সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট: ১৪:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মজুরি বৃদ্ধির অমানবিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে চা-শ্রমিকের সংগ্রাম কমিটির বিক্ষোভ
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল।
চা শ্রমিকদের মজুরি ৮.৫০ টাকা বৃদ্ধির অমানবিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সিলেটের খাদিম চা বাগানে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহবানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সংগঠনের আহবায়ক সবুজ তাঁতীর সভাপতিত্বে এবং খাদিম চা-বাগান শাখার সদস্য সচিব দীপ্ত নায়েকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- বুরজান চা-কারখানার পঞ্চায়েত সভাপতি এবং চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম নেতা বিলাস ব্যানার্জি, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমণ্বয়ক এস এম শুভ, চা-শ্রমিকনেতা সাথী বেগম, চা-শ্রমিক নেতা কিরণ, চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সংগঠক মনীষা ওয়াহিদ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট কারো সাথে আলোচনা না করেই সরকার ২০২৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ শতাংশ (৮.৫০ টাকা) হারে চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে গেজেট প্রকাশ করে। চা-শ্রমিকরা সেই গেজেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবি তোলে এবং দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে।২৪ সালে ৫% হারে মজুরি বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের সম্মুখে এই গেজেট ধোপে টিকবে না তা মালিকরা তার পূর্বাভাস পেয়েই বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগে হুট করে বিগত সরকারের গৃহীত গেজেট অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা থেকে মাত্র ৮.৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭৮.৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বিজ্ঞপ্তি দেয়, যা ১১/৮/২০২৪ থেকে ১০/৮/২০২৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বক্তারা আরও বলেন, দুই বছর পরপর চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ ১৯ দিন আন্দোলনের পরে সর্বশেষ ২০২১-২২ সালের মজুরি ২০২২ সালের আগস্ট মাসে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারিত হয়। তৎকালীন সরকার শ্রমিকপক্ষকে বাদ দিয়ে মালিকপক্ষের সাথে একতরফা মিটিং করে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। যদিও মজুরি বৃদ্ধির নিয়ম হচ্ছে শ্রমিকপক্ষ মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করে মজুরি নির্ধারণ করবেন। অসহায় চা-শ্রমিকরা নিরুপায় হয়ে ১৭০ টাকা মজুরিতেই কাজে যোগদান করেন। ৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় চা-শ্রমিকদের বকেয়া এরিয়ার প্রায় ৩১ হাজার টাকা হলেও, মালিকরা তৎকালীন সরকারের সহযোগিতায় মাত্র ১১,০০০ টাকা পরিশোধ করে, বাকী ২০,০০০ টাকা থেকে চা-শ্রমিকদের বঞ্চিত করে।
বর্তমানের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে চা-শ্রমিকদের পক্ষে দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরিতে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পরেছে। যেখানে একটা ডিমের দাম১৩/১৪ টাকা, মোটা চাল ৬০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, ডাল ১২০ টাকা, ১ লিটার তেল ১৭০ টাকা, সেখানে মাত্র ৮.৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি চা-শ্রমিকদের সাথে তামাশার নামান্তর। শুধুমাত্র ডাল-ভাত খেয়েও দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরিতে ৫/৬ জনের সংসার চালানো বর্তমান বাস্তবতায় চালানো একেবারেই অসম্ভব।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমণ্বয়ক এস এম শুভ বলেন, গেজেট অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার, গেজেট বাতিল এবং দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া। অন্যথায় চা-শ্রমিকদের কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার বিকল্প থাকবে না।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা সবুজ তাঁতী বলেন, বর্তমানের উর্ধ্বগতির বাজারে মাত্র ৮.৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাগান মালিকরা চা-শ্রমিকদের সাথে তামাশা করেছেন। মাত্র ১৭০ টাকা মজুরিতে যখন চা-শ্রমিকদের সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পরেছে, তখন মাত্র ৮.৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি চরম অমানবিক সিদ্ধান্ত।
দেশের সবচেয়ে বঞ্চিত, নিপীড়িত, অসহায় চা-জনগোষ্ঠীর দাবির পক্ষে দেশের সকল বিবেকবান মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’