প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ৮ জুলাই ২০১৯
আপডেট: ১৪:৩৪, ৮ জুলাই ২০১৯
আপডেট: ১৪:৩৪, ৮ জুলাই ২০১৯
অর্থাভাবে দুধের সন্তান বিক্রি করলেন মা
আইনিউজ ডেস্কঃ অর্থাভাবে পাঁচ মাসের ছেলে সন্তানকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন এক মা। তবে বিক্রয়মূল্যের ৪০ হাজার টাকা তার ভাগ্যে জুটেছে এবং বাকি ৩০ হাজার টাকা স্থানীয় দুই ব্যক্তি আত্মসাৎ করেছেন।
বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাদেমের সমিল সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয়রা বলেন, সমিল সংলগ্ন এলাকায় পারভীন বেগমের সাথে কয়েক বছর আগে একই এলাকার দিনমজুর মোঃ নুরুজ্জামানের বিয়ে হয়। পারভীন বেগম অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় নুরুজ্জামান তাকে ফেলে চলে যান। নিরুপায় পারভীন বেগমকে তখন ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে হয়। পাঁচ মাস আগে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকে পারভীন বেগম অভাবে বেকায়দা অবস্থায় পড়েন। সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে হাত পাতলেও কেউ তাকে সাহায্য করেননি।
এই অসহায়ত্বের কাছে হার মেন নিজের দুধের সন্তান বিক্রির জন্যই বিভিন্ন মানুষের দ্বারস্থ হন। সন্তান বিক্রির খবর শুনে এলাকার বাসিন্দা কাছেম মোল্লার ছেলে আনোয়ার মোল্লা পারভীনের কাছে যান। সেই সঙ্গে আনোয়ার মোল্লার সহযোগী উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের আহমদাবাদ বেতাল গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সালেক পারভীন বেগমকে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রলোভন দেখান। অর্থের প্রলোভনে পড়ে পারভীন তার দুধের সন্তানটিকে আহমাদাবাদ বেতাল ক্লাব সংলগ্ন ফরাজি বাড়ির প্রবাসী গাফ্ফার ফরাজীর নিঃসন্তান স্ত্রী নাছরিন আক্তারের কাছে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
কিন্তু, ৭০ হাজার টাকা সন্তান বিক্রি করলেও পারভীন বেগমের হাতে ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন আনোয়ার মোল্লা ও তার সহযোগী সালেক। বাকি ৩০ হাজার টাকা আনোয়ার মোল্লা ও তার সহযোগী সালেক ভাগ করে নেন। একই সঙ্গে সন্তান বিক্রির বিষয়টি পাকাপোক্ত করতে নাছরিন আক্তারের পক্ষে পারভীন বেগমকে আদালতে নিয়ে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন তারা।
[caption id="attachment_7635" align="alignnone" width="750"] আনোয়ার এবং সালেক[/caption]
এ প্রসঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রী নাছরিন আক্তার বলেন, পারভীন ভিক্ষাবৃত্তি করে সন্তানের ভরণ-পোষণের খরচ জোগাড় করতে পারছিলেন না। এ কারণে শিশুটির ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছি। পাশাপাশি পারভীন বেগম যাতে সচ্ছলভাবে চলতে পারেন সেজন্য স্থানীয় আনোয়ার ও সালেকের মাধ্যমে তাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। সব মিলিয়ে পারভীনের সন্তানের পেছনে আমার ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ব্যাপারে মো. সালেক বলেন, নাছরিন আক্তারের সন্তান নেই। পাশাপাশি পারভীন বেগম তার সন্তানের ভরণ-পোষণের খরচ চালাতে পারছিলেন না। এ কারণে পারভীন বেগমের সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন নাছরিন আক্তার। এখানে দোষের কিছু তো দেখছি না।
পারভীনের সন্তান বিক্রির ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে সালেক বলেন, এলাকার লোক বিভিন্ন কথা রটাচ্ছে। ঘটনার সময় আমি সামনে ছিলাম। টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই ওঠে না।
এদিকে পারভীন বেগম সন্তান বিক্রির পর ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। দুধের সন্তানকে ফিরে পেতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন তিনি।
জানতে চাইলে পারভীন বেগম বলেন, কয়েক দিন আগে আনোয়ার হোসেন ও সালেক বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার বুকের ধনকে বিক্রি করে দেয়। এরপর আমাকে ৪০ হাজার টাকা দেয় তারা। এখন আমি কার কাছে যাব, কি করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি আমার সন্তানকে চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বানারীপাড়া থানা পুলিশের ওসি মো. খলিলুর রহমান বলেন, সন্তান বিক্রির কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসডি/ইএন
আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের
সর্বশেষ
জনপ্রিয়