউন্সিলর

মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে ১ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পাঁচ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে শহিদ মিয়া,পারভেজ চৌধুরী এবং মো. ওয়াহীদ তিনজনই স্বশিক্ষিত। শ্বাশত ব্রহ্ম রনি এইচএসসি পাস এবং সাংবাদিক পার্থ সারথী পাল আইন বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।

২নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আসাদ হোসেন মক্কু নবম শ্রেণি ও মো. পিন্টু আহমদ অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ।

৩নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. রাসেল আহমদ ও মো. রুবেল আহমেদ স্বশিক্ষিত এবং অপর প্রার্থী মো. নাহিদ হোসেন ৭ম শ্রেণী উত্তীর্ণ।

৪নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী সুমেশ দাস যিশু ও মনবীর রায় মঞ্জু স্নাতক, সালেহ আহমেদ পাপ্পু অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও মো. মতিউর রহমান মতিন এসএসসি পাস।

৫নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ৭ম শ্রেণি উত্তীর্ণ, ফয়সল আহমদ স্বশিক্ষিত এবং মো. আবুল কাশেম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ।

৬নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৩ জনের মাঝে শামীম আহমেদ ও মো. সাহিন মিয়া অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ এবং মো. জালাল আহমদ সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ। 

৭নং ওয়ার্ডে  ৫জন প্রার্থীদের মাঝে আনিসুজ্জামান (বায়েছ) এসএসসি পাস, সহিদুল ইসলাম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ, মো. লাভলু আহমদ স্বশিক্ষিত, মো. জাকির হোসেন রাজা নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ এবং সারওয়ার মজুমদার স্নাতক সম্পন্ন।

৮নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. সাজ্জাদ আহমেদ এইচএসসি পাস এবং সৈয়দ সেলিম হক স্বশিক্ষিত।

৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থীদের কোনো তথ্য হলফনামায় পাওয়া যায়নি। তবে এই ওয়ার্ডে মো. মাসুদ মিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়  নির্বাচিত হয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশন থেকে জানা গেছে।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর

১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এদের মধ্যে নাজমা বেগম ও নুরুন্নাহার এইচএসসি পাস, শ্যামলী সূত্রধর অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ, রোববান বেগম পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ এবং আসমা আক্তার স্বশিক্ষিত। 

৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী শ্যামলী দাশ পুরকায়স্থ এসএসসি পাস এবং জাহানারা বেগম পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ।

৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী জিমি আক্তার, পারভীন আক্তার ও শিল্পী বেগম সকলেই অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ।

যা বলছেন শিক্ষাবিদেরা

পৌর শহরের একাধিক ভোটারের মতে, সুশিক্ষিত প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। অনেকেই বলছেন জনগণের সেবক হতে হলে নিম্নতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সেবা করা অনেক সহজ হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার আইনিউজকে বলেন "একটি এলাকায় অবশ্যই শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণি বা এসএসসি পাশ মানুষ থাকতে পারে না। সেখানে অবশ্যই মাস্টার্স, অনার্স এবং বিএ পাস মানুষও আছেন। তবে কেন নির্বাচনে শিক্ষিত মানুষ দাঁড়াচ্ছেন না?

তিনি আরও বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হওয়া মানে এই না যে তারা শুধু জনসেবামূলক কাজ করবেন। তাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটি জেলাকে রিপ্রেজেন্ট করতে হবে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। তাদের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক উচ্চমহলের মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। সেই জন্য অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শিক্ষার গুরুত্বও অনেক। এজন্য  জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত মানুষকে নির্বাচনে আসা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে জেলার শিক্ষাবিদ স্বপন নাথ বলেন- জনকল্যাণে কাজ করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন নেই। যদি একজন জনপ্রতিনিধির পরিবেশ প্রকৃতি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকে তাহলে জনগণের কল্যাণে কাজ করা অবশ্যই সম্ভব।  

আইনিউজ/এবি/এসডিপি

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়