Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ০৯ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৫ ১৪৩২

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ২১ অক্টোবর ২০২১

জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দায়ী করা হচ্ছে বিভাগীয় শিক্ষককে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের  শিক্ষার্থী সুমাইয়া মেহজাবিন স্বর্ণার আত্মহত্যায় বিভাগের শিক্ষককে দায়ী করছেন নিহতের বোন ও সহপাঠিরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া মেহজাবিন স্বর্ণা গত বুধবার (২০ অক্টোবর) তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশ পোল মধুমাল্লার ডাঙ্গী গ্রামে আত্মাহত্যা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের বোন সাদিয়া মেহজাবিন সাথী আক্তার ও একাধিক সহপাঠী নিজ বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। নিহতের বোন সাদিয়া মেহজাবিন সাথী বলেন, আমার বোন খুবই ভালো ছিল। পড়াশুনায়ও খুবই ভালো ছিল। কিন্তু বিভাগের একজন শিক্ষক ওকে ভালো নাম্বার দিতেন না। তাছাড়া ওর বুধবার রাতেই ঢাকা চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে যেতে চাচ্ছিল না, ফলাফল আবারো খারাপ হবে এই ভয়ে।

সাথী আরো বলেন, আমার বোন একটি বিষয়ে ২ মাস আগে এসাইনমেন্ট দিয়েছিল বিভাগের শিক্ষক আয়শা সালেহকে। কিন্তু তিনি সেটি হারিয়ে ফেলেন। এরপর ২ মাস পরে তিনি আবারো ওই এসাইনমেন্ট চান মাত্র ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে। ততদিনে সেও এটা হারিয়ে ফেলেছিল। সেই শিক্ষকের কোর্সে সে ২০ নম্বরের মধ্যে মাত্র ৬ পেয়েছিল। এতেই তার ডিপ্রেশন আরো বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, তার এসাইনমেন্ট নিয়ে তার বন্ধুরা ভালো ফলাফল করলেও তার নম্বর সবসময়ই কম থাকে। বিভাগের শিক্ষকদের কয়েকজন তার পোশাক নিয়েও কথা বলতেন।

নিহতের একাধিক সহপাঠীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে ‘দেখে নেয়ার প্রবণতা’ ছিল অনেক বেশি। যে কারণে অজানা কারণে তার ফলাফল খারাপ হতো। আমাদের মধ্যে সে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ ছিল। কিন্তু তার ফলাফল সবসময়ই খারাপ হতো। এজন্য সে অনেক বেশি ডিপ্রেসড ছিল। বিশেষ করে ‘ফিসক্যাল ল’ বিষয়ে সে বরাবরেই খারাপ ফলাফল করতো। এজন্য সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগরে চেয়ারম্যান খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন বলেন, আমার কোন শিক্ষার্থী কোন শিক্ষক দ্বারা এমন হয়রানির শিকার হলে আমাকে তো কেউ অভিযোগ করেনি। এমন কিছু হওয়ার কথাও না। আমার জানা মতে বিভাগের সব শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে ভালো।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক আয়েশা সালেহ বলেন, আমার কোর্সে সে ২০ এর মধ্যে ৮ পেয়েছে। সে আরো অন্যান্য শিক্ষকের পরীক্ষাতেও খারাপ করেছে। তার সাথে আমার কোন খারাপ সম্পর্কও ছিলো না। তাছাড়া তার পোশাক নিয়েও আমি কোন কথা বলিনি। যারা এসব কথা বলছেন তারা আবেগে বলছেন।

বিভাগের অনেক শিক্ষাথী এমন অভিযোগ করছেন কেন যে, আপনার কোর্সে খারাপ করে? এর উত্তরে তিনি বলে আমি যে ‘ফিসক্যাল ল’ পড়াই এটি বেশ কঠিন একটি বিষয়। এটায় অংক আছে। তাই অনেকে খারাপ করে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ইমদাদুল হক ফোন ধরেননি।

উল্লেখ্য যে, স্বর্ণার মৃত্যুর বিষয়ে সাতক্ষীরা থানার সাব-ইনস্পেক্টর শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘সদর হাসপাতাল থেকে বেলা দুইটার দিকে আমাদের স্লিপ দেয়া হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা গিয়েছি। পরিবার থেকে আমাদের জানিয়েছে, গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের তারা আর কিছু জানায়নি। ময়না তদন্তের পর এখন দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

আইনিউজ/রাকিবুল ইসলাম রিয়াদ/এসডিপি 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়