Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ১৯:১১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪
আপডেট: ২২:০২, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪

মৌলভীবাজারে রিডিং এন্ড রাইটিং হসপিটালের উপকরণ বিতরণ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ডক্টর উর্মি বিনতে সালাম। ছবি- আই নিউজ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ডক্টর উর্মি বিনতে সালাম। ছবি- আই নিউজ

মৌলভীবাজারে রিডিং এন্ড রাইটিং হসপিটাল শীর্ষক কার্যক্রম বাস্তবায়নে জেলার ছয়টি উপজেলার ৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে এসব উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বর্ণালী পাল। 

উপস্থিত ছিলেন- সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন চৌধুরী, সহাকরী কমিশনার সৈয়দ সাফকাত আলী, কুলাউড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইফতেখায়ের হোসেন ভুঁইয়া প্রমুখ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বর্ণালী পাল আই নিউজকে বলেন, এটা জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালামের একটা বিশেষ উদ্যোগ। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পাইলট কর্মসূচি হিসেবে এটা শুরু হয়েছে। সেটা সফল হওয়ায় জেলার সাতটি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আজ ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে রিডিং এন্ড রাইটিং হসপিটাল উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম চালু করা হবে।


জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে- রিডিং এন্ড রাইটিং হসপিটাল ফরমুলাটি হলো- বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় অনেক দুর্বল। অনেকে যুক্তাক্ষর পড়তে পারে না। অনেকে বড় বানান উচ্চারণ করতে পারে না। অনেকে ইংরেজি শব্দ শেখেনি। করোনা মহামারির সময় যেগুলো না পড়েই তারা উপরের ক্লাসে চলে এসেছে। এই পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথমে বর্ণমালা, শব্দ ও ওয়ার্ড দিয়ে কয়েকটি লুডু তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আর এই লুডু খেলার জন্য প্রথমে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লাল ও সবুজ দুই দলে বিভক্ত করা হয়। লাল দলে রয়েছে যারা শব্দ ভালো করে উচ্চারণ করতে পারে না, যুক্তবর্ণের ব্যবহার জানে না। অর্থাৎ বিদ্যালয়ের অধিকতর দুর্বল শিক্ষার্থী। আর সবুজ দলে রয়েছে যারা রিডিং পড়তে ও লিখতে পারে। সবুজ দল থেকে ভালো দেখে প্রতি ৪ জনে একজন করে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। যে শিক্ষার্থী ভালো করে রিডিং পড়তে পারে। যাদের পদবি হচ্ছে নার্স বা কেয়ারার। এই একজনকে দিয়ে ৪ জনের গ্রুপ করে বড় একটি লুডু খেলতে বসিয়ে দেওয়া হয়। এই লুডুটির প্রত্যেক ঘরে রয়েছে বর্ণমালা। একইভাবে একটি লুডু রয়েছে ইংরেজি বর্ণমালা দিয়ে। আরো দুটি বাংলা ও ইংরেজি শব্দ দিয়ে। শিক্ষার্থীরা লুডুতে কটি মেরে ওই ঘরে ঘুঁটি নিয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে পড়তে থাকে। প্রথমে একবার পড়িয়ে দেয় সবুজ দল থেকে আসা দলনেতা বা ওই হাসপাতালের নার্স। জটিল বানানে সাহায্য করেন ডাক্তার ও কনসালটেন্ট। 

রিডিং হাসপাতালে কয়েকদিন ক্লাস করার পর যারা সব পড়তে পারে তাদের পাঠানো হয় রিডিং রাইটিং হসপিটালের চেকিং রুমে। সেখানে থাকে খুবই ভালোমানের আরেকজন শিক্ষার্থী। যার পরিচয় ওই হাসপাতালের ডাক্তার। 

সহকারী শিক্ষকরা হলেন রিডিং রাইটিং হসপিটালের কনসালট্যান্ট। প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা হলো- তত্ত্বাবধায়ক।

রিডিং রাইটিং হসপিটালের চেকিং রুমে যারা আসে তাদের আরো কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এখানে দেয়ালে টাঙানো কয়েকটি ছবি দেখে গল্প বলতে হয় এবং তা লিখে দিতে হয়। ফলের গাছের ফলগুলো পড়তে হয়। ইংরেজি বর্ণমালার গাছগুলো থেকে বর্ণমালা ও ওয়ার্ড পড়তে হয়। সব শেষে পেপার স্ট্যান্ডে গিয়ে পড়তে হয় পত্রিকা। এখানেই শেষ নয় এই চেকিং রুমে যে সবচেয়ে ভালো করবে তাকে দেয়া হয় ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ডে’পুরস্কার।

আই নিউজ/এইচএ 

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়