Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১১ ১৪৩২

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ১৩ এপ্রিল ২০২১
আপডেট: ০০:৪৫, ১৪ এপ্রিল ২০২১

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে ৩৫ মৃত্যু: তদন্ত প্রতিবেদন যা বলছে

লাশ উদ্ধার করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

লাশ উদ্ধার করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী ‘সাবিত আল হাসান’ নামের লঞ্চডুবিতে ৩৫ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় করা গঠিত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি ২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

প্রতিবেদনে এমভি এসকেএল-৩ নামক পণ্যবাহী কার্গোর চালকের বেপরোয়া গতি এবং সেতুর ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণকাজকে দায়ী করা হয়েছে। একই সাথে কয়লাঘাট এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কার্যক্রমে ত্রুটির কথাও বলা হয়েছে। 

গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬ টায় বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ ঘাট থেকে ছেড়ে আসে ‘সাবিত আল হাসান’ নামের লঞ্চটি। মদনগঞ্জ কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছানোর পর পেছন থেকে কার্গো এসকেএল-৩ নামের জাহাজ লঞ্চটিকে ধাক্কা দিয়ে ভাসিয়ে ৫০ ফুট দূরে ব্রিজের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে লঞ্চটি কাত হয়ে ডুবে যায়। এই ঘটনার পর অন্তত ৩৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

লঞ্চডুবির ঘটনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ’র পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন যুগ্ম সচিব আব্দুল ছাত্তার শেখ। কমিটি নৌ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দীন চৌধুরীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তাদের প্রতিবেদনে বলছে, পণ্যবাহী জাহাজটির বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। একই সঙ্গে শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর পিলার নদীর মধ্যে স্থাপন করায় এবং নৌপথে প্রতিবন্ধকতামূলক নির্মাণসামগ্রী রাখায় নৌপথ সরু হয়ে যাওয়া দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তবে কার্গো জাহাজে প্রথম শ্রেণির সনদধারী চালক ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিবেদনে, সেতুর পিলার সরিয়ে নদীর প্রশস্ততা বাড়ানো, ছোট আকারের সানকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ ক্রমান্বয়ে সরিয়ে দেওয়া, অলস জাহাজ যত্রতত্র পার্কিং বন্ধসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহাজটি প্রথম শ্রেণির মাস্টার ওয়াহিদুজ্জামান চালাচ্ছিলেন। অপর দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চে তৃতীয় শ্রেণির চালক জাকির হোসেন ছিলেন। কার্গো জাহাজের চালকের বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এদিকে জাহাজটির রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) থাকলেও সার্ভে রিপোর্ট ছিল না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সার্ভে রিপোর্ট ছাড়া চলাচল করে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ-১৯৭৬ এর সংশ্লিষ্ট ধারা লঙ্ঘন করেছে জাহাজটি।

এদিকে এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। ৬ এপ্রিল রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (নৌ নিট্রা) বাবু লাল বৈদ্য।

মামলায় হত্যার উদ্দেশ্যে বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী জাহাজ চালিয়ে লঞ্চটি ডুবিয়ে ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ