Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১২ ১৪৩২

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৪০, ৫ এপ্রিল ২০২১
আপডেট: ২১:৪০, ৫ এপ্রিল ২০২১

স্বজনদের আহাজারিতে ভারি শীতলক্ষ্যা পাড়, মৃত্যু বেড়ে ২৯

ডুবে যাওয়া লঞ্চ

ডুবে যাওয়া লঞ্চ

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী ‘সাবিত আল হাসান’ নামের লঞ্চডুবির যাওয়ার ঘটনায় আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। লাশ উদ্ধারের পর শীতলক্ষ্যা নদীর দু’পাড়ে থাকা স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

সোমবার দুপুরে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। এসময় লঞ্চের ভিতর থেকে ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে ছিলেন নারী, পুরুষ ও শিশু।

সোয়া ১টার দিকে উদ্ধার কাজ বন্ধ ঘোষণা দেয়ার পর আরও ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আরো তিন থেকে চারজন নিখোঁজ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোববার সন্ধ্যা ৬ টায় বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ ঘাট থেকে ছেড়ে আসে এই লঞ্চটি। মদনগঞ্জ কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছানোর পর পেছন থেকে একটি কার্গো জাহাজ লঞ্চটিকে  ধাক্কা দিয়ে ভাসিয়ে ৫০ ফুট দূরে ব্রিজের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে লঞ্চটি কাত হয়ে ডুবে যায়।

ঘটনার পর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে রাতভর অভিযানে আরও ৪ জনের মরদেহ পাওয়া যায়।

লঞ্চটি উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটিএর এর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। রোববার লঞ্চডুবির পর কালবৈশাখীর কারণে কিছু সময় উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্ন ঘটলেও পরে আবার তা শুরু হয়।

নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে তারা হলেন মুন্সীগঞ্জ সদরের নুড়াইতলী এলাকার রুনা আক্তার (২৪), মুন্সীগঞ্জের মোলাকান্দি চৌদ্দমোড়া এলাকার সুমন আলী ব্যাপারীর ছেলে সোলেমান ব্যাপারী (৬০), তার স্ত্রী বেবী বেগম (৬০), মুন্সীগঞ্জ মালপাড়া হারাধন সাহার স্ত্রী সুনিতা সাহা (৪০), মুন্সীগঞ্জ সদরের উত্তর চর মসুরা অলি উল্লাহর স্ত্রী সখিনা (৪৫), একই এলাকার আরিফের স্ত্রী বিথি (১৮), তাদের সন্তান আরিফা (১), মুন্সীগঞ্জ সদরের প্রীতিময়ের স্ত্রী প্রতিমা শর্মা (৫৩), মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি চর কিশোরগঞ্জের শামসুদ্দিন (৯০), তার স্ত্রী রেহেনা বেগম (৬৫), বরিশালের উজিরপুর উটরা এলাকার হাফিজুর রহমানের স্ত্রী তাহমিনা (২০), মুন্সিগঞ্জের দক্ষিণ কেওয়ার দেবিন্দ্র দাসের ছেলে নারায়ণ দাস (৬৫), তার স্ত্রী পারবতি রানী দাস (৪৫), বন্দরের কামরুজ্জামান, স্বর্ণা দম্পতির শিশু সন্তান আব্দুল জমীর (০২), মুন্সীগঞ্জ সদরের নুরপুর রিকাবি এলাকার শাহ আলম মৃধা (৫৫), মুন্সীগঞ্জ সদরের রতন পাতরের স্ত্রী মহারানী (৩৭), যাত্রাবাড়ি শনিআখড়ার আনোয়ার হোসেন (৫৫), তার স্ত্রী মাকসুদা বেগম (৩০), মুন্সিগঞ্জ সদরের শেয়াগাও পূর্বপাড়া মিঠুন মিয়ার স্ত্রী ছাউদা আক্তার লতা (১৮), শরীয়তপুর নরিয়া এলাকার নুরবকশীর ছেলে আব্দুল খালেক (৭০), ঝালকাঠির কাঠালিয়া এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে জিবু (১৩), বরিশালের স্বরূপকাঠি এলাকার মো. সেকান্দারের স্ত্রী খাদিজা বেগম (৫০) এবং বন্দরের দক্ষিণ সাবদী এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে মো. নয়ন (২৯)।

এদিকে লঞ্চডুবির এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন আমাকেসহ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশের প্রতিনিধিও রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন জানান, রাতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও সকাল থেকে নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ