সেই প্রবাসী পরিবার রাতে বার্গার ও জুস খেয়ে ছিলো

দোকান থেকে বার্গার ও জুস এনেছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। পরিবারের ৫ সদস্য মিলে রাতে সেগুলো খেয়েই ঘুমিয়ছিলেন। আর ঘুম ভাঙেনি তার। ঘুমের মধ্যে মারা যান রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলাম। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় স্ত্রী হুসনেআরা বেগম, বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম এবং একমাত্র কন্যা সামিরা ইসলাম। কান্না করতে করতে এমন তথ্য জানালেন নিহত রফিকুলের ৭৫ বছর বয়সী শ্বশুর আনফর আলী।

বৃহস্পতিবার আনফর আলীর গ্রামের বাগি উপজেলার ধিরারাউই গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে আলাপ হলে তিনি এ সব তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, সোমবার দিনের বেলা তাজপুর বাজার থেকে বার্গার জুস সহ বিভিন্ন ফাস্টফুড অন্যান্য খাবার কিনে আনেন প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। ঐ রাতে তাজপুরের স্কুল রোডের ভাড়া ভাসায় আর কোনো আত্মীয়স্বজন কিংবা কোনো লোকজন আসেনি। সোমবার রাতে রফিকুল ইসলাম স্ত্রী হুসনেআরা বেগম বড় ছেলে সাদিকুল, ছোট ছেলে মাইকুল ও একমাত্র কন্যা সামিরা ইসলাম ফাস্টফুড সহ দোকান থেকে ক্রয় করা খাবার খায়।

আইনিউজ এ আরও পড়ুন: তুর্কি থেকে গ্রিসে অনুপ্রবেশ: দুর্ঘটনায় সিলেটের যুবক নিহত

বাসায় থাকা অন্যান্য আত্মীয়- রফিকুলের শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের বৌ ও তাদের ৮ বছর বয়সি কন্যা রাতে ভাত খায়। রাত প্রায় ১০টার দিকে রফিকুল পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে বাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। নিহত রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী আরো জানান, রফিকুল ইসলাম সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসার পূর্বে শ্বশুরকে ভাড়া বাসা ঠিকানা ও তিনি যে দেশে আসছেন সে বিষয়ে আত্মীয়স্বজন সহ কাউকে না জানাতে বারণ করেন। কিন্তু কি কারণে মেয়ে জামাই শ্বশুরকে বারণ করেছে সে ব্যাপারে আর কিছু জানে না বলে আনফর আলী জানান।

এদিকে প্রবাসী পিতা পুত্র নিহত ও পরিবারের অন্য তিন সদস্য বিষক্রিয়া অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হবার পর এখন পর্যন্ত এর কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। গত বুধবার বিকেলে নিহত পিতা পুত্রের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টায় উপজেলার দয়ামীর ইউপির পরকুল মাদ্রাসা মাঠে জানাজার নামাজ শেষে লাশ গ্রামের বাড়ি খতিপুর বড় ধিরারাইয়ের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন: প্রবাসীর স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি

ঘটনার খবর পেয়ে গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে যুক্তরাজ্য থেকে নিহতের ছোট দুই ভাই শফিকুল ইসলাম, বিজেকুল ইসলাম, বোন শাহীনা বেগম ও মা জরিনা জব্বার দেশে এসে রফিকুল ও তার ছেলের দাফন-কাফন সম্পন্ন করেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত রফিকুলের শ্যালক দিলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি অপমৃত্যু (মামলা নং-২১) দায়ের করেন।

আইনিউজ/এসকেএস

দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি