Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ১৩ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৯ ১৪৩২

প্রকাশিত: ১০:০২, ১৭ জুন ২০১৯
আপডেট: ১৫:৫৮, ৩ জুলাই ২০১৯

কী আছে আরিজোনার সেই বাড়িতে!

    ছবিতে যাকে দেখছেন ইনি হলেন জন সিমস। লোকমুখে শুনলেন তার ক্রয়কৃত বাড়িতে নাকি কিছু একটা রহস্য লুকিয়ে আছে। লুকিয়ে থাকা রহস্যের খোঁজ করতে গিয়ে কী এমন খুঁজে পেলেন যার কারনে দুনিয়া ব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে তাকে নিয়ে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে  ফিচারটি সাজিয়েছেন সজিব তুষার চলুন খোঁজ করা যাক কী আশ্চর্য লুকিয়ে রয়েছে তার রহস্যময় বাড়িকে ঘিরে! নিজের একটা বাড়ির স্বপ্ন কারই বা না থাকে! জন সিমসেরও ছিল। সেই ইচ্ছা থেকেই অ্যারিজোনার টাকসনে এক বন্ধুর থেকে একটা বাড়ি কিনেছিলেন তিনি। কেনার পরই শুনলেন এক আশ্চর্যজনক খবর, তাঁর বাড়ির বাগানে নাকি কিছু একটা আছে! সাদামাটা গড়নের এই বাড়িতে কী ই বা থাকতে পারে? স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাইলে ঠোঁট উল্টিয়ে নিরাশ করলেন জন সিমস কে। কিন্তু কী আশ্চর্য লুকিয়ে আছে তার বাড়িতে যা কেউ জানেনা! কৌতুহলি জন সিমস পড়ে গেলেন মহা সমস্যায়। তাই জন সিদ্ধান্ত নেন তিনি নিজেই এই রহস্য খুঁজে দেখার দায়িত্ব নিবেন । যেই ভাবা সেই কাজ। কৌতুহলি জন পর দিন থেকেই তাঁর নতুন বাড়ির বাগান খোঁড়া শুরু করেন। কিন্তু রহস্যের কোন হদিসই খোঁজে পাওা যাচ্ছিলো না। হতাশ হয়ে এক রকম আশা ছেড়েই দেন তিনি। মাটি খোঁড়া থেকে কিছুটা বিরতি নিলেন। রহস্য উদ্ধারে মরিয়া জন মিউনিসিপালিটিতে বাড়ির রেকর্ড খতিয়ে দেখায় মনোযোগ দিলেন। সেখানে খুঁজে পাওা বাড়ির নকশা তাঁর নিরাশার ভৈরী দূর করলো। যা তাঁর অনুসন্ধানকে নতুন মোর যোগাতে সহায়তে করে। বাড়ির নকশাতে, বাড়ির নকশা ছাড়াও অন্যকিছু ছবি দেখতে পান। যাতে আঁকা রয়েছে আরও কিছু ঘর। যার অবস্থান ঠিক জনের বাগানের ভিতরটায়। রেকর্ড অনুযায়ী ‘উইটেকার পুলস’ নামে এক সংস্থা ১৯৬১ সালে এখানে সুইমিং পুল বানানোর জন্য কাজ করার জন্য অনুমতি নিয়েছিল। কিন্ত অবাক করা বিষয় হল জনের বাড়িতে কোনও সুইমিং পুল নেই! না আছে সুইমিং পুলের কোনো চিহ্ন! পুরনো রেকর্ডগুলি দেখার পর জনের মনে এক রাশ আশার জন্ম নিল। এই উৎসাহের সাথে সন্দেহও বেড়ে গেলো জনের। এই রহস্য সমাধানে জন্য একদল বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেন। তাঁরা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সারা বাগান খোঁজা শুরু করলেও প্রথমে কিছুই মেলেনি। এরপরই একদিন আওয়াজ করে ওঠে মেটাল ডিটেক্টর। তবে এক জায়গায় নয়, দুই জায়গায়। উত্তেজনা ও আনন্দে আত্মহারা জন এবং তাঁর নিয়োগকৃত সহযোগীরা। দ্বিগুণ উৎসাহে খোঁড়া শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারেন ধাতব কিছুর উপস্থিতি। প্রায় তিন ফুট খুঁড়ে তাঁরা একটি বড় ঢাকনা দেখতে পান।   আবারও জনের হতাশা। তিনি ভেবেছিলেন, এটা হয়ত কোনও সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা। এত দিনের পরিশ্রম কি তবে বিফল হল? কিন্তু খোঁড়া না থামিয়ে আরও সাবধান হয়ে কাজ চালিয়ে যান তাঁরা। আরও বেশ কিছুটা খোঁড়ার পর অনুসন্ধানে এলো নতুন মোড়। জন বুঝতে পারেন, এটা কোনও সেপটিক ট্যাঙ্ক নয়, বরং একটা গুপ্ত রাস্তার ঢাকনা। যার নিচেই লুকিয়ে রয়েছে একটি রহস্যময় সুড়ঙ্গ। কিন্তু এর শেষ কোথায়! দমকলকর্মী জন সুড়ঙ্গের ভিতরে কী আছে তা জানার জন্য আর ব্যাকুল হয়ে পড়লেন। কিন্তু ভিতরে যদি কোন বিষাক্ত গ্যাস থাকে। তাই ঢাকনা খোলা রেখে একদিন অপেক্ষা করলেন। আর পরের দিন খোঁজ পান একটি স্পাইরাল সিড়ির। কিন্তু সিড়ির এই বেহাল দশায় কেউ দেখাতে চান নি। তাই প্রথমে নামার আগে সিঁড়ি সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। সিঁড়ি কিছুটা সারানোর পর জন ও তাঁর বন্ধুরা একটি বড়ো পাইপ সুড়ঙ্গের মধ্যে নামান, যা হাওয়া চলাচলে সাহায্য করবে। তবে স্পাইরাল সিঁড়িটি পুরোটা সারানো সম্ভব না হওয়ায় তাঁরা মইয়ের সাহায্যে নীচে নামেন। সুড়ঙ্গে নেমে তো সবাই অবাক। ভালোভাবে দেখুন, এটি কোনও সুড়ঙ্গ পথ নয়। বরং এক বিশাল ঘর। তবে কি সবাই এই রহস্যের কথাই বলছিলেন! কী ছিল এই ঘরে? কেনই বা তৈরি করা হয়েছিল এই ঘর! এত বড়ো একটা ঘর কিন্ত কোনও আসবাবপত্র নেই। আস্তে আস্তে তাঁরা বুঝতে পারেন। এই ঘরটি আর কিছুনা, একটি বাঙ্কার। ঠান্ডা যুদ্ধ চলাকালীন সময় লুকিয়ে থাকার জন্য এই বাঙ্কারটি তৈরি করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জন জানতে পারলেন বাঙ্কারটি নির্মান করেছিলো ১৯৬১ সালে হুইটকার পুল নামের একটি সংস্থা । জানা যায় শুধু উইটেকার পুল নয়, লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যরোলিনা পুলস নামক এক সংস্থা ১৯৬১ সালের মধ্যে প্রায় ৫০০টি নিউক্লিয়ার শেল্টার বানায়। জন মনঃস্থির করেন, এই বাঙ্কারকে তিনি মিউজিয়ামে পরিবর্তিত করবেন। সেই মতো তিনি একটি ওয়েবসাইট খোলেন যেখানে সাধারণ মানুষের অনুদানে তিনি বাকি সংস্কারের কাজে নামেন।   দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঠান্ডা যুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম যেমন হ্যাম রেডিও, গেগার কাউন্টার, জলের ব্যারেল দিয়ে তিনি সাজাচ্ছেন এই বাঙ্কার।  
Green Tea
সর্বশেষ