Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ০৭ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২২ ১৪৩২

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী

প্রকাশিত: ১৭:১১, ১৫ নভেম্বর ২০২০
আপডেট: ১৭:১২, ১৫ নভেম্বর ২০২০

শীতের হাওয়া: মৌসুমি জ্বর

আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে  মৌসুমি জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়

আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে মৌসুমি জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে প্রকৃতির হাওয়া বদল হতে শুরু করেছে। দিনে গরম লাগে; আবার রাতের দিকে বেশ শীত শীত ভাব। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই গরম ঠাণ্ডার মধ্যে প্রায় প্রতিটি পরিবারে মৌসুমি জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়।

এই জ্বর ভাইরাস দ্বারা দ্রুত একজনের মাধ্যমে আরেকজনে সংক্রমিত হয়। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এমন ভাইরাল জ্বরের প্রতিরোধ করা সম্ভব। ভাইরাস জীবাণুর সংক্রমনের ফলে এই সর্দি-জ্বর ৭দিন স্থায়ী হতে পারে। ঔষধ ও পুষ্টিকর খাবার খেলে এই সময়ের মধ্যে জ্বর ভালো হয়ে যায়, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের লক্ষণ:

• হঠাৎ জ্বর আসে এবং ৭ দিন ধরে চলতে থাকে।

• ১০২-১০৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হয়।

• শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়।

• এই জ্বরের সঙ্গে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা থাকে।

• গায়ে, হাত, পায়ে তথা শরীরের পেশীতে অসহ্য ব্যথা করে।

• বেশির ভাগ সময় শরীরে জ্বরের সঙ্গে সর্দি, কাশি থাকে।

• প্রকৃতির হাওয়া বদলে নাক বন্ধ থাকে; নাক দিয়ে পানি পড়ে।

• মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে খিদে কমে যায় ও বমি বমি ভাব থাকে।

• শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ লাল হয়ে যায়।

মৌসুমি জ্বরের চিকিৎসা ও সাবধানতা:

• জ্বর কখনোই বাড়তে দেয়া যাবে না। জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরো শরীর নরম কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে মুছে ফেলতে হবে। জ্বর - শরীর ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বর ও ব্যথা কমার ঔষধ খেতে হবে। এজন্য বাসায় প্যারাসিটামিল ট্যাবলেট রেখে দিতে পারেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন এন্টিবায়োটিক খাবেন না।

• নাক বন্ধ থাকলে নাকের ড্রপ ব্যবহার করা লাগতে পারে। দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পুষ্টিকর খাবার, সেজন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

• শীতের এই সময়ে আদা-লেবুর সংমিশ্রণে রং চা খেতে পারেন। অসুস্থ ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

• শীতকালে অনেকেরই পানির পিপাসা সেভাবে অনুভূত হয় না। আর এ কারণে পানি পানের পরিমাণও কমে যায়। যদিও রোগ প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুস্থ থাকার জন্য শীতকালে পিপাসা না লাগলেও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

• বাহিরের খাবার খাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।

এদিকে বলা হচ্ছে শীতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, যে তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস সহজে সংক্রমিত করতে পারে বা নিজের দ্রুত বিস্তার ঘটাতে পারে, শীতকাল সেটার জন্য আদর্শ। এ কারণেই বলা হচ্ছে যে, শীতকালে এই ভাইরাসের বিস্তার বেশি হতে পারে।

যদিও শীতকালে করোনাভাইরাসের বিস্তার বেশি হয়, এমন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, সাধারণ সর্দিকাশির মতো অনেক রোগ শীতকালে বেড়ে যায়।

তাই এবারের শীতে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আমাদের উচিত ব্যক্তিগত সুরক্ষা মেনে চলা। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।

লেখক : ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী, এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), নাক-কান-গলা বিভাগ, বিএসএমএমইউ (প্রেষণে), ঢাকা।

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়