আই নিউজ ডেস্ক
সিসিক নির্বাচন: ঘুরেফিরে আলোচনায় ‘লন্ডন কানেকশন’

সিলেট আর লন্ডন; ভৌগলিক অবস্থানে বিস্তর দুরত্ব থাকলেও এই দুই শহরের মধ্যে রয়েছে দারুণ সখ্যতা। নির্বাচন এলে এই সখ্যতা আরো বাড়ে। সিলেটের নিবার্চনে বেড়ে যায় লন্ডনের প্রভাব। নির্বাচনের অন্যতম কুশীলব হয়ে উঠেন লন্ডনের বাসিন্দারা।
এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন যখন দূয়ারে তখন আবার আলোচনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘লন্ডন কানেকশন’।
সিটি নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা লন্ডনের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত। একজন গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে মাঠে আছেন। দুই নেতা হিসাব মেলাতে অবস্থান করছেন লন্ডনে। তারা সফর সংক্ষিপ্ত করে শিগগির ফিরবেন এমনটাই জানিয়েছেন তাদের ঘনিষ্ঠজন।
লন্ডন থেকে সিলেট এসে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে, হঠাৎ করেই ব্যক্তিগত সফরে লন্ডন গেলেন বিএনপি নেতা সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
লন্ডন কানেকশন পাকাপোক্ত হলে তিনি হতে পারেন মেয়র প্রার্থী– এমনটা মনে করছেন তার অনুসারীরা। নগর আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনও অবস্থান করছেন লন্ডনে।
জাকিরের সমর্থকরা বলছেন, লন্ডনে থাকা তার অনেক সতীর্থ নির্বাচনে অংশ নিতে তাকে উৎসাহ দিয়েছেন। তার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন ঘনিষ্ঠ লোকজন।
গত ২২ জানুয়ারি দেশে ফেরেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ওই দিন হাজারো কর্মী-সমর্থক নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে শহরে আসেন তিনি। এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এরপর আনোয়ারুজ্জামান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করার পর আরও জোরালো হয় প্রার্থিতার বিষয়টি।
অথচ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র প্রার্থী হতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আট নেতা মাঠে আছেন। তারা হলেন– কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এ টি এম এ হাসান জেবুল, আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপলু ও সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী।
তারা নিয়মিত বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশে অংশ নিয়ে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজন দলীয় মনোনয়ন পাবেন– এতদিন এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। তবে হঠাৎ পাল্টে গেছে সেই চিত্র। আনোয়ারুজ্জামান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ায় অনেকটা চুপসে গেছেন অনেকেই। তবে হাল ছাড়েনি তারা। এখনও নগরীতে তাদের প্রচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলছেন, ‘উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা পেয়ে তিনি মাঠে নেমেছেন। সিলেট নগরীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘকালের সম্পর্ক। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে পারলে এই শহরকে ডিজিটাল ও আদর্শ শহরে পরিণত করতে কাজ করবেন। তবে নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রার্থিতার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি।
এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, সিটি নির্বাচনে এখনও দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই তারা থাকবেন। এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করাতে বিবৃতি দেওয়ার দেড় মাস পরই লন্ডন গেলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন। গত ২৭ মার্চ তিনি লন্ডনে যান। লন্ডন যাওয়ার আগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিটি নির্বাচনের জন্য সফর সংক্ষিপ্ত করে ১০ এপ্রিল দেশে ফিরবেন বলে উল্লেখ করেন।
নির্বাচনের আগে তার লন্ডন সফর নিয়ে আওয়ামী লীগে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ কেউ বলছেন, সেখানে থাকা আওয়ামী লীগের অনেক উপদেষ্টার পরামর্শেই তিনিই লন্ডনে গেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন, লন্ডনে সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী নেতার আলোচনা হয়েছে। অনেকেই তাকে নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছেন। লন্ডন থেকে ফেরার পর জাকির হোসেনের নির্বাচনের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
গত রোববার নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার এক দিন আগেই লন্ডন রওনা দেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। হার্টে রিং লাগানোর পর পুরোপুরি বিশ্রাম না নিয়েই ব্যক্তিগত কাজে লন্ডনে যাওয়ায় এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে গেলে মেয়র আরিফুল হকই হবেন প্রার্থী। বিএনপি নির্বাচনে না গেলে নাগরিক সমাজের প্রার্থী করা হতে পারে তাঁকে। দলীয় নেতাকর্মীকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন তিনি। এ ছাড়া প্রতিটি বড় সমাবেশ সফল করায় তার অবদান আছে। আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বিএনপির চলমান আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও নিজের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। শেষ সময়ে তিনি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন। সেই তৎপরতার অংশ হিসেবেই দলের নেতা তারেক রহমানকে রাজি করাতে তিনি লন্ডনে গেছেন।
এ ব্যাপারে নগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সঠিক হবে না; তাই তারা কোনো নির্বাচনেই অংশ নিতে চান না। বিএনপি নির্বাচন না করলেও সিটি নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হলে দলের অবস্থান কী হবে– এ প্রশ্নের জবাবে নাসিম হোসাইন বলেন, দল নির্বাচনে যাবে না। তাই এ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। যারা দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন, বুঝতে হবে তারা সুবিধাবাদী।
সিলেট বিএনপির প্রভাবশালী আরেক নেতা বলেন, আরিফ ছাড়া বিএনপির কোনো প্রার্থী তিনি দেখছেন না। আরিফ ছাড়া আর কেউ প্রার্থী হলে নির্বাচন হবে সাদামাটা। কোনো প্রকার লড়াই ছাড়াই বিজয় হবে অওয়ামী লীগ প্রার্থীর। তখন হয়তো ডামি প্রার্থীর সংখ্যা থাকবে বেশি।
আইনিউজ/এইউ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - দুলাভাইয়ের ধর্ষণের শিকার শ্যালিকা
- মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- মৌলভীবাজারের রাজনগরে
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বিধবা রুবির বিউটি পার্লার - `প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে আমাদের ধোকা দেওয়া হচ্ছে`