Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১২ ১৪৩২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ১০ মার্চ ২০২১
আপডেট: ১৯:১৭, ১০ মার্চ ২০২১

মা-বাবার পিছু পিছু গেটের বাইরে যাওয়ায় ৮ বছরের শিশুকে হুজুরের বেধড়ক পিটুনি!

আট বছরের শিশু শিক্ষার্থী ইয়াসিনকে গেট থেকে ধরে নিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন শিক্ষক। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

আট বছরের শিশু শিক্ষার্থী ইয়াসিনকে গেট থেকে ধরে নিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন শিক্ষক। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

হাটহাজারীর পৌর এলাকার মারকাজুল কোরান ইসলামি একাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ৮ বছরের ইয়াসিন। তাকে দেখতে সোমবার বিকেলে সেখানে যান তার বাবা-মা। কিন্তু ফেরার সময় মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে শিশু ইয়াসিন। এক পর্যায়ে মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে সে। আর এই বাইরে চলে যাওয়াই তার জন্য কাল নিয়ে আসে।

ইয়াসিনের এমন বায়নায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাদরাসার হুজুর ইয়াহিয়া। ফলে শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন সেই হুজুর। কারণ একটাই কেনো সে মূল ফটকের বাইরে গিয়েছে। বেতের এমন পিটুনি খেয়ে বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে ছোট্ট ইয়াসিন। আর এমন সময় শিক্ষার্থীদের কেউ একজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে। যা দেখে অনেকেই শিহরিত হন।

এমন অবস্থায় সেই অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রশাসন আটক করেও। কিন্তু রাত ২টা পর্যন্ত উপজেলা অফিসে অবস্থান করে সেই হুজুরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান নির্যাতিত শিশু ইয়াসিনের মা-বাবা। তাদের বক্তব্য শিক্ষককে তারা ক্ষমা করে দিয়েছেন। তারা এ বিষয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন না।

শিশু ইয়াসিনকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এর প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেন নেটিজেনরা।  সবাই চাইছে এর সঠিক বিচার হোক। কিন্তু অপরদিকে ইয়াসিনের মা-বাবা কোনো বিচার চান না এই নির্যাতনের।

তারা কিছুতেই মামলা করবেন না এবং আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২টা পর্যন্ত অভিভাবকেরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আইনি ব্যবস্থা না নিই। -রুহুল আমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, হাটহাজারী

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, ‘স্থানীয় একজন শিশুটিকে প্রহারের ঘটনা আমাকে জানান। ইতোমধ্যে বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। আমি তাৎক্ষণিক হাটহাজারী থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে যাই। বাচ্চাটির সঙ্গে কথা বলি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এমন সময় ছাত্রের বাবা-মা এসে কান্নাকাটি করেন এবং শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান।’

তিনি বলেন, ‘তারা কিছুতেই মামলা করবেন না এবং আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২টা পর্যন্ত অভিভাবকেরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আইনি ব্যবস্থা না নিই।’

রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি রাত ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি এই ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য। মামলার খরচসহ আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেয়ার পরেও লেখাপড়া না জানা মা-বাবা কোনোভাবেই অভিযোগ দায়েরে রাজি হয়নি। হাফেজি মাদরাসাগুলোতে এভাবে নির্মম নির্যাতন নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু কেউ অভিযোগ দায়ের করেন না। এটিও সমাজের বৈকল্যতা।’

আইনিউজ/এসডিপি

ভিডিওটির লিংক- https://web.facebook.com/1396672823/posts/10224765524830924/?d=n&_rdc=1&_rdr

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ