Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুলাউড়া 

প্রকাশিত: ১২:০৭, ৬ জুলাই ২০২৪

কুলাউড়ার বুড়িকিয়ারির বাঁধ অপসারণের দাবি 

কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলন।

কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলন।

কুলাউড়া উপজেলার বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানকল্পে হাওরের পানির প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টিকারী বুড়িকিয়ারী বাঁধ অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলন কমিটি।

কমিটির আহবায়ক আ স ম ছালেহ সোহেল ও সদস্য সচিব খছরু চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে হাওরের পানির প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টিকারী বুড়িকিয়ারী বাঁধ অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন। 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, স্বাধীনতাপূর্ব ও পরবর্তী সময়েও মৌলভীবাজার জেলা তথা হাওড়-বাওড়-খাল-নদী-নালা বেষ্টিত বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের মানুষ বর্যা মৌসুমে এরকম বন্যা কবলিত হয়নি। কোনো কোনো বছরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে মাঝেমধ্যে বন্যা হতো কিন্তু আজকের মতো দীর্ঘমেয়াদী এমন জনদূর্ভোগে নিপতিত হতে হয়নি সাধারণ মানুষকে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ষড়ঋতুর বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্র এদেশের মানুষ নানা রংয়ে ঢংয়ে উপভোগ করতো। আমাদের মৌলভীবাজার তথা ভাটি বাংলার সাধারণ মানুষ বর্ষা মৌসুমকে উপভোগ করতো প্রাণভরে। গ্রাম বাংলার মরমী সাধকদের গানে, কবিতায় যার উল্লেখ পাওয়া যায়। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার এই দেশের বর্ষাকাল যে কতটা উপভোগ্য — কত বিরল আনন্দের — তা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে গানে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। সিলেটবাসীর দুর্ভাগ্য হলো, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে শাসকগোষ্ঠীর অপরিকল্পিত উন্নয়নের পাশাপাশি লুটেরা স্বার্থ রক্ষা করার কারণে সিলেট-মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ-সুনামগঞ্জে ঘন-ঘন বন্যা হচ্ছে। বন্যার দীর্ঘস্থায়িত্বের কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কুলাউড়া উপজেলার পৌর শহর-সহ জুড়ী-কুলাউড়ার ৪২ টির অধিক গ্রাম পানির নীচে। গ্রামাঞ্চলের গরীব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পানির নীচে থাকায় অসহায় লোকজন চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন, শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হয় পানির নীচে — নয়তো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে লাখো শিশু। 

হাওর ও পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের জানা আছে, পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম হাওর হাকালুকির পানি নিষ্কাশনের জন্য একমাত্র নদী হলো কুশিয়ারা। হাওর থেকে এসে কুশিয়ারা নদীতে পড়া "বুড়িকিয়ারী নামক নদী বা ছাড়াগাঙ্গ" এর মাধ্যমে হাওরের বর্ষার পানি কুশিয়ারা হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যায়। কিন্তু ১৯৯১ — ৯৫ সাল সময়ে এই বুড়িকেয়ারী (ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার গিলা ছড়া ইউনিয়ন এলাকায়) গাঙ্গের মুখে বাঁধ তৈরী করে হাওরের পানি প্রবাহ নদীতে যেতে বাঁধা সৃষ্টি করা হয়। সেই থেকে কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখা— এই তিন উপজেলার মানুষ প্রায় প্রতিবছরেই কমবেশি বন্যার শিকার হয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। 

মানুষ-সৃষ্ট এই দুর্ভোগ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেবার নয়। এই বাঁধে শীত মৌসুমে হাওরের মৎস সম্পদ লুটেরাগোষ্ঠী ছাড়া সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হয় বা হচ্ছে বলে আমাদের জানা নেই। লুটেরা স্বার্থরক্ষাকারী সরকার যদি এই বাঁধ অপসারণ না করে; তাহলে, কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলন সর্বস্তরের জনসাধারণকে নিয়ে এই বাঁধ অপসারণ করার মতো কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

আই নিউজ/এইচএ 

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়