আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আপডেট: ১৮:৩৮, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস আজ
আজ ৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। ১৯৫১ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় দিবসটির গুরুত্ব অনেক গুণ বেড়ে যায়। চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব, ফিজিওথেরাপিস্টদের ভূমিকা ও অবদান সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছানোর লক্ষ্যেই এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত।
আগেকার দিনে মানুষ সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার অভাবে মারা যেত, কষ্ট পেত কিংবা পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই শাখাটি আবিস্কারের ফলে মানুষ পঙ্গুত্বকে জয় করেছে। সেই সঙ্গে কাটাচ্ছে বাত ব্যথা মুক্ত সুস্থ স্বাভাবিক জীবন।
ফিজিওথেরাপি একটি ইংরেজী শব্দ। এখানে ফিজিও অর্থ শারীরিক আর থেরাপি অর্থ চিকিৎসা পদ্ধতি। অর্থাৎ ফিজিওথেরাপি অর্থ হচ্ছে বিশেষ ধরনের শারীরীক চিকিৎসা পদ্ধতি। ১৯১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের একদল স্বাস্থ্য কর্মী তাদের দেশে চিকিৎসা সেবায় প্রথমবারের মতো ফিজিওথেরাপি কার্যক্রম শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সেবা শুরু ১৯১৪ সালে। এরপর শুরু হয় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে গবেষণা।
১৯২১ সালে ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে পঙ্গুদের পুনবার্সনের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক শাখার নাম ‘ফিজিওথেরাপি’-বলে ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক মেরি এমসি মিলান। জিওরজিয়া ওয়ার্ম স্প্রিং ফাউন্ডেশন পোলিও রোগ নিয়ে কাজ শুরু করে ১৯২৪ সালে। এক পর্যায়ে ফাউন্ডেশনটির অন্যতম কর্মী সিস্টার কিননি পোলিও চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর ফিজিওথেরাপি হয়ে উঠে পোলিও রোগীর পুনবার্সন ও চিকিৎসার প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি।
এরপর থেকে ফিজিওথেরাপি হয়ে উঠে পোলিও রোগীর পুনর্বাসন ও চিকিৎসার মূল পদ্ধতি। ১৯৫০ সালে পঙ্গুত্ব ও বাত ব্যথা পারালাইসিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপির সাথে নিউরোলজি, অর্থোপেডিকস, কাইনেশিওলজি, হাইড্রোথেরাপি, ক্রায়োথেরাপি চালু হতে থাকে।
১৯৮০ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানীর বাত-ব্যথা ও প্যারালাইসিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপিতে যোগ করেন ইলেক্ট্রিকাল স্টিমুলেশন, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আল্ট্রাসাউ্ণ্ড ওয়েভ, মাইক্রো ওয়েভ, ইনফ্রারেড রেডিয়েশন, আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ, ওয়াক্স বাথসহ ফেরাডিক, গ্যালভানিক কারেন্ট ইত্যাদি। ফিজিওথেরাপিতে এই অংশটির নাম দেয়া হয় ইলেক্ট্রোথেরাপি।
১৯৯০ সালে ফ্রেডি কেলর্টেনবর্ন নামের একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ম্যানুয়েল থেরাপির বিভিন্ন ধারা ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করে তোলার মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বাত, ব্যথা প্যারালাইসিস ও স্পোর্টস ইনজুরির চিকিৎসার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ফিজিওথেরাপি অন্তর্ভূক্ত। এক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিই বর্তমানে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত একমাত্র উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবসানের পর হাজার হাজার যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ও জনসাধারণের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ফিজিওথেরাপিস্টদের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন বিভিন্ন দেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবী ফিজিওথেরাপিস্ট এনে সাময়িকভাবে চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করা হয়।
জরুরিভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ফিজিওথেরাপি সিলেবাসের সমন্বয়ে একটি আধুনিক সিলেবাস প্রণয়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এ বিষয়ে কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭৩ সনে ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির মাধ্যমে আরজে গ্রাস্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শিক্ষার ডিগ্রি চালু করা হয়।
তখন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্ট্রি হতে এমবিবিএস, বিডিএস এর ন্যায় ফিজিওথেরাপি বিষয়ে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি (বিপিটি) অগ্রযাত্রা শুরু হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ফিজিওথেরাপি শিক্ষার ব্যাপকতা উপলব্ধি করে বর্তমানে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে।
বাতের ব্যথা, হাড়, জোড়া ও মাংসপেশীর ব্যাথা, ব্যাক পেইন, প্যারালাইসিস, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিংবা মুভমেন্ট জনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই ধরণের রোগসমূহের চিকিৎসা, পুর্নবাসন এবং প্রতিরোধের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক ফিজিওথেরাপি ও উচ্চ শ্রেণির গবেষণা সুচিকিৎসা প্রাপ্তির অন্যতম শর্ত।
আইনিউজ/এসডিপি
- আইয়ুব খানের পদত্যাগের দিন আজ
- মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে পুরুষদের সেক্স পার্টনার কমানোর পরামর্শ
- ভারতের স্বাধীনতা দিবস শনিবার
- টাই পরা বাদ দিয়ে জ্বালানি সাশ্রয় করতে চান স্পেনের প্রধানমন্ত্রী
- যুদ্ধবন্দী কারাগারে বোমা হামলা, পরস্পরকে দোষছে রাশিয়া-ইউক্রেন
- সুখবর! অক্সফোর্ডের তৃতীয় ট্রায়ালও সফল, ভ্যাকসিন আসছে জুলাইতেই
- চীনা ভূখণ্ডে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবেশ
- আবারও মক্কায় কালো পাথর স্পর্শ-চুম্বনের সুযোগ পাচ্ছেন মুসল্লিরা
- টাইমস স্কোয়ারে ‘ট্রাম্প ডেথ ক্লক’
- পঙ্গপাল না মেরে বিক্রি করে আয় করছেন কৃষকরা!