Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ২০ জুন ২০২৫,   আষাঢ় ৬ ১৪৩২

তোফায়েল পাপ্পু, আরব আমিরাত থেকে

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ১৩ মে ২০২১
আপডেট: ১৮:১৫, ১৩ মে ২০২১

যেভাবে কাটে প্রবাসীদের ঈদ

ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। এই কথা সবাই মানলেও প্রবাসীদের জীবনে এই কথার বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রবাসীদের ঈদটা একটু অন্যরকম। যা আমি অনুভব  করতে পেরেছি। হয়তো আরও ১/২ টা ঈদ প্রবাসে কাটালে আরও বুঝতে পারবো।

প্রবাসে অনেকেই আছেন যাদের জন্য ঈদের দিনটা অত্যন্ত কষ্টের। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। এই ঈদকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন আশা আকাঙ্ক্ষা আর প্রস্তুতির কমতি থাকে না। ঈদ আসে, ঈদ যায় কিন্তু প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্ট এতটুকুও কমে না। যা আমি প্রবাসে (দুবাই) এসে বুঝতে পারলাম।

ফজরের আযানের পর দল বেঁধে ছোটাছুটি, কারও বাড়ির পাশে পুকুরে, কারও ঘরের ভিতরে বাথরুমে সবার আগে গোসল শেষ করে সামান্য মিষ্টি মুখ করে নতুন জামা কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া, নামাজ শেষে বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে কোলাকোলি করা, সবাই একসাথে ছবি তোলা, বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া, পাড়া-প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, বড়দের কাছ থেকে সালামি নেয়া এসব কিছু এখন শুধুই স্মৃতি। 

এখন আর নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ডাক দিয়ে বলে না সেমাই খেয়ে যাও। এখন আর নতুন জামা পরে সালাম করলে কেউ নতুন টাকার নোটগুলো হাতে উঠিয়ে দেয় না। এসবের একটাই কারণ, আর তা হলো আমি এখন বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে। দুবাইতে উচু উচু দালানকোঠার মাঝে বিশাল অট্টালিকার প্রান্তরে।

এখানে ঈদ মানে শুন্যতা, ঈদ মানে না পাওয়ার কষ্ট। পবিবার পরিজন ছাড়া ঈদ যে কত কষ্ট তা একমাত্র প্রবাসীরাই বুঝে। সকাল হলেই ঈদ কিন্তু এখনো অনেকেই আছেন ডিউটিতে। শেষ রাতে গোসল সেরে খেয়ে না খেয়ে ঈদের নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি। পূর্বাকাশে সূর্য মামার দেখা পাওয়ার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় ঈদের নামাজ । এর মাঝে আসতে শুরু করবে দেশ থেকে আপনজনদের মিসকল বা কল আর খুদে বার্তা।

কয়েকজন প্রবাসীদের সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম প্রবাসে ঈদের পরের দিন বাংলাদেশে ঈদ অনুষ্ঠিত হয়। প্রবাসীরা ঈদ শেষে দেশে বাড়িতে কল দিয়ে তাদের প্রস্তুতির কথা শুনে খুশি হয়। বাড়িতে মা-বাবা-ভাই-বোন ভালোভাবে ঈদ করতে পারলে প্রবাসীরা ধন্য হয় যে তাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে তাদের পরিবার সুখে -শান্তিতে ঈদ করতে পারছে। এইটুকুই প্রবাসীদের স্বার্থকতা।

তারা বলেন, ঈদের নামাজ আর দেশে ফোন করার পর কষ্টের তীব্রতাকে আরো ভারী করে ঘুমানোর প্রস্তুতি। বুকফাটা কষ্ট আর যন্ত্রণাকে  বুকে নিয়ে বিছানায় গিয়ে চোখের পানিতে বালিশ ভিজিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা যেন কষ্টের ভারটা একটু কমে।

আর তাতেই দুপুর ঘনিয়ে সূর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সামান্য কিছু মুখে দিয়ে দু-একজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা। এভাবেই কেটে যায় প্রবাসীদের ঈদ নামের কষ্টের দিনটি।

সকল প্রবাসী ভাই-বোনদের প্রতি রইলো ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।
 ** ঈদ মোবারাক **

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়