Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ১৬ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ১ ১৪৩২

কামরুল হাসান শাওন

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৪ এপ্রিল ২০২২
আপডেট: ২০:২২, ৪ এপ্রিল ২০২২

আবেগ ও উচ্ছাসে ফ্লাওয়ার্স কেজি এন্ড হাই স্কুলে ‘আনন্দমঠ’

চেনা পথ, চেনা ক্যাম্পাস। শহরের সকল পথ গিয়ে মিশে যায় স্কুল ক্যাম্পাসে। দীর্ঘদিন পর স্কুলে ফিরেছিলেন প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা। প্রিয় বন্ধুকে কাছে পেয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি মুখরিত হয়ে ওঠে। নাচে-গানে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে সবাই। 

মৌলভীবাজারের দি ফ্লাওয়ার্স কেজি অ্যান্ড হাইস্কুলের ৪০ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উৎসব ‘আনন্দমঠ’ অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার (১ এপ্রিল)।

ফ্রুটিকা প্রেজেন্টস আনন্দমঠ উৎসব পাওয়ার্ড বাই সুমা ফুডস। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল আই নিউজ (www.eyenews.news) ও ঢাকা পোস্ট। ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে ছিলো মেমোরিজ।

প্রাণের উচ্ছ্বাস

দিনভর স্মৃতিচারণ আর উৎসব আড্ডায় মেতে ওঠেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তবে অনেকেই স্কুলে গিয়েছিলেন স্বামী কিংবা স্ত্রী, ছেলেমেয়েকে সাথে নিয়ে। সেদিনের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অনেকেই গিয়েছিলেন অভিভাবক হয়ে। স্বপরিবারে প্রাণের উচ্ছ্বাসে আড্ডা দিয়েছেন প্রাক্তনরা। 

দর্শকদের আনন্দে মাতান জনপ্রিয় তারকা শিল্পীরা

অনুষ্ঠানে দর্শকদের আনন্দে মাতান জনপ্রিয় লিজেন্ড তারকা মাইলস ব্যান্ডের শাফিন আহমেদ, দাগ ব্যান্ড ও ‘আইলারে নয়া দামান’ গান গেয়ে খ্যাতি পাওয়া সিলেটের মেয়ে তসিবা। 

জনপ্রিয় সিরিজ ব্যাচেলর পয়েন্ট-এর কাবিলা, হাবু ভাই এবং মীরাক্কেলের জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা পাভেল দর্শকদের আনন্দে মাতান। এসময় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একজন রোকেয়া ও একজন কাবিলা হয়ে নাটকের সংলাপ বলতে বলেন। 

তবে মৌলভীবাজার এসেও অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেননি তরুণদের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মিলা। আয়োজকরা জানান, শারীরিক অসুস্থার কারণে তিনি গান পরিবেশনা করতে পারেন নি। 

উদ্বোধনী পর্ব

শুক্রবার সকাল ৯টায় আনন্দ শোভাযাত্রা, পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।  চল্লিশ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উৎসবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, পৌর মেয়র ফজলুর রহমান, দি ফ্লাওয়ার্স কেজি এন্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিমসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষকরা। সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শামীম আহমদ। 

প্রধান অতিথির বক্তব্য

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নেছার আহমদ বলেন, ‘এই স্কুল থেকে পড়ালেখা করে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভালো জায়গায় অবস্থান করছে। এখন থেকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ হবে। একে অপরের সাথে পরিচয় হলে মায়া বাড়ে, সম্পর্ক বাড়ে। এই সম্পর্কের ফলে পরবর্তী সময়ে সুবিধা-অসুবিধায় একে অপরের সহযোগিতা করতে পারবে। 

অনুষ্ঠানে সেলিনা চৌধুরী ও নিঝুম মজুমদার

অনুষ্ঠানে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারী উদ্যোক্তা সেলিনা চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন লেখক-গবেষক ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার।

ডকুমেন্টারি প্রদর্শন

উদ্বোধনী পর্ব শেষ হলে শুরু হয় ডকুমেন্টরী প্রদর্শন, সম্মাননা প্রদান, স্মারক “অর্জন”-এর মোড়ক উম্মোচন। এসময় সকল অতিথিদের সম্মাননা প্রদান করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের আয়োজনে নৃত্য, গান পরিবেশনা করে। 

স্মৃতিচারণ

এরপর শুরু হয় স্মৃতিকথা। ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে একজন এসে স্কুল জীবনের নানান মজার ঘটনা বলা শুরু করেন। 

এসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মৌলভীবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মোখলেছুর রহমান। যিনি জেলখানার পুরনো ভবনকে স্কুলে পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন।

প্রাক্তন ছাত্র মনোয়ার আহমেদ বলেন, ‘আমি অসুস্থ। তারপরও এসেছি এই মিলন মেলায়। জানিনা আর কবে আসতে পারবো। জানেন এমনও বন্ধু খুঁজে পেলাম যার সাথে দীর্ঘ ১০ বছর পর দেখা হলো। এই আবেগ ধরে রাখতে পারছি না। এভাবেই পুনর্মিলনী স্থল ভরে ওঠে উচ্ছাস ও আবেগে। 

এক বন্ধু অপর বন্ধুকে জড়িয়ে ধরেছে। শিক্ষক তাঁর শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে ধরেছেন। কেউ কেউ পায়ে ধরে সালাম করছেন। এমন দৃশ্য একমাত্র পুনর্মিলনীতেই সম্ভব ‘

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ওমর ফারুক নাঈম বললেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে। এই অনুষ্ঠানটি অনেক আগে হওয়ার কথা ছিল। করোনাসহ নানা সমস্যার কারণে দেরিতে হয়েছে। তারপর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আজকের এই আয়োজন মুগ্ধকর হয়ে উঠেছে।’ 

অনুষ্ঠানে থেমে থেমে হয়েছে নাচ, গান, স্মৃতিকথা, বর্ণিল আতশবাজি। আর পুরনো বন্ধুদের পেয়ে আড্ডাতো ছিলই। গোল হয়ে বসে অনেককে দলবেঁধে গানও গাইতে দেখা যাচ্ছিল। তারা বলছিলেন, ‘এতোদিন পর মনে হচ্ছে আবার স্কুল জীবনটা ফিরে পেয়েছি। আজ কোনো স্মৃতি নেই। সব কিছুই জীবন্ত মনে হচ্ছে।’

আয়োজকেরা অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ-এর এ.জি.এম মো: আশিকুর রহমান রবিনকে টাইটেল স্পন্সরে বিশেষ সহোযোগিতা করায় ধন্যবাদ জানান।

এভাবেই আবেগ উচ্ছাসের মধ্য দিয়া পুনর্মিলনীর সমাপ্তি টানা হয়। সমস্ত শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য স্কুলের সব শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

আইনিউজ/কামরুল হাসান/এসডিপি 

আইনিউজ ভিডিও

নয় বছরের মেয়েটি কিভাবে নেভায় একের পর এক আগুন?

ঐতিহ্যবাহী আলী আমজাদ স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা 

বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়ে অন্ধ শিক্ষার্থীদের ক্ষিপ্রগতি দেখে সবাই মুগ্ধ

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ