Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৭ ১৪৩২

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২০ মে ২০১৯
আপডেট: ০৯:৪৬, ২০ মে ২০১৯

ঈদ এলেই নতুন রুপ পায় 'মার খাওয়া বাস'

আইনিউজ ডেস্ক:  কথা বলার ধরণ এরকম  ‘মামা, মার খাইছে?’ । স্বাভাবিক ভাবেই জানতে চাইলাম কে ‘মার খাইছে’ কোথায় খাইছে? বলল, ‘বরিশালে। পেছন থেকে সামনেরটারে ধাক্কা দিছিল । তাইতো এই অবস্থা’—কথাগুলো বললেন  এক গ্যারেজ মিস্ত্রি।কিছুক্ষণ পর মার খাওয়ার বিষয়টা স্পষ্ট হলো। এই ‘মার খাইছে’ অর্থ বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। বাস, ট্রাক মেরামত গ্যারেজের কাঠামো প্রস্তুতকারক মিস্ত্রি ও রংমিস্ত্রিরা দুর্ঘটনার শিকার বাসকে ‘মার খাওয়া’ বাস বলে চিহ্নিত করেন তারা । আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় এখন চলছে এসব ‘মার খাওয়া’ বাস মেরামতের কাজ। ভাঙা, বেঁকে যাওয়া অংশে জোড়াতালি দেওয়া হচ্ছে। রেষারেষিতে আঁচড় লাগা অংশেও লাগানো হচ্ছে নতুন রং।ঈদ উপলক্ষে রোজার প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে এই রং লাগানোর কাজ। তা শেষ হলে আগামী সপ্তাহ থেকে নামানো হবে রাস্তায়। এরপর রোদে পুড়ে, চড়া দামে টিকিট কেটে এসব বাসে করেই নাড়ির টানে বাড়ী ফিরবেন  ঢাকার অধিকাংশ মানুষ। আমিনবাজার সেতু থেকে বেড়িবাঁধ ধরে কয়েক গজ সামনে এগোলেই মাওয়াহিদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামের একটি গ্যারেজ। গত শনিবার দুপুরে সেখানে চলছিল গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কয়েকটি বাসের মেরামতের কাজ। সামনে ও জানালার কাচ নেই। ইঞ্জিনের সব তার ছেঁড়া। ভেতরে আসনগুলো এলোমেলো। বাসের সামনের ফাটা-ভাঙা, তোবড়ানো অংশে টিন-ইস্পাতের টুকরো দিয়ে ঝালাই করার কাজ করছিলেন মো. শামসু নামের এক মিস্ত্রি। তিনি বলেন, বাসটি গোপালগঞ্জে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। তাতে বাসের সামনের অংশ পুরোটাই ভেঙে গিয়েছিল। তিন দিন ধরে মেরামতের কাজ চলছে। এই কাজ শেষে নতুন আসন বসিয়ে রং করা হবে। তারপরই বাসটি পুরোপুরি ‘ফিট’ হয়ে যাবে।দুর্ঘটনার শিকার বাসকে ‘মার খাওয়া’ বাস বলে প্রথম রোজা থেকেই শুরু হয়েছে মেরামতের মেরামতের এই কাজ প্রতি বাস মেরামতে মালিকেরা খরচ করেন ১-২ লাখ টাকা ঈদ উপলক্ষে সড়কে নামানো হবে বাসগুলো । এসব দুর্ঘটনাকবলিত বা ভাঙা বাস মেরামতের জন্য মালিকেরা ক্ষয়ক্ষতি অনুসারে ১ থেকে ২ লাখ টাকা খরচ করেন বলে জানান গ্যারেজের মিস্ত্রিরা। এ ধরনের গাড়ির সংখ্যা বেশি নয়। অধিকাংশ গাড়িরই লক্কড়-ঝক্কড় অবস্থা। এগুলোতে কেবল রঙের আস্তরণ দেওয়া হয়। এতে অবস্থা বুঝে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এই গ্যারেজের পাশেই গ্রামীণ ওয়ার্কশপ ও ইউনিক পরিবহনের বাস মেরামতের গ্যারেজ। ইউনিক পরিবহনের গ্যারেজে রং করার কাজে ব্যস্ত দেখা গেল কয়েকজন মিস্ত্রিকে। রমিজ আলী নামের একজন বলছিলেন, গত সাত দিনে ১০টি গাড়িতে রং করে নতুন বানানো হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টিতে সম্পূর্ণ ও বাকিগুলোতে আঁচড় লাগা অংশে রং করা হয়েছে। একতা পরিবহনের গ্যারেজে চারটি বাসের বিভিন্ন অংশে জোড়াতালি দিতে দেখা গেল মিস্ত্রিদের। জানা গেল, ভাঙা বাসের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়া বাসও মেরামতের জন্য আনা হয়। ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিস্ত্রি বলছিলেন, ঈদ উপলক্ষে এমন কিছু বাস মেরামতের জন্য নিয়ে আসা হয়, যেগুলো একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী। শুধু জরুরি প্রয়োজনের জন্য সেগুলো মেরামত করা হয়। রাস্তায় কীভাবে চলে, সেটা তাঁদের কাছেই আশ্চর্য হওয়ার বিষয়। নতুন করে সড়কে নামানো বাসের ফিটনেস পরীক্ষার বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে মুঠোফোনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) মাহবুব-ই-রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এসএ/ইএন
Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়