Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫,   আশ্বিন ১২ ১৪৩২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:০৩, ১০ মার্চ ২০২১

৮ বছরের ইয়াসিনকে পেটানো সেই মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ভিডিও থেকে সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ৮ বছর বয়সী ইয়াসিনকে নির্মমভাবে পেটানো শিক্ষক ইয়াহিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি হাটহাজারী সদরের মারকাযুল ইসলামিক একাডেমি নামের হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষক।

বুধবার (১০ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে রাঙ্গুনিয়ার সাফরভাটা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেছেন।

জানা গেছে, ইয়াসিনের বাবা-মা প্রথমে মামলা করতে রাজি হন নি। পরে বুঝিয়ে রাজি করানো হয়। মামলার পর মামলায় মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

ওসি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করবে পুলিশ। 

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শিশু ইয়াসিনের জন্মদিন ছিল। তাই তার বাব-মা বিকেলে মাদ্রাসায় আসেন। কিন্তু ফেরার সময় মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে শিশু ইয়াসিন। এক পর্যায়ে মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে সে।

ইয়াসিনের এমন বায়নায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাদরাসার হুজুর ইয়াহিয়া। ফলে শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন সেই হুজুর। কারণ একটাই কেনো সে মূল ফটকের বাইরে গিয়েছে। বেতের এমন পিটুনি খেয়ে বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে ছোট্ট ইয়াসিন। আর এমন সময় শিক্ষার্থীদের কেউ একজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে।

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন ওই মাদ্রাসায় যান। অভিযুক্ত শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দেন তিনি। একই সাথে তাঁকে হাটহাজারীর কোনো মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বুধবার জানিয়েছিলেন, ‘স্থানীয় একজন শিশুটিকে প্রহারের ঘটনা আমাকে জানান। ইতোমধ্যে বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। আমি তাৎক্ষণিক হাটহাজারী থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে যাই। বাচ্চাটির সঙ্গে কথা বলি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এমন সময় ছাত্রের বাবা-মা এসে কান্নাকাটি করেন এবং শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান।’

তিনি বলেন, ‘তারা কিছুতেই মামলা করবেন না এবং আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২টা পর্যন্ত অভিভাবকেরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আইনি ব্যবস্থা না নিই।’

রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি রাত ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি এই ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য। মামলার খরচসহ আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেয়ার পরেও লেখাপড়া না জানা মা-বাবা কোনোভাবেই অভিযোগ দায়ের রাজি হয়নি। হাফেজি মাদরাসাগুলোতে এভাবে নির্মম নির্যাতন নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু কেউ অভিযোগ দায়ের করেন না। এটিও সমাজের বৈকল্যতা।’

পরবর্তীতে অনেক বুঝিয়ে ইয়াসিনের বাবা-মা মামলা করতে রাজি হয়েছেন। আর অভিযুক্ত সেই শিক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন।

আইনিউজ/এসডিপি

সংশ্লিষ্ট খবর

মা-বাবার পিছু পিছু গেটের বাইরে যাওয়ায় ৮ বছরের শিশুকে হুজুরের বেধড়ক পিটুনি!

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ