Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩২

অঞ্জন রায়, নবীগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩১, ৩ মার্চ ২০২২
আপডেট: ২১:৩২, ৩ মার্চ ২০২২

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ, বিপাকে হোটেল মালিকরা

করোনার ধাক্কা সামাল দিতে গিয়ে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন চরম সংকটে পড়েছে। এ অবস্থায় চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি আয়। তাই পরিবার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব লোকজনদের। 

আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের কাটছাঁট করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের মতে, ব্যয় এতই বেড়েছে যে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে মানুষের জীবনে কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জরুরি নিত্যপণ্য চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা-ময়দা, পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম বেড়েই চলেছে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মসলা জাতীয় পণ্যের দামও। 

গত কয়েকদিন নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছ, গরু বা খাসির মাংসের বদলে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোতে। দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম ও ব্রয়লার মুরগিও কিনতে পারছেন না অনেকে। ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৬০ টাকা। ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। ফলে নিত্যদিনের বাজার খরচ মেটাতে দিশাহারা নিম্ন-মধ্যবিত্তরা। 

আরও পড়ুন- ১৫ দিনের ব্যবধানে ধলাই নদীতে ফের বিষ প্রয়োগ

নবীগঞ্জ বাজারে বাজার করতে আসা রাশেদ মিয়া জানান, ‘বাজারে আসলেই মাথা গরম হয়ে যায়। সবজি বলেন আর চাল ডাল তেল বলেন কোনোটার দামই কম না। নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে আমার মত নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষদের বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

 আরো বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, আগের মতো আয় নেই, অথচ খরচ বাড়তেই থাকছে। পরিবারের সবার মুখে ডাল-ভাত দিতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের কর্তারা। আয়ের সঙ্গে ব্যয় মেলাতে পারছেন ন্স তারা। 

এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। এই সময়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১০ টাকা। ১ কেজি সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৭০-১৮০ টাকা, যা ১৫ দিন আগেও ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। খোলা ও প্যাকেটজাত উভয় ধরনের আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। প্যাকেটজাত আটার দাম এক মাসে বেড়েছে কেজিতে প্রায় ১০ টাকা আর খোলা ময়দা ১৫ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি চিনির দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ মাস আগে এ চিনির দাম ছিল ৬৫-৭০ টাকা। সপ্তাহ-দশদিনের ব্যবধানে ডালের দামও কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম বাড়াতে চরম বিপাকে পড়েছেন হোটেল মালিকরা, গ্যাস সিলিন্ডার, তেলসহ সবকিছুর দাম বাড়লেও খাবারের মূল্য বৃদ্ধ করা সম্ভব না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। 

আরও পড়ুন- রাজনগরে প্রবাসীর বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই

নবীগঞ্জ মধ্য বাজারস্থ অনুরাগ হোটেলের মালিক জ্যোতিষ দাশের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান- তেল, আটা-ময়দা, চিনি, পেয়াজ, ডালসহ সবকিছুর মূল্য বাড়লেও স্বাভাবিক মূল্যেই খাবার বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। সকল খরচ বাদ দিয়ে আমাদের ঘামের মূল্যটাও পাচ্ছি না।

 নবীগঞ্জ ওসমানী রোডের খাবার বিক্রেতা টিটু মিয়া জানান, গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আকাশ ছোয়া, আগে যে সিলিন্ডার ১১০০ টাকায় কিনেছি বর্তমানে এটি ১৪০০ টাকা দাবী করছে, নিত্য পণ্যের দাম বাড়লেও স্বাভাবিক মূল্যেই খাবার বিক্রি করছি। পূর্বের তুলনায় প্রতিদিন খরচ অনেক বেড়েছে। আমি দিন আনি দিন খাই। দিনশেষে নিজের পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছি। 

এ নিয়ে বেশ কেয়কজন ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ হলে তারা জানান- ‘আমাদেরকে বাজার থেকে পণ্য বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। সেই জন্য বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’ এদিকে ভোজ্য তেলের মূল্য নিয়ে তামাশায় মেতেছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা, তেলের বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের তুলনায় বেশি মূল্যে তেল বিক্রি করছেন তারা। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান সহ আমরা ব্যবসায়ী সমিতির সাথে মিটিংয়ের আয়োজন করেছি। যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত দামে খাদ্যপণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

আইনিউজ/অঞ্জন রায়/এসডিপি

আইনিউজ ভিডিও 

কৃষক ও ফিঙে পাখির বন্ধুত্ব (ভিডিও)

পোষ মানাতে হাতির বাচ্চাকে নির্মম প্রশিক্ষণ 

হাতির আক্রমণে হাতি হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়