Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ৯ ১৪৩২

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ২ আগস্ট ২০২১
আপডেট: ০০:২০, ৩ আগস্ট ২০২১

ত্রাণ নয় বেরীবাধ চাই: বাঁধের দাবীতে মানববন্ধন

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি সেই সঙ্গে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় জাজিরা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

ভাঙন এর কবল থেকে বাঁচতে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৮০টি পরিবার তাদের বসত বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন।এদিকে ভাঙনে প্রায় ৩০০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে গিয়েছে। ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলে আপদকালীন ভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রোববার (১ আগস্ট) ভাঙন রোধের দাবীতে ও নদীর তীর রক্ষা বাঁধের দাবীতে মানববন্ধন করেছেন বড়কান্দি ইউনিয়নের রঞ্জন ছৈয়ালকান্দি গ্রামবাসী। নদীর তীরে দাড়িয়ে এক ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধ কর্মসূচীতে অংশ নেন ভাঙন কবলিত গ্রামবাসীরা।

জানতে চাইলে পাউবোর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন,পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জাজিরার কয়েকটি এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ ছারা পূর্ব নাওডোবার জিরো পয়েন্ট থেকে বিলাশপুর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মানের জন্য ২৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে।

ভাঙন রোধে জাজিরার পাথালিয়া কান্দি,পৈলান মোল্যাকান্দি,বড়কান্দি ও বাবুরচর এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে পাউবো। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিলেও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে পাঁচশ মিটার এলাকায়। ওই স্থানগুলোতে ৭২ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যাবস্থা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম। ফলে এলাকাগুলোর মানুষের দিন কাটছে ভাঙনের আতংকে। 

শরীয়তপুর-১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি।পদ্মার ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করার কাজ চলছে। আপাতত ভাঙন রোধের জন্য বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা থেকে নড়িয়া পর্যন্ত তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

৭০ বছর বয়সি শুকুরজান বিবি বাঁধ নির্মাণের দাবীতে মানববন্ধ কর্মসূচীতে অংশ নিতে রোববার নদীর তীরে আসেন। তিনি জানালেন, স্বামীর মৃত্যুর পর একাই বাড়িতে থাকতেন,  শশুর আর স্বামীর কবরসহ বাড়িটি পদ্মায় গ্রাস করায় শেষ জীবনে আশ্রয়হীন হয়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিঃস্ব অবস্থায় মৃত্যুর পরে নিজের ভিটায় মাটি না পাওয়ার আক্ষেপে তার বাকরুদ্ধ হয়ে আসে।

রঞ্চন ছৈয়ালকান্দি গ্রামের চাঁন মিয়া সিকদারের (৮০) বসত ঘর ও বাড়ির অংশ  বিলিন হয় গত ২৪ জুলাই। এদিকে চোখের সামনে বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখে অসুস্থ হয়ে পরেন তার স্ত্রী সবুরজান বিবি। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চাঁন মিয়া সিকদার বলেন, আমাগো মত আর কোন মাইনষের যেন ঘর ছাড়া না হইতে অয় এল্লেইজ্ঞা এইহানে (মানব বন্ধনে)  আইসি, ভালা কইরা বাধ দিলে আর নদীর পাড় ভাংবোনা।

আইনিউজ/হারুন-অর-রশিদ/এসডি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ