Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ০১ অক্টোবর ২০২৫,   আশ্বিন ১৫ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ৩ অক্টোবর ২০২০
আপডেট: ২০:৪৪, ৩ অক্টোবর ২০২০

এমসি কলেজে গৃহবধূকে ধর্ষণ

আর ১০ মিনিট সময় পেলেই নষ্ট করে ফেলতো গণধর্ষণের আলামত

অভিযুক্ত ছয় ধর্ষক

অভিযুক্ত ছয় ধর্ষক

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণে জড়িতরা অপরাধ করতে করতে পাকা অপরাধী হয়ে উঠেছেন। অভিযুক্তরা এর প্রমাণ রেখেছেন ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায়ও। ধর্ষকরা আর ১০ মিনিট সময় পেলেই ধর্ষণের সব আলামত নষ্ট করে ফেলতেন। 

ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য বের হয়ে এসেছে। 

শুক্রবার রাতে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন তারা।

তাদের দেয়া ভাষ্যমতে, ওই রাতে তরুণীকে গণধর্ষণের পর আলামত নষ্ট করতেই তরুণী ও তার স্বামীর গাড়িটি আটকে রেখেছিলেন তারা। ছাত্রাবাসের ফটকে দাঁড়িয়ে যখন ভেতরে প্রবেশ করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা করছিল পুলিশের একটি দল, তখন গাড়িটি ধুয়ে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। একজনের মাধ্যমে এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ঢুকে পড়েন সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার এসআই মো. সোহেল রানা। আর ১০ মিনিট সময় পেলেই ধর্ষণের সব আলামত নষ্ট করা সম্ভব হতো।

তারা দুজনসহ চারজন তরুণীকে ছাত্রাবাসে গাড়িতেই চারবার ধর্ষণ করেছেন। তাদের সঙ্গী রবিউল ইসলাম ধর্ষণে সহযোগিতা করেন।

ওই তরুণীর স্বামী জানান, ছাত্রাবাস ফটকে অনুমতির অপেক্ষা করছিলেন শাহপরান থানার ওসিসহ পুলিশের একটি দল। ধর্ষকেরা তখন ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিলেন। এতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে মনে করে একজন পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা মিহিত গুহ চৌধুরী ওরফে বাবলা চৌধুরী সাহস করে তাদের নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে গেলে ধর্ষকেরা পালিয়ে যান।

এ তথ্য নিশ্চিত করে স্থানীয় বাসিন্দা মিহিত গুহ চৌধুরী ওরফে বাবলা চৌধুরী বলেন, তার সঙ্গে শাহপরান থানার এসআই সোহেল রানা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে শাহপরান থানার ওসি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরীর বলেন, ছাত্রাবাস ফটকে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করা হয়েছিল। এ সময় আসামিরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য শাহপরান থানার এসআই মো. সোহেল রানা ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছান। আলামত জব্দ তালিকা তিনিই করেছেন।

ওসির বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সালেহ আহমদ বলেন, ওসি সাহেব অনুমতি চাওয়ায় ছাত্রাবাসের ভেতরের স্টাফ কোয়াটারে থাকা একজন শিক্ষককে ফটকে পাঠানো হয়েছিল।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এসআই সোহেল সময় মতো ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়ায় ধর্ষণের আলামত নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।

এ ব্যাপারে এসআই সোহেল রানা বলেন, ওই সময় ঘটনাস্থলে না গেলে শুধু ধর্ষণের আলামত নষ্ট নয়, সাইফুরের দখলে থাকা ছাত্রাবাস কক্ষ থেকে একটি পাইপগান, চারটি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারও হতো না। জব্দ তালিকা করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন, গাড়িটি ধুয়ে মুছে ফেলার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছিলেন ধর্ষণকারীরা। আর মিনিট দশেক সময় পেলেই সব আলামত নষ্ট করে ফেলতেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। স্বামীর কাছ থেকে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে গ্রেফতাররা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে বেঁধে রাখা হয়। এ ঘটনায় শাহপরান থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণীর স্বামী।

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়