Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ অক্টোবর ২০২৫,   আশ্বিন ১৭ ১৪৩২

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০২, ৩০ মে ২০২০

লিবিয়া ট্রাজেডি

সুজনের লাশ ফিরিয়ে দেয়ার আকুতি পরিবারের

ছবি: আইনিউজ

ছবি: আইনিউজ

লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের গুলিতে নিহত সুজন মৃধার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতের পরিবারের স্বজনদের কান্নার আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।  সুজনের লাশ ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

গত জানুয়ারি মাসে পরিবারের অভাব মেটাতে একাদশ শ্রেণির ছাত্র লিবিয়া পাড়ি জমান।

গোপালগঞ্জের  মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউপির বামনডাঙ্গা গ্রামের কৃষক কাবুল মৃধার ছেলে সুজন মৃধা। সুজনের বাবা একই ইউপির যাত্রাবাড়ী গ্রামের রব মোড়লের মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়া পাঠান। আর জন্য দালালকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেন। 

কৃষি জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেন সুজনের বাবা। পরে তা তুলে দেন দালালের হাতে। ৩৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাকে কোনো কাজ দেয়নি দালাল চক্র। উল্টো মেরে ফেলার ১৭ দিন আগে সুজনকে ওই দেশে মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়। 

গত ২৬ মে মানব পাচারকারীরা সুজনের কাছে আরো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ভয়েস কল পাঠাতে বলে দেশে। ওই ভয়েস কলে সুজনকে মারপিট করার ভয়েস পাঠান। তখন সুজনের বাবা তাদের কাছে ১ জুন পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু তার আগেই তারা সুজনকে গুলি করে হত্যা করে। 

ওই দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি আমীর দালালের মোবাইল ফোন থেকে এই ভয়েস কল পাঠানো হয় এবং সোমালিয়ায় আহমেদ মোহাম্মদ আদম সালামের ব্যাংক হিসেবে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে বলা হয়।

নিহতের মা চায়না বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেও। আমার ছেলেকে দালালরা নিয়ে গিয়ে ১৭ দিন কোনো খাবার দেয়নি। মারপিট করেছে। পরে মুক্তিপণ দাবি করে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি আমার সন্তানের লাশ চাই। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত দালালদের ফাসিঁ চাই। যাতে তারা আর কোনো মায়ের কোল খালি করতে না পারে।

একই দাবি জানিয়ে ওই গ্রামের জয়নাল সরদার, লিটন মৃধা, আকিজুল ইসলাম বাবুল বলেন, এই দালাল চক্রের হাতে গোহালা ইউপির বিভিন্ন গ্রামের আরো বেশ কিছু যুবক লিবিয়ায় বন্দী আছে। আমরা তাদেরকে উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দালালদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি। 

অপরদিকে, একই উপজেলার রাঘদী ইউপির সুন্দরদী গ্রামের মো. কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লিবিয়ার ত্রিপোলি হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। কাঠুরিয়া বাবার পরিবারে একটু সচ্ছলতার জন্য ছেলেকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে একই গ্রামের দালাল লিয়াকত মোল্লার মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়া পাঠান। আহত ওমর শেখের বাবা মো. কালাম শেখ ও মা শাহিদা বেগম তার আহত ছেলেকে ফেরত চেয়েছেন। একইসঙ্গে তারা মানব পাচারকারী দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

ডিসি শাহিদা সুলতানা বলেন, আমরা বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জেনেছি। বিষয়টি খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ইউএনওকে পাঠানো হয়েছে। আমরা দালাল চক্র ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছি। 

আইনিউজ/এসবি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়