Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শুক্রবার   ০২ মে ২০২৫,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩২

আই নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ৮ মে ২০২৩

২৫ বৈশাখ : মহাকবির জন্মদিন আজ 

বাংলা সাহিত্যের হেন কোন শাখা নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচারণা নেই। নাটক, গল্প, উপন্যাস, কবিতা নানাকিছু দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন। আজ সেই মহাকবির ১৬২ তম জন্মদিন। ১৮৬১ সালের এদিন কলকাতার জোড়াসাঁকোয় সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে জন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। 

কালজয়ী এ কবি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্ম নেন। সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় শৈশব থেকেই নানা গুণ প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ ঘটে তার জীবনে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোট গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। সংস্কৃতি জগতে অসামান্য কীর্তির জন্য তাকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা, বাণী বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যুগিয়েছে। এ কারণে তার রচিত “জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে” ও “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গান দুটি যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। 

বাংলা সাহিত্য ও উপন্যাসে এক ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। লেখার মাধ্যমে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের অবিচার, অসংগতি, ভালোবাসা, অনুভূতির গভীর প্রকাশ। প্রেম ভালোবাসার সঙ্গে আধ্যাত্মিক ভালোবাসাকেও একই সুতায় গেঁথে মালা তৈরি করার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিলেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, তরুণরাই একটি জাতির ভবিষ্যৎ। মনের অভিব্যক্তি আর নানা ভাবনা বিস্তৃত করে তাই কবি নতুনদের আহ্বান জানিয়েছেন তার লেখায় শতবার। লিখেছেন, ‘হে নূতন/ দেখা দিক আর বার/ জন্মের প্রথম শুভক্ষণ/ তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন/ সূর্যের মতন’।

কবির লেখা জঙ্গিবাদ, উগ্রতা, জাতীয়তাবোধ,  শ্রেণিবৈষম্য, জাতিতে জাতিতে ও ধর্মে ধর্মে হানাহানির সংকীর্ণতাকে এক পাশে রেখে মানবজাতিকে আলোর পথ দেখায়। একই সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক বিভিন্ন বিষয়গুলোকে ভাবিয়ে তুলতে বাধ্য করে নতুন করে।

কবির কিছুর বৈচিত্র্যময় উল্লেখযোগ্য লেখা হলো শেষের কবিতা, নৌকা ডুবি, ঘরে বাইরে, নষ্ট নীড়, স্ত্রীর পত্র, সুভা, গীতাঞ্জলী, ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী, রক্তকরবী,  চিরকুমার সভা, বিসর্জন, চিত্রাঙ্গদা, গীতবিতান ইত্যাদি।

তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় কিছু গান হলো আমারও পরাণও যাহা চায়, আমি চিনিগো চিনিগো তোমারে ওগো বিদেশিনি, চাঁদের হাসি বাধ ভেঙেছে, ভালোবাসি ভালোবাসি, তুমি রবে নীরবে, তোমার খোলা হাওয়া, আকাশ ভরা সূর্য তারা, আমার সকল দুঃখের প্রদ্বীপ, আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে, মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাই না, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন ইত্যাদি।

কবিকে তাঁর লেখায় প্রায়ই আত্মসমালোচনা করতে দেখা গেছে। ব্যক্তিজীবনে নিজেকে ফাঁকি দিলেও নিজের লেখায় কখনও ফাঁকি দেননি রবীন্দ্রনাথ। তাই সমাজের বেঁড়াজালে যা করে উঠতে পারেননি তারই শক্ত জবাব হিসেবে হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলমের ক্ষুরধার লেখা। 

২৫ শে বৈশাখের এই দিনে তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আবারও নতুন করে প্রতিটি পাঠকের হৃদয়ে, চিন্তার জগতে আধুনিকতার উন্মেষ ঘটাক। সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণের পথে অভিসারী হয়ে ওঠার প্রেরণা যুগিয়ে বিশ্বকবি চির জাগ্রত থাকুক প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়